Mohammed Selim : ‘খাতায়-কলমে তৃণমূল জিতেছে, আদপে প্রাক্তন বিজেপি জিতেছে’, বাবুল-শত্রুঘ্নদের একযোগে আক্রমণ সেলিমের
Mohammed Selim : 'সিপিআইএম-র নতুন রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের দাবি উপনির্বাচনে তৃণমূলের জয় হলেও এই জয় আদপে প্রাক্তন বিজেপি নেতাদের জয়'। ভোটের ফল বেরোতেই শনিবারের সাংবাদিক বৈঠকে এই ভাষাতেই তৃণমূল-বিজেপিকে একযোগে আক্রমণ শানালেন মহম্মদ সেলিম।
কলকাতা : পুর নির্বাচনে (Kolkata Municipal Election) বিজেপিকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছিল বামেরা। এবার সেই ট্রেন্ড বজায় রেখে বালিগঞ্জ উপনির্বাচনেও সেকেন্ড বয় হল বামেরা। রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির প্রার্থীকে প্রায় ১৮ হাজার ভোটে পিছেনে ফেলে দিয়েছেন সিপিআইএম প্রার্থী সায়রা শাহ হালিম(CPIM Candidate Saira Shah Halim)। আর তাতেই যেন লাগাতার হারের গ্লানি খানিকটা হলেও লঘু হল আলিমুদ্দিনের। বালিগঞ্জ কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয় পেয়েছেন ৫০৭২২ ভোট। সিপিআইএম প্রার্থী সায়রা শাহ হালিম পেয়েছেন ৩০৮১৮ ভোট, তৃতীয় স্থানে থাকা বিজেপি প্রার্থী (BJP Candidate) কেয়া ঘোষ পেয়েছেন ১২৯৬৭ ভোট। সেখানে কংগ্রেস প্রার্থী পেয়েছেন মাত্র ৫১৯৫ ভোট।
অন্যদিকে শত্রুঘ্ন সিনাহার (Shatrughan Sinha) হাত ধরে আসানসোলেও বড় জয় পেয়েছে তৃণমূল-কংগ্রেস। আসানসোলে বিজেপির মোট প্রাপ্ত ভোট ৩৫২০৫৩, তৃণমূল পেয়েছে ৬৫২৫৮৬। সিপিআইএমের মোট প্রাপ্ত ভোট ৮৯৮৬৪। ভোটে তৃণমূলের জয় হলেও এই জয় আদপে প্রাক্তন বিজেপি নেতাদের জয় বলে কটাক্ষ করলেন সিপিআইএম-র নতুন রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
ভোটের ফল প্রকাশের পর শনিবার বিকালে সাংবাদিক বৈঠকে মহম্মদ সেলিম (CPIM General Secretary Mohammad Selim) বলেন, ‘খাতায় কলমে তৃণমূল জিতেছে, আমি বলব প্রাক্তন বিজেপি জিতেছে। বিধানসভা ভোটের সময় এরকম একটা উগ্র বাতাবরণ তৈরি করা হয়েছিল যেন বিজেপি-বনাম তৃণমূল লড়াই হচ্ছে। তখন আমরা বলেছিলাম এমন দলকে বিরোধী বলে দাঁড় করানো হচ্ছে যাদের কোনও অস্তিত্বই নেই। গোটাটাই ফেক অপজিশন। একদিকে বিজ্ঞাপন দিয়ে, টাকা দিয়ে খেলা চলেছে। বিজয়বর্গীয়র মতো নেতারা মাঠে নেমে পড়েছিলেন পুরোদমে। অন্যদিকে বহিরাগত বহিরাগত রব উঠেছে। বাংলা গেল, বর্গী আক্রমণ হচ্ছে। অথচ বিজেপিতে যাঁরা গিয়েছিলেন তাঁরা এখন তৃণমূলের হয়ে ভোটে জিতছেন। তাঁরাই তখন গান বেঁধেছিলেন তৃণমূলকে বিঁধে। বিজেপির পক্ষে আওয়াজ তুলেছিলেন। এদের মধ্যে অনেকেই আবার তৃণমূলের প্রতিষ্ঠাতাও ছিলেন। অনেকেই ছিলেন যাঁরা তৃণমূলের সংগঠক, নেতা, বিধায়ক, মন্ত্রী। যাঁরা পরবর্তীতে দল বদলে বিজেপিতে যোগদান করেন। সেই প্রতিচ্ছবিই বালিগঞ্জের নির্বাচনে নতুন করে দেখতে পাওয়া গিয়েছে।’
এখানেই না থেমে এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূল-বিজেপির বিরুদ্ধে একযোগে কড়া আক্রমণ শানাতে থাকেন সেলিম। তিনি বলেন, ‘এই ফলাফলে বাংলার মানুষ এখন স্পষ্ট ভাবেই বুঝে গিয়েছেন একটা ফেক অপজিশন তৈরি করা হয়েছিল রাজ্যের বুকে। গ্যাস বেলুনের মতো ফোলানো হয়েছিল। এখন তা চুপসে গিয়েছে। বাংলার মানুষ তাদের রায়ে তা স্পষ্ট ভাবেই বুঝিয়ে দিয়েছেন তারা এই চালাকি ধরতে পেরেছেন। আমাদের দুর্ভাগ্য যে কিছু দালাল, সাম্প্রদায়িক উষ্কানি দেওয়ার মতো কিছু লোকজন থাকে যাঁদের ভোটের সময় ব্যবহার করা হয়। কিছু এই ধরণের ছোট ছোট পত্রিকাও থাকে যেগুলি ধর্মের নামে চালানো হয়। তারা তাদের এই দালালির ভূমিকা পালন করেছে।’
আরও পড়ুন – বালিগঞ্জে বড় চমক সায়রা শাহ হালিমের, বুদ্ধবাবুর ওয়ার্ডে সিপিএমের জয়