প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ: আগামী ১৮ অক্টোবর, রাজ্যের ডিপার্টমেন্ট অফ পার্সোনাল অ্যান্ড ট্রেনিং (ডিওপিটি)-এর এনকোয়ারি কমিশনের কাছে হাজিরা দিতে হবে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Alapan Bandyopadhyay)। যদিও এনকোয়ারি কমিশনে গঠনের বিরোধিতা করে ইতিমধ্যেই ক্যাটের শরণাপন্ন হয়েছেন এই প্রাক্তন আমলা। তাই হাজিরা দেবেন না বলেই আগেভাগেই জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
জানা গিয়েছে, গত কয়েকদিন আগে হাজিরার জন্য আলপনবাবুর কাছে নোটিস পাঠায় এনকোয়ারি কমিশন। গত ৩১ অগস্ট প্রাক্তন আইএএস অফিসার বিপি শর্মা এবং ডাক বিভাগের সিনিয়র অফিসার আমনপ্রীত দুগ্গাল-দুই সদস্যকে নিয়ে এনকোয়ারি কমিশন গঠন করে ডিওপিটি। কলাইকুন্ডায় প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচিতে ‘মিসবিহেভিয়ার’ ও ‘মিস কন্ডাক্ট’-অভিযোগ তুলে গত ১৬ জুন আলাপনবাবুর বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় তারা।
এর পর ২২ জুলাই তার জবাব দেন আলাপনবাবু। সেখানে তিনি স্পষ্ট জানান যে, যেহেতু রাজ্য সরকারের মুখ্যসচিবের দায়িত্বে ছিলেন, তাই তাঁর বিরুদ্ধে এহেন পদক্ষেপ করা যায় না। এদিকে পাল্টা ডিওপিটি যুক্তি দেয়, আলাপনবাবু যেহেতু আইএএস অফিসার, তিনি সর্বভারতীয় সার্ভিসের সঙ্গে যুক্ত। তাই কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে টানাপোড়েন হলেও এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার আছে। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তই হবে শিরোধার্য। তাই আলাপনবাবুর যুক্তি যথার্থ নয় বলে দাবি করে তারা। আর এসব বিষয় নিয়ে আরও বেশি করে স্পষ্ট হতেই এনকোয়ারি কমিশন গঠন হয়। সেই কমিশন আলাপনবাবুকে সশরীরে হাজিরার জন্য নির্দেশ দিয়েছে বলেই সূত্রের খবর।
উল্লেখ্য, গত ২৮ মে থেকে যে ইস্যু বাংলার রাজনীতির গণ্ডি পেরিয়ে জাতীয় স্তরে পৌঁছেছে তার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রেক্ষিতে কলাইকুণ্ডায় প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রীর রিভিউ বৈঠক ও তাতে মুখ্যমন্ত্রী ও মুখ্যসচিবের স্বল্প সময়ের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এরই ভিত্তিতে গত সোমবার দিল্লির নর্থ ব্লকে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে রিপোর্ট করার নির্দেশ দেয় কেন্দ্র।
নির্ধারিত সময় দিল্লিতে যোগ না দেওয়ায় রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে শো-কজ করে কেন্দ্র। ২০০৫ সালের বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন্দ্রের কর্মীবর্গ দফতরের পক্ষ থেকে এই চিঠি দেওয়া হয়। নির্দেশ আসা সত্ত্বেও তিনি কেন হাজিরা দিলেন না, সেই কারণ জানতে চেয়ে এই শোকজ করা হয়। এদিকে দিল্লির নর্থ ব্লকে রিপোর্ট না করে তার মধ্যেই মুখ্যসচিবের পদ থেকে ইস্তফা দেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা হিসাবে যোগ দেন তিনি। আর তার অব্যবহিত পর তাঁকে শোকজ করে কেন্দ্র।