Tata Nano Case: ‘এবার তো ভিক্ষার বাটি হাতে বসতে হবে’, ন্যানোর ধাক্কা নিয়ে শাসককে তোপ বিরোধীদের
Tata Nano Case: কড়া সমালোচনা করে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলছেন, "এ তো সাংঘাতিক অবস্থা। অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা পশ্চিমবঙ্গে চালু হয়ে গেল। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সমস্ত সম্পত্তি বিক্রি হয়ে যাবে। নবান্ন বিক্রি হয়ে যাবে। এরা যে রাজ্যকে কোন অন্ধকারে নিয়ে গেল, তা এবার টের পাওয়া যাবে।"
কলকাতা: সিঙ্গুর মামলায় বিরাট ধাক্কা খেল রাজ্য। আরবিট্রাল ট্রাইব্যুনালে ন্যানো কারখানার ক্ষতিপূরণ মামলার রায় গিয়েছে টাটা মোটরসের পক্ষে। ট্রাইবুনালের নির্দেশ, রাজ্য ৭৬৫.৭৮ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেবে টাটা মোটরসকে। সঙ্গে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরের থেকে ১১ শতাংশ হারে সুদও যুক্ত হবে। সব মিলিয়ে সুদ-সহ প্রায় ১৩০০ কোটি টাকা তিন মাসের মধ্যে দিতে হবে। ট্রাইবুনালের এই রায়ের পরই বিভিন্ন মহল থেকে প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করেছে।
সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ তথা বিশিষ্ট আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এই পরিস্থিতির জন্য রাজ্য সরকারকেই দুষছেন। বলছেন, “রাজ্য সরকার তো দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে। এবার তো রাস্তার ভিক্ষার পাত্র নিয়ে বসতে হবে। রাজ্য সরকারের অবিমৃষ্যকারিতার দায় এখন পশ্চিমবঙ্গবাসীকে দিতে হবে। এত কোটি কোটি টাকা কোথায় পাবে! এ তো সাংঘাতিক অবস্থা। অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা পশ্চিমবঙ্গে চালু হয়ে গেল। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সমস্ত সম্পত্তি বিক্রি হয়ে যাবে। নবান্ন বিক্রি হয়ে যাবে। এরা যে রাজ্যকে কোন অন্ধকারে নিয়ে গেল, তা এবার টের পাওয়া যাবে। ভেবেছিল, টাটাকে তাড়িয়ে মহা মস্তি করবে। এবার তার অব্যর্থ পরিণতি পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ মানুষকে ভুগতে হবে।”
ট্রাইবুনালের এই নির্দেশের পর কড়া ভাষায় রাজ্য সরকারকে নিশানা করেছেন বঙ্গ বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টচার্যও। জানাচ্ছেন, তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কাছে বিজেপির প্রতিনিধি দল গিয়েছিল। জমি অধিগ্রহণ যেভাবে করা হয়েছিল তার বিরোধিতা করেছিল বঙ্গ বিজেপি। তবে যেহেতু জমির চরিত্র বদলে গিয়েছিল, তাই জমি মালিক ও ভাগচাষিদের যাতে স্বার্থরক্ষা হয়, সেই ব্যবস্থা করে প্রকল্প চালানোর প্রস্তাব দিয়েছিল বিজেপি। শমীক ভট্টাচার্য বলছেন, “তৃণমূলের হঠকারী আন্দোলন ও সিপিএমের অদূরদর্শিতা এক চরম শিল্প সম্ভাবনার মৃত্যু ঘটিয়ে দিয়েছিল। আজ সেখানে শ্মশানের শান্তি বিরাজ করছে। দেশ ও দেশের বাইরে শিল্পপতিদের কাছে ভুল বার্তা গিয়েছে।”
কড়া সমালোচনা করছেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীও। বলছেন, “প্রতিনিয়ত কখনও হাইকোর্টে, কখনও সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকার ধাক্কা খাচ্ছে। টাটাকে ওখানে কারখানা করতে না দিয়ে, পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতিতে ধাক্কা দিয়েছে। হুগলির অর্থনীতি একটা বড় জায়গায় পৌঁছত, রাজ্যের অনেক বেকার চাকরি পেত। সেটাকে তো ধ্বংস করেছেই, তাছাড়া ক্ষতিপূরণের অঙ্ক যদি সেই সময়েই দিয়ে দিত, তাহলে আজ আর ১১ শতাংশ সুদ চড়িয়ে দিতে হত না। এর দায় নিতে হবে রাজ্য সরকারকে।”