কলকাতা: একুশের বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর (Prashant Kishor) পাকাপাকিভাবে এ রাজ্যেরই বাসিন্দা হতে চলেছেন। খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) কেন্দ্রেই ভোটার তালিকায় নাম উঠে গিয়েছে পিকে-র। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ভবানীপুরের উপনির্বাচনে ভোট দিতে দেখা যাবে তাঁকে। আর এ নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দিলেন কেন্দ্রীয় বিজেপির সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।
রবিবার ইকোপার্কে মর্নিং ওয়াকে এসে দিলীপ ঘোষ বলেন, “ভবানীপুরে (Bhawanipur) ভোটার লিস্টে পিকের নাম এবং অভিষেকের বাড়ির ঠিকানা রয়েছে। আমরা জানি উনি টিএমসির নেতা ছিলেন। এখানে নেতা হতে গেলে এখানে ভোটার হতে হবে। আমার মনে হয়, সেই সময় হয়েছিলেন। কিন্তু জানা ছিল না। এবারে জানা গেল।”
আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ভবানীপুরে উপনির্বাচন। এই লড়ার তৃণমূল নেত্রীর জন্য প্রেস্টিজ ফাইট। এদিকে পিকে বলে দিয়েছেন যে আই-প্যাকের সঙ্গে তাঁর কোনও ধরনের সম্পর্ক আর নেই। কিন্তু তৃণমূলের সঙ্গে প্রশান্ত কিশোরের সম্পর্ক যে সময়ের সঙ্গে আরও মজবুত হচ্ছে, তা নিয়ে আর কোনও সংশয়ের জায়গা থাকল না। কারণ, এ ক্ষেত্রে ভোটার লিস্টে থাকা প্রশান্ত কিশোরের এপিক নম্বর দিয়ে যখন নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে সার্চ করা হয়েছে, তখন প্রশান্ত কিশোর নাম এবং তাঁর পোলিং বুথ পাওয়া গিয়েছে। এদিকে যে বহিরাগত ‘তত্ত্ব’ নিয়ে বিধানসভা ভোটের সময় বিজেপিকেে উঠতে বসতে নিশানা করেছিল তৃণমূল, আদতে বিহারের বাসিন্দা প্রশান্ত কিশোরের নাম ভবানীপুর কেন্দ্রে ভোটার লিস্টে থাকা নিয়ে ঘাসফুল শিবিরকে পাল্টা কটাক্ষ ছুড়েছে তারা। বিজেপি নেতাদের কটাক্ষ, প্রশান্ত কিশোর কীভাবে বাংলার অন্তর্গত হলেন? এ নিয়ে দিলীপ দাবি করলেন, প্রশান্ত কিশোর আগেই তৃণমূলে নাম লিখিয়ে ফেলেছেন। এখন শুধু জানা গেল।
এদিন হাঁসখালীতে তিন বিজেপি কর্মী গুলিবিদ্ধ হওয়া প্রসঙ্গেও মুখ খোলেন দিলীপ। বলেন, “পশ্চিমবাংলায় যারা সমাজবিরোধী ছিল, সিপিএম যাদের ব্যবহার করত তাঁরা এখন টিএমসির নেতা হয়েছেন। তাঁরা পদাধিকারী, পঞ্চায়েত জেলা পরিষদ, সমিতির মেম্বার নির্বাচিত হয়ে গিয়েছেন। তাঁদের টিকিট দিতে হয়েছে। তাঁরা টাকা পয়সা খরচা করে বন্দুক দেখিয়ে গতবার জিতেছেন। বাকিদের নমিনেশন করতে দেয়নি। স্বাভাবিক ভাবে সারা পশ্চিমবঙ্গে রাজনীতিটা অপরাধীর হয়ে গিয়েছে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “খালি আমাদের তো মারছেই, এছাড়াও টিএমসির মধ্যে এতো গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব শুরু হয়ে গিয়েছে। তাদের নেতারাও মারা যাচ্ছেন। আবার তাদের বিরুদ্ধেই কমপ্লেন। তাদের লোকেরাই বলছে পার্টির নেতারাই মেরেছে। এই যে অপরাধীকরণ হয়ে গিয়েছে… একসময় বিহারের মতো অবস্থা এখানে। কোথাও আইন-শৃঙ্খলা নেই। পুলিশ কারও গায়ে হাত দেয় না। আর এফআইআরও নেয় না। খুবই দুর্ভাগ্যের এবং খুবই দুশ্চিন্তার বিষয়। তাদের নেতাদের যে স্টেটমেন্ট আসে এই বিষয়ে সংঘর্ষে মারা যাচ্ছে, কেউ সন্ত্রাসে এবং তাদের প্রতি যে অবমাননা করে কথা বলছেন। রাজনীতির এই ধরনের পতন এটা টিএমসির হাত ধরে হচ্ছে।”