কলকাতা : পুণ্যতীর্থ গঙ্গাসাগরে নেমেছে মানুষের ঢল। সাগর সঙ্গমে মোক্ষ লাভের উদ্দেশে চলছে মকর স্নান। কিন্তু শুধুই কি স্নান করে পুণ্য অর্জন করবেন পুণ্যার্থীরা? তা একদমই নয়। কারণ এবারই প্রথম আগত ভক্তদের জন্য বিশেষ আকর্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে গঙ্গাসাগরে (Gangasagar Mela)। উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। এখানে এলেই রাজ্যের পাঁচটি মন্দিরকে একসঙ্গে দেখতে পারবেন পুণ্যার্থীরা। রয়েছে তারকেশ্বর (Tarakeshwar), কালীঘাট (Kalighat), দক্ষিণেশ্বর (Dakshineswar), তারাপিঠ এবং জহুরা কালীবাড়ি। এই সমস্ত মন্দিরের আদলে গঙ্গাসাগরে তৈরি করা হয়েছে একটি মণ্ডপ। এখানে যে পুণ্যার্থীরা আসবেন, তাঁরা যেমন প্রত্যেকটি মন্দিরের আরাধ্য দেবতাকে দর্শন করতে পারবেন তারই পাশাপাশি এলইডি স্ক্রিনের মাধ্যমে সেখানকার পুজো-অর্চনাও দেখতে পারবেন।
সহজ কথায়, যাঁরা ভিন রাজ্য থেকে এসেছেন, বা দেশ-বিদেশ থেকে এসেছেন, যাঁরা যেতে পারছেন না দক্ষিণেশ্বর বা কালীঘাট বা তারাপিঠে তাঁদের জন্য একটুকরো দক্ষিণেশ্বর, তারকেশ্বর, কালীঘাট বা জহুরা কালীবাড়ি এমনকী তারাপিঠের মন্দির এক ছাতার তলাতে পেয়ে যাবেন। এই সমস্ত মন্দিরের পুজো অর্চনা সরাসরি ওয়েব কাস্টিং এর মাধ্যমে দেখানোর বন্দোবস্ত করা হয়েছে। যাঁর মাধ্যমেই এক ঝলকে দর্শন করে নিতে পারবেন বাংলার পাঁচ মন্দিরের বিগ্রহ এবং পুজো অর্চনাও। তবে বাংলার এই পাঁচ মন্দিরের রেপ্লিকা ছাড়াও পুণ্যার্থীদের জন্য বিশেষ আকর্ষণ হিসাবে থাকছে বিশেষ সংগ্রহশালা।
সাগরের ইতিহাস, গল্প গাথা নিয়ে তৈরি করা হয়েছে সাগর সংগ্রহশালা। প্রশাসনের তরফে এবারেই প্রথম এই বন্দোবস্ত করা হয়েছে পুণ্যার্থীদের জন্য। এবারে গঙ্গাসাগর মেলার বাজেট প্রায় ১৫০ কোটি টাকা। তিথি মেনে শনিবার সন্ধ্যা ৬.৫৩ মিনিট থেকে শুরু হয়ে যাচ্ছে পুণ্য স্নান। সময় শেষ হবে আগামীকাল সন্ধ্যা ৬.৫৩ মিনিট পর্যন্ত। প্রশাসনের পরিসংখ্যান বলছে এখনও পর্যন্ত গঙ্গাসাগরে ৩৯ লক্ষের বেশি পুণ্যার্থী ভিড় জমিয়েছেন। এই হিসাব শনিবার দুপুর ৩টে পর্যন্ত করা। একইসঙ্গে এবারে ৪০ হাজার বর্গ মিটার জমি সাগরের জল থেকে পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। স্নানের জায়গাও প্রসারিত করা হয়েছে। ১ নম্বর ও ৬ নম্বর বিচ যাওয়ার জন্য রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে নতুন রাস্তা। রয়েছে ১২০০০ স্থায়ী ও অস্থায়ী শৌচাগার।