কলকাতা: আচার্য-শিক্ষামন্ত্রী সংঘাত চরমে। বৈধতা তথা এক্তিয়ার বুঝিয়ে একেবারে সরাসরি রাজভবনকে চিঠি দিল শিক্ষা দফতর। রাজভবনের তরফে জারি করা সাম্প্রতিক নির্দেশিকাকে কার্যত অবৈধ বলে উল্লেখ করেছে রাজ্য। কড়া বার্তা দিয়ে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে যে ওই নির্দেশিকা দেওয়া উচিত হয়নি রাজভবনের। গত ২ সেপ্টেম্বর রাজভবনের তরফে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে যে আচার্যর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ অধিকর্তা উপাচার্য। তিনি নির্দেশ দিলে সেটাই হবে শেষ কথা। অর্থাৎ শিক্ষা দফতরের ভূমিকা এ ক্ষেত্রে নেই বলেই উল্লেখ করা হয়েছে। আর সোমবার শিক্ষা দফতর স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, সেই চিঠির বৈধতা নেই। শিক্ষা দফতরের সঙ্গে কথা না বলে এ ধরনের নির্দেশ দেওয়া যায় না। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকেও এই একই বার্তা দিয়েছে রাজ্য সরকার।
প্রথমত রবিবার রাতে আচমকাই ১৬টি বিশ্ববদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করেন আচার্য সি ভি আনন্দ বোস। সে ক্ষেত্রে শিক্ষা দফতরের সঙ্গে আলোচনা না করার অভিযোগ তো ছিলই। তার মধ্যে রাজভবনের জারি করা নির্দেশিকা সেই বিতর্কে ঘৃতাহুতি দেয়। তৈরি হয় নতুন সংঘাতের পরিস্থিতি।
রাজভবনের সিনিয়র স্পেশাল সেক্রেটারিকে লেখা চিঠিতে শিক্ষা দফতর উল্লেখ করেছে, ওই নির্দেশিকা শিক্ষা দফতরের মাধ্যমে দেওয়া হয়নি, জানানোও হয়নি। এমনকী শিক্ষা দফতরের কোনও অনুমোদনও নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। রাজ্যের প্রায় সবকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়েছে যে কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনেই আচার্যের এই ক্ষমতার কথা বলা নেই। তাই এই নির্দেশিকাকে বৈধ বলতে রাজি নয় শিক্ষা দফতর। অর্থাৎ রাজ্যের নির্দেশ যে মানতে হবে, তা কড়া ভাষায় বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে রাজভবন-শিক্ষা দফতর সংঘাত এখন অনেকটাই চেনা ছবি। বারবার এমন সংঘাতের চিত্র উদ্বেগ তৈরি করেছে শিক্ষা মহলে। পঠন-পাঠনে প্রভাব পড়ছে বলেও উল্লেখ করেছেন শিক্ষাবিদরা। উল্লেখ্য, উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে নিজে উপাচার্য হিসেবে কাজ করবেন বলে জানিয়েছিলেন আচার্য। সেই সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। যদিও সেই সব শূন্যপদেও নিয়োগ করেছেন রাজ্যপাল।