কলকাতা: ধরনা বনাম ধরনা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়য়ের অস্ত্রেই তাঁকে ঘায়েল করতে চায় বিরোধীরা! তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই রাস্তা দখল করে রয়েছে বিরোধীরা। বিজেপির পাশাপাশি ধরনা অবস্থানকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে সিপিআইএম! বিজেপি প্রথম দফায় শ্যামবাজারে ধরনা অবস্থান করেছিল। পরে দ্বিতীয় দফায় ধর্মতলায় ধরনার সিদ্ধান্ত নেন গেরুয়া ব্রিগ্রেড। যা তৃতীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। মেয়াদ বৃদ্ধি হয়েছে আদালতের অনুমতি ক্রমে।
অন্যদিকে ৩ সেপ্টেম্বর শ্যামবাজারে উপচে পড়া মিছিলের পরে রাস্তা দখল করে কর্মসূচি শুরু করে সিপিআইএম। তারপরে আদালতের অনুমোদন নিয়ে অবস্থান শুরু করেছে সিপিআইএমের ছাত্র যুব এবং মহিলা সংগঠনের নেতা কর্মী সমর্থকরা। এর আগে আর জি করের জরুরি বিভাগের থেকে কয়েক মিটারে দূরে প্রথম দফায় দিন কয়েকের জন্য অবস্থান করেছিলেন তাঁরা।
একদা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিঙ্গুর পর্বে ধর্মতলায় ২৬ দিন অনশন করেছিলেন। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে পাশে লাগাতার ধরনা-অবস্থান করেছিলেন জমি ফেরতের দাবিতে। শুধু সিঙ্গুর বা নন্দীগ্রাম পর্বে নয়, বিভিন্ন সময়েই অবস্থানের উপরে জোর দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা সে রাজীব কুমারের ক্ষেত্রে সিবিআইয়ের ভূমিকা কিংবা নির্বাচন কমিশনের তাঁকে সেন্সর করা অথবা একশো দিনের কাজ, আবাসের টাকা চেয়ে – সব কিছুতেই ধরনা-অবস্থান করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এবার সেই ধরনা-অবস্থানকেই অস্ত্র করেছে বিরোধীরা।
মিছিলের থেকে দীর্ঘমেয়াদি লড়াইয়ে ধরনা অবস্থানের বাড়তি গুরুত্ব রয়েছে বলেই কি সেই কর্মসূচিতেই জোর দিলেন বঙ্গের বিরোধী শিবিরের নেতৃত্ব, চর্চা রাজনৈতিক মহলের অনেকের মধ্যে। মিছিল কয়েক মুহুর্ত, কিছুটা সময় দাগ কাটতে পারে। কিন্তু ধরনা অবস্থান লড়াইকে দীর্ঘ দিন টেনে নিয়ে যেতে পারে। মূলত এই লাইনেই চলছে চর্চা। মিছিলের তুলনায় মানুষের কাছে বার্তা পৌঁছে দিতে ধরনা অবস্থান অনেক বেশি কার্যকর হয় বলেই মত রাজনীতির কারবারিদের অনেকের। সে কারণেই তিলোত্তমা ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে, সুবিচারের দাবিতে এই ধরনা অবস্থানকে গুরুত্ব দিচ্ছে গেরুয়া এবং লাল শিবির তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। অবস্থান নিয়ে যাতে পুলিশি সমস্যা না তৈরি হয়, পুলিশ বাধা দিতে না পারে সে কারণে আদালতের দিকে তাকিয়ে সব পক্ষই। বারেবারেই হচ্ছে মামলা।