Samik Bhattacharya: জ্যোতি-স্মরণ শমীকের, নেপথ্যে কোন অঙ্ক?
Samik Bhattacharya: তাঁরা যে অবিজেপি ভোটারদেরও সমর্থন চাইছেন, এর আগেও বুঝিয়ে দিয়েছেন বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতি। গতকাল শমীক বলেছিলেন, "যাঁরা নো ভোট টু বিজেপি স্লোগান দিয়েছিলেন, তাঁরা মুখোশের আড়ালের নয়, মুখোমুখি লড়াই করুন। মুখোমুখি দাঁড়ান। বিজেপির বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পথে নেমে হাঁটুন। তাঁদের যাঁরা অনুগামী রয়েছেন, তাঁদের বলছি, ভোট কেটে চতুর্থবারের জন্য তৃণমূলকে ক্ষমতায় আনবেন না।"

কলকাতা: বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। সেই নির্বাচনে তৃণমূলকে হারাতে অবিজেপি সমর্থকদেরও কাছে টানতে চাইছে গেরুয়া শিবির। এবার শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিবসে জ্যোতি বসুর স্মৃতি উসকে বাম কর্মী-সমর্থকদের বার্তা দিতে দেখা গেল রাজ্য বিজেপির সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যকে। পশ্চিমবঙ্গকে ভারতের অঙ্গরাজ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের প্রস্তাবে জ্যোতি বসুর সমর্থনের কথা তুলে ধরলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। শ্যামাপ্রসাদের জন্মদিনে জ্যোতি বসুকে শ্রদ্ধা জানানোর বার্তা দিলেন।
রবিবার মুরলীধর সেন লেনে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিবসের পালনের অনুষ্ঠানে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, “সিপিএমের রাজনৈতিক দীনতা এমন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে যে পশ্চিমবঙ্গ দিবস নিয়ে রাজ্য সরকারের প্রস্তাবের বিরোধিতা করার সৎ সাহসও তারা দেখাচ্ছে না। যদি জ্যোতি বসুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হয়, জ্যোতি বসুর এখনও যাঁরা অনুগামী আছেন, যাঁরা জ্যোতি বসুকে লিডার অব লিডার্স বলে মনে করেন, জ্যোতি বসুর যে দূরদৃষ্টি, ২০ জুনের সেই ভোটদানের কথাকে স্মরণ করুন। তাঁকেও শ্রদ্ধা জানান। আমরা যে পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে দাঁড়িয়ে রয়েছি, সেই প্রস্তাবের সমর্থক ছিলেন জ্যোতি বসু। অন্তত এই বিষয়ে কারও কোনও দ্বিমত থাকার কারণ নেই।”
প্রসঙ্গত, ১৯৪৭ সালের ২০ জুন বঙ্গীয় আইন পরিষদে (অবিভক্ত বাংলার প্রাদেশিক আইনসভা) অখণ্ড বাংলা ভাগের বিষয়টি উত্থাপিত হয়। বাংলাভাগের পক্ষে বড় অংশের ভোট পড়ে। শ্যামাপ্রসাদের উদ্যোগে এই প্রস্তাবে বাংলা ভাগের পক্ষে ভোট দেন জ্যোতি বসুও। বিভক্ত হয় বাংলা। এই ভোটাভুটির ফলেই পশ্চিমবঙ্গ ভারতের অংশ হয়, আর পূর্ববঙ্গ তৎকালীন পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত হয়।
তাঁরা যে অবিজেপি ভোটারদেরও সমর্থন চাইছেন, এর আগেও বুঝিয়ে দিয়েছেন বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতি। গতকাল শমীক বলেছিলেন, “যাঁরা নো ভোট টু বিজেপি স্লোগান দিয়েছিলেন, তাঁরা মুখোশের আড়ালের নয়, মুখোমুখি লড়াই করুন। মুখোমুখি দাঁড়ান। বিজেপির বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পথে নেমে হাঁটুন। তাঁদের যাঁরা অনুগামী রয়েছেন, তাঁদের বলছি, ভোট কেটে চতুর্থবারের জন্য তৃণমূলকে ক্ষমতায় আনবেন না। তাহলে এই পশ্চিমবঙ্গ আর পশ্চিমবঙ্গ থাকবে না।”
এর আগে তৃণমূল একাধিকবার দাবি করেছে, সিপিএমের ভোট বিজেপিতে পড়েছে। এখন শমীকের মন্তব্যের পর এই নিয়ে জল্পনা শুরু হতেই বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, “সমীরবাবু নতুন সভাপতি হয়ে এখন কী বলছেন, তা নিয়ে এখনই চূড়ান্ত মন্তব্য করা উচিত নয়। এখন অপেক্ষা করতে হবে, উনি ভবিষ্যতে কী বলেন দেখতে হবে। তবে আমরা মানুষে মানুষে বিভাজন পছন্দ করি না।”
আর কয়েকমাস পর রাজ্যে ভোট। সত্যিই কি অবিজেপি সমর্থকরা গেরুয়া শিবিরকে সমর্থন করবে? বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতি কি সেই চেষ্টাই করে চলেছেন? জল্পনা ক্রমশ বাড়ছে।





