Local Trains Partially Suspended: বাড়ি ফিরব কীভাবে? একটাই প্রশ্ন লোকাল ট্রেন যাত্রীদের
Fresh COVID 19 Restrictions: অফিস শেষ হওয়ার পর শিয়ালদহ বা হাওড়া স্টেশন পর্যন্ত পৌঁছানোর পর আদৌ কি তাঁরা সাতটার শেষ লোকাল ধরতে পারবেন? এই একটাই প্রশ্ন এখন ঘুরছে লোকাল ট্রেনের যাত্রীদের মধ্যে।
কলকাতা: রাজ্যজুড়ে করোনার বাড়বাড়ন্ত। সবথেকে খারাপ পরিস্থিতি কলকাতায়। করোনার সংক্রমণে লাগাম টানতে তাই ফের একবার কড়াকড়ির পথে হাঁটছে রাজ্য সরকার। আংশিক বন্ধ করা হচ্ছে লোকাল ট্রেন পরিষেবাও। সন্ধে সাতটার পর আর লোকাল ট্রেন চালানো যাবে না। কলকাতা এবং হাওড়া স্টেশন থেকে শেষ লোকাল ট্রেন ছেড়ে যাবে সন্ধে সাতটায়। এ ক্ষেত্রে নতুন করে লোকাল ট্রেনের কোনও সময় সূচি তৈরি হচ্ছে না। সাতটা পর্যন্ত নির্ধারিত সময় মেনেই লোকাল ট্রেনগুলি ছাড়বে। যদিও তারপরেও বেশ কিছু স্টাফ স্পেশাল ট্রেন চালানো হবে।
কারা কারা উঠতে পারবেন স্টাফ স্পেশাল ট্রেনে?
স্টাফ স্পেশাল। অর্থাৎ, এই ট্রেন সাধারণ নাগরিকদের জন্য নয়। মূলত রেলকর্মীদের জন্যই এই ট্রেনগুলি চালানো হয়। এর পাশাপাশি, সরকার অনুমোদিত তালিকাভুক্ত কিছু বিভাগে কর্মীরা এই স্টাফ স্পেশাল ট্রেনে যাতায়াত করতে পারেন। এর মধ্যে রয়েছে পুলিশ, স্বাস্থ্য পরিষেবা, ডাক বিভাগ, পৌর পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মী, ব্যাঙ্ক কর্মী সহ অন্যান্য বেশ কিছু সরকারি দফতরের কর্মীরা। ছাড় রয়েছে সংবাদ মাধ্যমের কর্মীদের জন্যও। এছাড়া অন্যান্য সাধারণ নাগরিকদের এই স্টাফ স্পেশাল ট্রেনে যাতায়াত বেআইনি। এই স্টাফ স্পেশাল ট্রেনে যাঁরা যাবেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও শর্ত রয়েছে। সব ক্ষেত্রেই পর্যাপ্ত নথি নিয়ে যাত্রা করতে হবে স্টাফ স্পেশাল ট্রেনে। অন্যথায় গুণতে হবে মোটা টাকার জরিমানা।
অতীতের অভিজ্ঞতা কী বলছে?
কিন্তু অতীতের অভিজ্ঞতা বলছে, এই জরিমানাকে একেবারেই পাত্তা দেয়নি সাধারণ নাগরিকরা। পেটের তাগিদে বহু মানুষ স্টাফ স্পেশাল ট্রেনে ভিড় করেছেন অতীতে। শিয়ালদহ শাখার অনেক স্টাফ স্পেশাল ট্রেনেই বাদুড় ঝোলা ভিড় দেখা গিয়েছে সাম্প্রতিক অতীতে। পরিসংখ্যান বলছে, জুন জুলাই মাসে স্টাফ স্পেশাল ট্রেনে বেআইনিভাবে ওঠার জন্য প্রায় ৫০ হাজার যাত্রীর থেকে জরিমানা করেছে পূর্ব রেল। আর জরিমানার অঙ্ক শুনলে চোখ কপালে উঠবে। মোট দেড় কোটি টাকা আদায় হয়েছিল স্টাফ স্পেশালের জরিমানা থেকে।
নিত্যযাত্রীদের মধ্যে বাড়ছে দুশ্চিন্তা
অতীতের যা অভিজ্ঞতা, তা থেকে স্পষ্ট মোটা টাকার জরিমানা করেও থামানো যায়নি স্টাফ স্পেশালে ‘অবৈধ যাত্রা’। এদিকে সোমবার থেকে ফের আমজনতার জন্য শেষ লোকাল ট্রেন সন্ধে সাতটায়। তারপর থেকে যা চলবে, সব স্টাফ স্পেশাল। কলকাতার শহরতলি এবং সংলগ্ন এলাকা থেকে বহু নিত্যযাত্রী প্রতিদিন শহরে আসেন নিজেদের কর্মস্থলে। এখন অফিস শেষ হওয়ার পর শিয়ালদহ বা হাওড়া স্টেশন পর্যন্ত পৌঁছানোর পর আদৌ কি তাঁরা সাতটার শেষ লোকাল ধরতে পারবেন? এই একটাই প্রশ্ন এখন ঘুরছে লোকাল ট্রেনের যাত্রীদের মধ্যে।
অফিস যাত্রীদের পাশাপাশি শহরের অসংগঠিত ক্ষেত্রগুলির একটি বড় অংশের মানুষ আশেপাশের এলাকাগুলি থেকে কলকাতায় আসেন পেটের তাগিদে। রয়েছেন প্রচুর হকার, যাঁরা কলকাতার রাজপথের ফুটে পসরা সাজিয়ে বসেন। তাঁরাই বা কী করবেন, ভেবে কুল কিনারা পাচ্ছেন না।
রেলের জন্য কঠিন পরীক্ষা
এই পরিস্থিতিতে আবার যদি স্টাফ স্পেশালে অতীতের মতো ভিড় হয়, তা সামলানোর জন্য পর্যাপ্ত পরিকাঠামো রয়েছে তো রেলের? প্রতিটি স্টাফ স্পেশালে, প্রতিটি রেল স্টেশনে রেলের তরফে সর্বক্ষণের নজরদারি কি আদৌ সম্ভব? প্রশ্নটা কিন্তু থেকেই যাচ্ছে। আর যদি এই সমস্যাগুলি সমাধানের কোনও পথ না থাকে, তাহলে স্টাফ স্পেশালে আবারও বিশাল সংখ্যক ‘বেআইনি যাত্রা’-র সাক্ষী হতে হবে। এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।