কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে (Recruitment Scam) গ্রেফতার সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’র (Kalighater Kaku) বিষয়ে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য উঠে আসছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার (Enforcement Directorate) হাতে। উঠে আসছে হাওয়ালা যোগের তত্ত্বও। হাওয়ালার মাধ্যমে ১১ কোটি টাকা ‘কাকুর’ সংস্থায় ঢুকেছে বলে দাবি ইডির। বুধবার আদালতে সুজয়কৃষ্ণের আইনজীবী সেলিম রহমান তাঁর মক্কেলের অন্তর্বর্তী জামিনের জন্য আবেদন করেন। সেই জামিনের বিরোধিতা করে ইডির আইনজীবী আদালতে জানান, অভিযুক্তর বিষয়ে কী কী তথ্য তদন্তকারী সংস্থার হাতে উঠে এসেছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবীর বক্তব্য, ‘ওঁরা বলছেন যে আমরা নাকি কিছুই পাইনি। কিন্তু রিকভারি মানে শুধু ক্যাশ উদ্ধার নয়।’
এরপরই কী কী তথ্য ইডির হাতে উঠে এসেছে, সেই বিষয়ে আদালতে বিস্তারিত জানান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী। বললেন, ‘আমরা মানি ট্রেল খুঁজে পেয়েছি। ১০০ টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট পাওয়া গিয়েছে। হাওয়ালার মাধ্যমে সংস্থায় টাকা ঢুকেছে, যার কন্ট্রোল ছিল অভিযুক্তর হাতে।’ ইডির আইনজীবীর দাবি, এমন চারটি সংস্থার নিয়ন্ত্রণ ছিল ‘কাকুর’ হাতে। তার মধ্যে ওয়েল্থ উইজ়ার্ড নামে একটি সংস্থায় ১০ কোটি টাকা ঢুকেছে বলে আদালতে জানান ইডির আইনজীবী। এছাড়া আরও একটি সংস্থায় ১ কোটি টাকা ঢুকেছে বলে কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তে উঠে এসেছে। পাশাপাশি ৮০ কাঠা জমি কেনা হয়েছে এবং নির্মাণ সংস্থার কাজও করা হয়েছে। আর এই সবই দুর্নীতির টাকায় হয়েছে বলে সন্দেহ গোয়েন্দাদের। ইডির দাবি, যে ১০০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, সেগুলির মাধ্যমেই হাওয়ালার টাকা ঘোরানো হয়েছে।
এর পাশাপাশি, কালীঘাটের কাকুর ফোন থেকেও বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে। ইডির দাবি, তাঁর সঙ্গে সিভিক ভলান্টিয়ার রাহুল বেরার কথাবার্তা রেকর্ড করা হয়েছে। সেখানে শোনা যাচ্ছে, সুজয়কৃষ্ণ রাহুলকে বলছেন, তাঁর ফোনে থাকা নিয়োগ সংক্রান্ত নথি নষ্ট করে দেওয়ার জন্য। প্রমাণ লোপাট করার জন্য। সেই কারণে কাকুর ভয়েস স্যাম্পেল নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে ইডি। ফোন করে নিয়োগ সংক্রান্ত নথি নষ্ট করে দেওয়ার যে কথা বলা হচ্ছে, সেটি যাচাই করে দেখতে ভয়েস স্যাম্পেল পরীক্ষা করাতে চায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। পাশাপাশি ‘কাকু’কে জেলে গিয়েও জেরা করতে চান কেন্দ্রীয় সংস্থার অফিসাররা। সুজয়কৃষ্ণের সঙ্গে জেলে কে বা কারা দেখা করতে যাচ্ছে, তার উপরেও নজর রাখতে চায় ইডি। সেই কারণে জেলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে রাখারও আবেদন জানিয়েছে।