কলকাতা: হাইকোর্ট থেকে নিম্ন আদালত, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বারবার ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হচ্ছে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে। তদন্তের দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠেছে, প্রশ্ন উঠেছে অফিসারদের দক্ষতা নিয়েও। সম্প্রতি ইডি-র এক তদন্তকারী অফিসারকে নিয়োগ মামলা থেকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। এবার হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে কার্যত নিজেদের সাফল্য তুলে ধরল ইডি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের করা মামলার শুনানি চলাকালীন বৃহস্পতিবার ফের ইডি-র দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। গত কয়েক মাস ধরে কী তদন্ত করা হয়েছে, সেই প্রশ্নও তোলেন বিচারপতি সৌমেন সেন। তখনই কার্যত সাফাই দিয়ে ইডি জানায়, কতটা তৎপরতার সঙ্গে কাজ করছেন ইডি অফিসাররা।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়োগ মামলায় তলব করেছে ইডি। অভিষেক ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করায় আদালত বলেছে, সমন পাঠানোর থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ নথি যাচাই করা। সেগুলি খতিয়ে দেখে, তারপর প্রয়োজন হলে সমন পাঠানো যায় বলে উল্লেখ করেছেন বিচারপতি।
এদিন বিচারপতি সেন ইডিকে বলেন, “আপনি ডকুমেন্টস দেখুন। সেগুলি স্ক্যান করুন। প্রয়োজনে ডাকুন।” ইডি-র আইনজীবী ধীরজ ত্রিবেদী আপত্তি জানিয়ে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে অভিষেককে। অভিষেক তদন্তে সহযোগিতা করছেন না বলেও দাবি করে ইডি। তখনই ভর্ৎসনা করে বিচারপতি সৌমেন সেন বলেন, “১৯ মাস কিছু করেননি। আগে ডকুমেন্টস চেক করুন। সেগুলি নিয়ে নিজেদের প্রস্তুত করুন। তারপর ডাকুন।”
বিচারপতির এই বক্তব্যের পরই ইডি হিসেব দেয়, গত কয়েক মাসে তারা ঠিক কী কী পেয়েছে তদন্তে। আইনজীবী উল্লেখ করেন, গত ১৫ মাসে ৫০ কোটি টাকা, ৫ কোটি টাকার সোনা, ৭১.৮ কোটি টাকার সম্পত্তি উদ্ধার করা হয়েছে। ১২৬ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আইনজীবীর কথায়, দেশের ইতিহাসে এত টাকা কখনও বাজেয়াপ্ত করেনি ইডি। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়, কুন্তল ঘোষ, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র সহ প্রভাবশালীদের গ্রেফতার করার কথাও উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় সংস্থা। ইডি আরও জানায়, মামলাকারী অর্থাৎ অভিষেককে আগেই সমন পাঠানো হয়েছিল। তিনি সন্দেহভাজনের তালিকায় আছেন বলেও দাবি করে ইডি।
এ কথা শুনে বিচারপতি সেন বলেন, সমনে আমাদের আপত্তি নেই। ইডির হাতে তদন্ত স্বচ্ছ করার ক্ষমতা হাতে আছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এরপরই আইনজীবী ধীরজ ত্রিবেদী বলেন, ইডি খুব ভাল কাজ করছে। সংস্থার অফিসাররা দিন-রাত এক করে কাজ করছেন।