কলকাতা: কাঁকুলিয়া রোডের (Gariahat Double Murder) জোড়া খুনের তদন্তে প্রতি পদে হোঁচট। মালিক না চালক, কাকে আগে খুন করা হয়েছিল তা নিয়ে এবার তৈরি হচ্ছে ধন্দ। রহস্যের জট খুলতে মূল অভিযুক্ত ভিকি হালদারকে হন্যে হয়ে খুঁজছে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা।
গড়িয়াহাটের কাঁকুলিয়ায় জোড়া খুনে গ্রেফতার করা হয়েছে বাপি মণ্ডল ও জাহির গাজিকে। তাঁদের জেরা করে নতুন তথ্য জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। তদন্তকারীরা প্রাথমিক ভাবে ভেবেছিলেন আগে খুন করা হয় কর্পোরেট কর্তা সুবীর চাকিকে। কিন্তু ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে উল্টোটা। গত রবিবার ঘটনার দিন প্রথমে কাঁকুলিয়া রোডের বাড়িতে ঢুকে তিন তলায় চলে যান ভিকি।
চালককে ভিকি ও তাঁর দলবল খুন করে বলে অভিযোগ। এরপর সেখান থেকে নেমে আসেন দোতলায়। সুবীর চাকির সঙ্গে বাড়ি নিয়ে শুরু হয় দরাদরি। সেই সময় শুরু হয় বচসা। এরপরই সুবীর চাকিকে হত্যা করা হয় নৃশংস ভাবে। পুলিশ জানতে পেরেছে বাপি ও জাহিরকে সুবীর চাকির হাত-পা ধরতে বলা হয়। ভিকির অপর সঙ্গী সুবীরবাবুর মুখ চেপে ধরেন বলে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন। এমনও পুলিশ সূত্রে খবর, ভিকি নিজেই সুবীর চাকির গলায় ধারাল অস্ত্রের কোপ বসায়।
কিন্তু এখানেই নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ, মিঠু হালদার যিনি এই কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত তিনি তদন্তকারীদের জানিয়েছেন ভিকির খুনের পরিকল্পনা ছিল না। যদি তাই হয়, তা হলে কেন সুবীর চাকির গাড়ির চালক রবীন মণ্ডলকে প্রথমে খুন করা হল? রবীন মণ্ডল ছিলেন কাঁকুলিয়া রোডের ওই বাড়ির তিন তলায়। আততায়ীরা প্রথমে তিন তলায় যান। তার পর দোতলায় নামেন। দুই ধৃতকে জেরা করে তেমন তথ্যই উঠে এসেছে। সে ক্ষেত্রে প্রথম খুন যদি রবীন মণ্ডলই হয়ে থাকেন, তা হলে তো সুবীর চাকির খুন হওয়া যে পূর্ব পরিকল্পিত তেমনটা ধরে নেওয়া যেতেই পারে।
কারণ, রবীনবাবু এই কাণ্ডের সাক্ষী হয়ে থেকে যেতেন। তাই তাঁকে সরাতে চেয়েছিল আততায়ীরা। এ ক্ষেত্রে প্রমাণ আগে সরিয়ে তার পরই যদি সুবীর চাকিকে খুন করা হয়, তবে ভিকি যে আটঘাট বেঁধেই নেমেছিলেন তেমনটা ধরে নেওয়া কি খুব অসম্ভব কিছু? যদিও সমস্ত প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছে তদন্তকারী দল।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার গড়িয়াহাট থানা এলাকার ৭৮ এ কাঁকুলিয়া রোডের একটি তিনতলা বাড়ি থেকে সুবীর চাকি ও তাঁর গাড়ির চালক রবীন মণ্ডলের রক্তাক্ত, ক্ষত বিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। এখনও পর্যন্ত তদন্তকারীদের হাতে যে তথ্যপ্রমাণ এসেছে, তাতে সম্পত্তি সংক্রান্ত কারণেই এই খুন বলছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: Patharpratima: কুর্নিশ! বাবার অসুখ, সংসার চালাতে অ্যাম্বুল্যান্সের স্টিয়ারিং হাতে তুলে নিল মেয়ে
আরও পড়ুন: RG Kar Medical: সোমবার শুনানি, আরজি করের টালমাটাল পরিস্থিতি কি স্বাভাবিক হবে?