কলকাতা: রাজ্য জুড়ে উর্ধ্বমুখী করোনার (Covid 19) রেখচিত্র। পরপর দু দিন করোনা সংক্রমণ পৌঁছেছে হাজারের দোরগোড়ায়। নতুন করে শুরু হয়েছে প্রশাসনিক তৎপরতা। বেশ কয়েকটি জেলায় মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন (Containment Zone) তৈরি করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে নবান্নের (Nobanno) তরফে। এরকম পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠল চিকিৎসকদের একটি অনুষ্ঠান ঘিরেই। বিজয়া সম্মেলনীর অনুষ্ঠানে কারও মুখে দেখা গেল না মাস্ক (Mask)। মানা হয়নি দূরত্ব বিধিও। এক দিকে যখন চিকিৎসকেরা বারবার কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক করছেন, তার মধ্যে চিকিৎসকদের এমন ছবি দেখে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
গতকাল, রবিবার বারাসতে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন বা আইএমএ (IMA)-র বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বহু চিকিৎসক। কিন্তু একটি ঘরে অনেক লোকের জমায়েত হওয়া সত্ত্বেও তাঁদের মধ্যে নেই কোনও দূরত্ব বিধি। চিকিৎসকদের অনেকের মুখেই মাস্ক নেই। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, নির্মল মাজির বাঁ দিকে বসে খোদ স্বাস্থ্য অধিকর্তা। মুখে মাস্ক রয়েছে ডিএইচএসের। কিন্তু তাঁর উপস্থিতিতে নির্মল মাজি-সহ অনেকের মুখেই মাস্ক নেই।
চিকিৎসকরাই যদি কোভিড বিধি না মানেন, তাহলে সাধারণ মানুষের কী দোষ! বারাসত আইএমএ’র প্রেসিডেন্ট তপন বিশ্বাসকে এই প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনও উত্তর দেননি। প্রশ্ন শুনে ‘পরে কথা বলি’ বলে ফোন কেটে দেন তিনি।
উল্লেখ্য, দৈনিক আক্রান্ত ৬০০-র ঘর থেকে ৭০০, তার পর ধীরে ধীরে ৮০০, ৯০০ পেরিয়েছে। উৎসব মিটতেই ধীর পায়ে রাজ্যে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। রবিবারের কোভিড বুলেটিন অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় বাংলায় কোভিড আক্রান্ত মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। কোথায় গিয়ে থামবে সংক্রমণ গ্রাফ, সেদিকেই এখন চোখ বিশেষজ্ঞদের। সংক্রমণ রোধে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু নির্দেশিকা দিয়েছে নবান্ন। রবিবার রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত কোভিড বুলেটিন জানাচ্ছে,গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৮৯-এ। শনিবার এই সংখ্যাটা ছিল ৯৭৪-এ। লাফিয়ে বেড়েছে কলকাতার আক্রান্তের সংখ্যাও। শুধু গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২৭৩ জন। আর শনিবার এই সংখ্যাটা ছিল ২৬৮।
এখনও পর্যন্ত বিশেষজ্ঞরা তৃতীয় ঢেউয়ের (Third Wave) ইঙ্গিত দিচ্ছেন না বটে, তবে এ রাজ্যে পরিস্থিতিতে যে আশঙ্কার মেঘ তৈরি হচ্ছে, তা রাজ্য সরকারের করোনা সংক্রমণের রিপোর্ট থেকেই স্পষ্ট। আর এই প্রেক্ষিতে কলকাতা, মালদহ, নদিয়া, দার্জিলিং, উত্তর দিনাজপুর, হাওড়া- সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়া এই জেলাগুলিতে মাইক্রো কনটেনমেন্ট এবং কনটেইনমেন্ট জ়োন (Containment and Micro-Containment Zone) করার জন্য জোর দিয়েছেন মুখ্যসচিব। নবান্নে জেলাশাসক, পুলিশ সুপারদের নিয়ে করা হয়েছে বৈঠকও।
আরও পড়ুন: Gariahat Double Murder: খুন যদি পূর্ব পরিকল্পিত না হয়, তা হলে আগে চালককে খুন কেন? উঠছে প্রশ্ন