‘একুশে জুলাই’ শুনে ঠিক সাড়া দেবেন, বাবার ‘অসাধ্য সাধনের’ দিকে তাকিয়ে মেয়ে
Sadhan Pande: মেয়ে নিজেও জানেন, বাবা দল অন্ত প্রাণ। তাই যদি '২১ জুলাই' শুনেই সাড়া দেন!
প্রীতম দে: বাবা হাসপাতালে বিছানায় অচৈতন্য। মেয়ের চোখের একটা কোণ চিকচিক করছে। এই অবস্থার মধ্যেও সত্ত্বেও মানিকতলার বিধায়ক সাধন পাণ্ডেকে বাইপাসের ধারে হাসপাতালে রেখেই বুধবার সকালে বেরিয়ে পড়েছিলেন মেয়ে শ্রেয়া পাণ্ডে। উদ্দেশ্য ছিল, শহিদ স্মরণে যোগ দেওয়া। না, রাজনীতির টানে বেরোননি। বরং বাবাকে ফের একবার উঠে বসতে দেখবেন, রাজনীতির ময়দানে দাপিয়ে বেড়াতে দেখবেন, এই আশা এবং আকাঙ্খার থেকেই আবেগের বশে যোগ দিয়েছিলেন একুশে জুলাই উদযাপনে। কারণ মেয়ে নিজেও জানেন, বাবা দল অন্ত প্রাণ। তাই যদি ‘২১ জুলাই’ শুনেই সাড়া দেন!
গত ১৬ জুলাই রাতে তীব্র শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যার কারণে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সাধনবাবুকে। তারপর থেকে তিনি স্থিতিশীল। রয়েছেন ভেন্টিলেশনে। কিন্তু আশাব্যঞ্জক হওয়ার মতো খুব একটা উন্নতি হয়নি। তাই প্রার্থনা এবং চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখছে না পাণ্ডে পরিবার। সেদিন রাতে যখন মন্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, তখনই স্ত্রী’কে তিনি বলেছিলেন, “হাসপাতাল তো তাহলে আমার ২১ টা (শহিদ দিবস) খেয়ে নেবে।” বাবার এই কথাটা বড্ড মনে লেগেছিল শ্রেয়ার। তখনই ঠিক করেন, বাবা না পারলে তাঁর জায়গায় একুশের অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন তিনি নিজে। এ দিন ডামিলতলায় শহিদ স্মরণে যোগ দিয়ে অশ্রুস্নাত চোখে মন্ত্রী-কন্যা বললেন, “একুশে জুলাই শুনে সাড়া দিতে পারেন বাবা।”
একই আশায় বুক বেঁধেছেন চিকিৎসকেরাও। শ্রেয়া এবং তাঁর পরিবারকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সাধনবাবুর সামনে অন্য কোনও কথা নয়, বরং ‘মানিকতলা’, ‘একুশে জুলাই’ এই ধরনের কথাই যেন বলা হয়। কারণ এই কথাগুলোই এতদিন চালিয়ে এসেছে সাধনকে। তাই ডাক্তারদের আশা, এই কথাগুলো শুনেই ফের একবার জ্ঞান ফিরে পাবেন অসুস্থ বিধায়ক। শ্রেয়া নিজেও বলেন, “অত্যন্ত ব্যক্তিগত হলেও আজ বলছি, আমরা বাবার সামনে গিয়ে মরিয়া হয়ে মানিকতলা, একুশে জুলাই এই কাজের জায়গাগুলোর কথা বলছি।” পাশাপাশি শ্রেয়া জানান, “ভেন্টিলেশনে অক্সিজেন দেওয়ার মাত্রা কিছুটা কমেছে। কিন্তু সারতে এখনও সময় লাগবে। এই ধাক্কা সামলাতে মানসিক ভাবেও কিছুটা সাপোর্ট দিতে হবে।”
আজ থেকে ঠিক দু’বছর আগে, ২০১৯ সালের শহিদ দিবসের আগেও অসুস্থ ছিলেন সাধনবাবু। কিন্তু সেবার অসুস্থতাকে হারিয়েই যোগ দিয়েছিলেন সমাবেশে। “ভেন্টিলেশনে ছিল বাবা। কিন্তু ভেন্টিলেশন থেকে উঠেই একটা পাঞ্জাবি কিনে দলীয় কর্মীর বাইকে চড়ে চলে গিয়েছিল”, কষ্টে গলা বুজে এলেও কোনও মতে বলেন শ্রেয়া। আরও পড়ুন: ‘খেলা’ কতদিন চলবে? দ্বর্থ্যহীন ভাষায় জানালেন মমতা, ‘খেলা দিবস’-ও পালন করবে তৃণমূল