কলকাতা: বিজেপি-তে মহিলাদের স্থান নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সায়নী ঘোষ। সমালোচনার পাল্টা জবাব দিলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। তাঁর দাবি, বিজেপি-ই মহিলাদের সম্মান দেয়। পাল্টা বললেন, “তৃণমূলে একজনই পুরুষ রয়েছে, বাকি সব মহিলা!” বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্যে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হল।
বিতর্কের সূত্র হচ্ছে তৃণমূল যুব নেত্রী সায়নী ঘোষের একটি মন্তব্যকে ঘিরে। অভিনেত্রী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়ের বিজেপি ত্যাগ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সায়নী গতকাল বলেন,”কোনও মহিলার পক্ষেই বিজেপিতে থাকা সম্ভব নয়৷ বিজেপি নারীবিদ্বেষী দল।”
শুক্রবার ইকো পার্কে প্রাতঃভ্রমণের পর দিলীপ ঘোষকে শ্রাবন্তীর বিজেপি ছাড়ার প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হয়। সেই সূত্রেই উঠে আসে সায়নীর মন্তব্য। দিলীপ ঘোষ তখন বলেন, “সায়নী ঘোষ নিজেকে কী মনে করেন?” তিনি বলেন, “প্রথম মহিলা প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিদেশ মন্ত্রী আমরা করেছি। চারজন মহিলা রাজ্যপাল আমরা করেছি। টিএমসিতে একজনই পুরুষ আছে, বাকি সব মহিলা।” সায়নীর বক্তব্য প্রসঙ্গে দিলীপ বলেন, “তৃণমূলে একজনই পুরুষ আছেন। বাকি সবাই মহিলা।”
দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এক জন পুরুষ বলতে তিনি আদতে কাকে বুঝিয়েছেন, তা স্পষ্ট। তবে বিষয়টিতে তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে গিয়ে তিনি আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শক্তিকে স্বীকার করে নিয়েছেন।
শ্রাবন্তীর পদ্ম-ত্যাগ প্রসঙ্গেও তিনি মুখ খোলেন। তবে সেলিব্রেটিদের রাজনীতি যোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এদের কত দিন রাস্তায় দেখা যায়! এদের কখনও রাস্তায় দেখেছেন? কার্যকর্তারা রাস্তায় মার খাচ্ছেন… এটা হচ্ছে রাজনীতি। কেউ ভাবে বাড়ি বসে থাকব, মালা চড়াবে এটা হয় না। লকেটও তো সিনেমায় ছিল। তিনি পার্টিতে এসেছেন লড়াই করেছেন, দল গুরুত্ব দিয়েছে। নেত্রী হয়েছেন। লোক কেন ভোট দেবেন? যারা করছেন তাদের ভোট দিচ্ছেন।”
তাঁর সংযোজন, “তৃণমূল নেতাদের অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন কারণ ওখানে গেলে কাজ পাওয়া যায়। যাঁরা যাচ্ছেন কারণ তাঁদের কোনও সিনেমায় অভিনয় করতে দেওয়া হয় না। তাই চলে যাচ্ছে।”
প্রসঙ্গত, বিধানসভা নির্বাচনের আগে অনেকেই যোগ দিয়েছিলেন শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়। ফেসবুক ও টুইটারে দলের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে লক্ষ্মীবারই পদ্ম সঙ্গ ত্যাগ করেন তিনি। বৃহস্পতিবার সকালে টুইট করে দল ছাড়ার কথা জানিয়েছেন শ্রাবন্তী। তিনি লিখেছেন, ‘আমি দলের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করলাম।’ দল ছাড়ার কারণ নিজেই জানিয়েছেন শ্রাবন্তী। তিনি দাবি করেছেন, রাজ্যের জন্য কিছু করার কোনও উদ্যোগ নেই বিজেপির। সেই কারণেই দল ছাড়লেন তিনি। শ্রাবন্তী সংগঠনের সঙ্গে তেমনভাবে যুক্ত নয়, তাই দল ছাড়লে দলের তেমন কোনও ক্ষতির সম্ভাবনা নেই, তবে এক তারকা মুখ কমে যাওয়া বিজেপির জন্য ধাক্কা বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
আরও পড়়ুন: Bally Municipality: সাধারণের স্বার্থেই হাওড়া থেকে বিযুক্তিকরণের পথে বালি, বিধানসভায় প্রস্তাব আনল সরকার