কলকাতা: ফের আগুনের ঘটনা শহরে (Kolkata)। তপসিয়া বাসস্ট্যান্ডের (topsia Bustand) কাছে মজদুর পাড়ার একটি বস্তিতে ভয়াবহ আগুন লাগে। ইতিমধ্য়েই বেশ কয়েকটি ঝুপড়ি সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। দাহ্য পদার্থ বেশি থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। আগুন নেভাতে ইতিমধ্যে ঘটনাস্থানে পৌঁছেছে দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিন। শেষ পাওয়া খবর পর্যন্ত আগুন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এখনও হতাহতের কোনও খবর মেলেনি।
কলকাতা শহরের অন্যতম ব্যস্ত এলাকা হল তপসিয়া মোড় (Topsia)। প্রতিদিনের মতোই আজও ব্যস্ত ছিল এলাকা। হঠাৎ দুপুর ১২টা নাগাদ তিলজলা থানা এলাকার মজদুর পাড়ার খাল ধারের পাশে থাকা একটি বস্তি থেকে কালো ধোঁয়া বের হতে দেখতে পান এলাকাবাসী। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই সেই আগুন ভয়াবহ আকার ধারণ করে। তখন ওই এলাকা থেকে গলগল করে আগুনের লেলিহান শিখা বের হতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকাবাসূী। ঘর ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন সকলে। তৎক্ষণাত খবর দেওয়া হয় দমকলে। কিছুক্ষণের মধ্যেই এলাকায় আসে দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিন। যুদ্ধকালীন তৎপরতার সঙ্গে কাজ শুরু করে তারা। তবে আগুন নেভাতে গিয়ে প্রথমে যথেষ্ঠ বেগ পেতে হয় দমকলকে।
যেহেতু বস্তি, সেই কারণে এলাকাটি সম্পূর্ণ ঘিঞ্জি। সেই কারণে ঘটনাস্থান থেকে বেশ খানিকটা দূরে দমকলের গাড়ি দাঁড় করিয়ে জলের পাইপ ভিতরে টেনে আনতে হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও পনেরো থেকে ষোলোটি ঝুপড়ি সম্পূর্ণ ভস্মিভূত হয়ে গিয়েছে।
আগুনের খবর শুনতেই এলাকায় পৌঁছান রাজ্যের মন্ত্রী তথা বিধায়ক জাভেদ খান। তিনি দাবি করেন যে কীভাবে আগুন লেগেছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি চাঞ্চল্যকর তথ্য দাবি করেন মন্ত্রী। জানান যে, এই ঝুপড়ি এলাকায় একটি পাউডারের গোডাউন ছিল। সেই পাউডারের গোডাউন চলত অবৈধভাবে। প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাশাপাশি জাভেদ খান জানিয়েছেন, এখনও হতাহতের কোনও খবর নেই। তবে কীভাবে আগুন লাগল তা খতিয়ে দেখা হবে। এদিকে, যে সকল ঝুপড়িবাসী তাদের সমস্ত কিছু হারিয়েছেন তাঁদের প্রত্যেককে আর্থিক সাহায্য করা হবে।
ইতিমধ্যেই কান্নার রোল উঠেছে এলাকা থেকে। সুমিত্রা নামের এক মহিলা জানান, “আমার ঘরের যা-যা ছিল সমস্ত কিছু পুড়ে গিয়েছ। ক্ষণিকের মধ্যেই শেষ হয়ে গেল সবকিছু। জামাকাপড়, মোবাইল সবসব পুড়ে গিয়েছে। আমি কিছুই বের করে আনতে পারিনি।” অঝোরে কেঁদে চলেছেন ওই মহিলা। বললেন, “আমার স্বামীর আসবাব পত্রের ব্যবসা। কয়েকদিন আগেই ষাট হাজার টাকার লোন নিয়ে ছিলাম। লোনের প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকা ঘরের ভিতরেই ছিল। সেই টাকাও সব পুড়ে গিয়েছে। এখন আমি কী করব? কীভাব লোন জমা করব?”
এদিকে, অগ্নিকাণ্ডের পরে স্থানীয় বাসিন্দারা পরপর তিনটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান। সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কারণেই আগুন নাকি অন্য কিছু তা এখনও স্পষ্ট নয়। বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
আরও পড়ুন: Sitai BSF Firing: ‘ভারতীয়দের ওপরেই জুলুমবাজি করে বিএসএফ’, সিতাইকাণ্ডে কড়া প্রতিক্রিয়া উদয়নের