কলকাতা: সংক্রমণের কারণে আপাতত এ রাজ্যে দু’ ক্ষেত্রে ‘লকডাউন’ চলছে। একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে পঠনপাঠন, দ্বিতীয়টি লোকাল ট্রেন চলাচল। প্রথমটি অবশ্য ১৬ নভেম্বর থেকেই খুলবে বলে সোমবার ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু লোকাল ট্রেন যে কবে চলবে, তা নিয়ে রাজ্যের তরফে এখনও কোনও ইঙ্গিত মেলেনি। এদিকে রেল বলছে, শুধু সবুজ সঙ্কেতের অপেক্ষা। নবান্ন থেকে বললেই, চালু হয়ে যাবে আম-পশ্চিমবঙ্গবাসীর ‘লাইফলাইন’।
লোকাল ট্রেন চালু করার ক্ষেত্রে রেল সবরকম ভাবে প্রস্তুতি সেরে রেখেছে। কিন্তু যেহেতু নবান্ন থেকে তা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, তাই সেখান থেকে অনুমতি না মিললে রেলের কিছু করার নেই। রেলের তরফে এমনটাই দাবি করা হয়েছে। পূর্ব রেলের আধিকারিকদের দাবি, ‘লোকাল ট্রেন চালু করার বিষয়ে আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত। তবে এই বিষয়ে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে অনুমতি দরকার। অতীতে আমরা রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়ে লোকাল ট্রেন চালু করার বিষয়ে অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু সেই সময় রাজ্য সরকার এই বিষয়ে কোনও উত্তর দেয়নি। রাজ্য সরকারের অনুমতি পেলেই আমরা পুরোদমে ট্রেন চালাতে পারব।’
স্কুল কলেজ খুলছে ১৬ নভেম্বর থেকে। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘোষণা করার পর থেকেই বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ‘লোকাল ট্রেন কবে চলবে?’। ছাত্র ছাত্রী থেকে শিক্ষক শিক্ষিকা — একটা বড় অংশের প্রশ্ন ট্রেন চলাচল না করলে তাঁরা গন্তব্যে পৌঁছবেন কী করে। তাঁরা বলছেন, সকলের বাড়ির পাশে কলেজ বা অফিস নয়। এমনও অনেকে আছেন, যাঁরা দীর্ঘ সময় লোকাল ট্রেন সফর করেই সেখানে পৌঁছন। তা ছাড়া অন্য কোনও পথও নেই। মূলত তাঁদেরই প্রশ্ন, ট্রেন না চালু করে এ ভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিলে সমস্যায় পড়তে হবে।
স্কুল, কলেজ খোলা নিয়ে সোমবারের ঘোষণার পর আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে লোকাল ট্রেন চালুর দিনক্ষণ সংক্রান্ত প্রশ্ন। যদিও রেলের বক্তব্য, তারা চায় যত তাড়াতাড়ি সম্ভব লোকাল ট্রেন চালু করার অনুমতি দিক রাজ্য। তারা সবরকম ভাবেই প্রস্তুত। যদিও এই প্রথমবার নিজেদের প্রস্তুতির বিষয়ে রেল মুখ খুলেছে এমনটা নয়। এর আগেও তারা দাবি করেছে, রাজ্য সরকারের কাছে চিঠি দিয়েছে। রাজ্য কোনও সদুত্তর দেয়নি।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে রাজ্য সরকার জানিয়ে দেয়, আপাতত বাংলায় সমস্ত ধরনের যাত্রীবাহী লোকাল ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে। পরবর্তী বিজ্ঞপ্তি না জারি হওয়া পর্যন্ত এই নির্দেশই বলবৎ থাকবে। তবে রেল বেশ কিছু স্টাফ স্পেশাল ট্রেন এখন চালাচ্ছে। তবে সেই বিশেষ ট্রেনে যে হারে যাত্রীর ভিড় দিনকে দিন বাড়ছে, তাতে সংক্রমণ মোকাবিলা থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর প্রবণতাই বেশি বলে অভিযোগ সাধারণ মানুষের।