কলকাতা: দুঃস্বপ্ন কাটিয়ে অবশেষে বাড়ি ফিরলেন বিষ্ণুপুরের মিঠুন দারি (Mithun Dari) । গতকাল উত্তরাখণ্ড (Uttarakhand) থেকে দিল্লি (Delhi) হয়ে কলকাতায় (Kolkata)ফেরেন তিনি। উত্তরকাশিতে (Kashi) যাওয়া সাত বাঙালির মধ্যে একমাত্র জীবিত তিনি। আহত অবস্থায় উত্তরাখণ্ডের জেলা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন মিঠুন।
গত ১১ই অক্টোবর কলকাতা থেকে উত্তর কাশিতে ট্রেকিং করতে যান সাতজন বাঙালি। এরপর সোমবার সকালে চার অভিযাত্রীর দেহ ফেরে কলকাতায়। ঘটনার বিষয়ে যদিও মিঠুন বেশি কিছু সংবাদমাধ্যমকে জানাতে পারেননি। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, এখন অনেকটাই সুস্থ রয়েছেন। তবে ভুলতে পারছেন না সেখানকার ভয়াবহ স্মৃতি।
গত ২২ অক্টোবর প্রথম পাঁচ জনের মৃত্যুর খবর সামনে আসে। উত্তরাখণ্ডের বাগেশ্বর কন্ট্রোল রুম থেকে বাংলার পাঁচ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন,সাধন বসাক, তিনি ঠাকুরপুকুর জায়গীর রোডের বাসিন্দা। এছাড়াও বিকাশ মাকাল, সৌরভ দাস, সাবিয়ান দাসের দেহ উদ্ধার হয়েছে। তাঁদের পরিচয় জানা গিয়েছে।
উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীতে তাঁরা প্রত্যেকেই ট্রেকিং করতে গিয়েছিলেন। বিপর্যয়ের পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন তাঁরা। পরে রাতের দিকে তিন জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়। দেহ নিয়ে আসার জন্য চপার পাঠানো হয়েছে। নিঁখোজ ছিলেন ৪ জন।
১১ জন পর্বতারোহীর মধ্যে দুজনকে জীবিত অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হয়েছিল আগেই। অর্থাৎ বাকি ৯ জনের মধ্যে ৫ জনের দেহ উদ্ধার হয়। জানা গিয়েছে, এই দলটি ট্রেকিং-এ গিয়েছিল। সেখানে গিয়েই বিপত্তি ঘটে। ওই দলের মধ্যে ছিলেন ৭ জন বাঙালি।
এরপর গত ২৩ অক্টোবর আরও এক বাঙালির মৃত্যুর খবর সামনে আসে। বছর তিরিশের তনুময় তিওয়ারি। বাড়ি হরিদেবপুরের নেপালগঞ্জে। ওই গ্রুপের সঙ্গে তিনিও ট্রেকিংয়ে গিয়েছিলেন উত্তর কাশিতে।সঙ্গে ছিলেন তাঁর মামা সুখেন মাঝিও। তনুময়ের দেহ উদ্ধার করা গেলেও, তার মামাকে এখনও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
উত্তরাখণ্ডের বিপর্যয়ের খবর শোনার পর থেকেই আতঙ্কের প্রহর কাটাচ্ছিলেন তিওয়ারি পরিবারের সদস্যরা। সর্বদা চোখ রেখেছিলেন টিভির পর্দায়। প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন। যতদিন কোনও খবর মেলেনি, বুকের মধ্যে আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। ভেবেছিলেন, হয়তো কোথাও আটকে পড়েছে, কিন্তু তাঁদের সন্তান সুরক্ষিত রয়েছে। কিন্তু তা মিথ্যা করেই অবশেষে আসে সেই খবর।
তনুময়ের বাবা-মা কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে নেই। ঘরে বসে ডুকরে কেঁদে উঠছেন মাঝেমধ্যেই। তনুময়ের কাকা বলেন, “আমাদের ছেলেটা তো চলেই গেল। আর কিছু বলার নেই। তবে দেহটা যেন পাই। আমরা সত্কারটা যেন করতে পারি।” পরিবারে শোকের ছায়া। সরকারের কাছে আবেদন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, তাঁদের ছেলের দেহ যেন তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: ‘আমরা কেন ঝগড়া করব? সবটাই পলিটিক্যাল ষড়যন্ত্র’, BSF-এর ক্ষমতায়নে তোপ মমতার