কলকাতা: আকাশপথে জেলায় জেলায় বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনের পর নবান্নে (Nabanna) জরুরি বৈঠকে বসবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। শনিবার দুপুর তিনটেয় নবান্নে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক রয়েছে। মূলত বন্যা পরিস্থিতি নিয়েই সেখানে আলোচনা হবে। রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর উপস্থিতিতে এই বৈঠকে থাকবেন সমস্ত জেলাশাসক এবং সব দফতরের প্রধান সচিবরা।
শনিবার দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরই মাঝে হুগলির আরামবাগে প্রসাশনিক বৈঠকও করার কথা রয়েছেন তাঁর। আরামবাগের পল্লীশ্রী এলাকায় মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার নামার জন্য তৈরি হয়েছে হেলিপ্যাড। মুখ্যমন্ত্রী জামালপুরে হেলিকপ্টার থেকে নেমে প্রসাশনিক বৈঠকে যোগ দেবেন বলে এখনও পর্যন্ত জানা গিয়েছে। পাশাপাশি পল্লীশ্রীর পাশে কালীপুর এলাকায় ত্রাণ শিবিরে বন্যা দুর্গত মানুষের সঙ্গে তিনি কথাও বলতে পারেন বলে প্রসাশনিক সূত্রে খবর।
ইতিমধ্যেই হেলিপ্যাডের স্থান পরিদর্শন করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা, বিধায়করা। বিধায়ক তপন দাশগুপ্ত জানান, মুখ্যমন্ত্রী এখানে নেমে প্রসাশনিক বৈঠকের পাশাপাশি বন্যা দুর্গতদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন।
শুক্রবারই এই বন্যা পরিস্থিতিকে ম্যান মেড বলে আখ্যা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি হলেই ডিভিসি ইচ্ছামতো জল ছাড়তে শুরু করে। তার জেরে প্লাবিত হয় বাংলা। রাজ্যকে কিছু না জানিয়ে মাঝ রাতে ডিভিসি জল ছেড়ে দেয় বলেও অভিযো করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “এই জল ছাড়ার কারণে আসানসোল ডুবেছে। বাঁকুড়া, পুরুলিয়াতেও একই অবস্থা। ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি হলে আমাদের ভুগতে হয়, বিহারে বৃষ্টি হলে আমাদের ভুগতে হয়। আমি বার বার প্রতিবাদ করছি। তবু ডিভিসি ওদের কাজ করে যাচ্ছে।”
যদিও এ নিয়ে বিরোধীরা মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। কংগ্রেস-বিজেপি এককাট্টা এ ক্ষেত্রে। তাদের দাবি, ডিভিসি কোনও ভাবেই রাজ্যকে না জানিয়ে জল ছাড়তে পারে না। এ বিষয়ে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, “উনি বরাবর একই রেকর্ড চালান। নিজেরা দশ বছর আছেন, কিন্তু এখনও বাঁধের মেরামতি করে উঠতে পারেননি। খালি দোষারোপ করে যান। কেন্দ্রীয় সরকার কেলেঘাই নদীর বাঁধ নির্মাণের জন্য তিন হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। সেগুলি কী লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে চলে গিয়েছে?”
* জল ছাড়ার পরিমাণ আরও কিছুটা কমাল দুর্গাপুর ব্যারেজ
দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ আরও কিছুটা কমানো হল। শনিবার সকালে ১,৫৫,৪০০ কিউসেক জল ছাড়া হচ্ছিল। বেলা বাড়তে তা আরও কিছুটা কমিয়ে ১,৪৬,৪০০ কিউসেক করা হয়। নতুন করে বৃষ্টি না হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত। সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃষ্টি না হলে ধীরে ধীরে আরও কমানো হবে জল ছাড়ার পরিমাণ।
আরও পড়ুন: WB Flood Situation: বৃষ্টি থেমেছে, জল ছাড়ার পরিমাণও কিছুটা কমাল দুর্গাপুর ব্যারেজ