কলকাতা: কোন স্কুল ভাল, কোন স্কুল খুব একটা ভাল নয়, সেই মূল্যায়ন করে এবার গ্রেড দেওয়া হবে সরকারি স্কুলগুলিকে। মূলত উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের ক্ষেত্রেই এবার মূল্যায়ন করবে শিক্ষা দফতর। স্কুলগুলিকে ভাগ করা হবে গ্রেড অনুযায়ী। সম্প্রতি এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিকাশ ভবন। কোন কোন সূচকে স্কুলগুলির মূল্যায়ন করা হবে, তা ঠিক করবে পাঁচ সদস্যের বিশেষ কমিটি। জানা গিয়েছে, কেন্দ্র যে জাতীয় শিক্ষানীতি তৈরি করেছে, তার অন্যতম অংশ এই স্কুলের মূল্যায়ন। যদি রাজ্য সরকার সেই শিক্ষানীতি কার্যকর করেনি, তবে এই অংশটা কার্যত রাজ্য মেনে নিয়েছে বলেই মনে করছে শিক্ষাবিদদের একাংশ। এভাবে গ্রেড দেওয়া হলে, পিছনের সারিতে যে স্কুলগুলি থাকবে, সেগুলোতে কি পড়ুয়াদের পাঠাতে চাইবেন অভিভাবকরা? কী হবে সেই স্কুলগুলির ভবিষ্যৎ? সেই প্রশ্ন সামনে আসছে।
পরিকাঠামো, স্কুলের পড়ুয়াদের ফলাফল, পঠন পাঠনের মান সহ একাধিক গ্রেড দেওয়া হবে স্কুলগুলিকে। ঠিক হবে, কোন স্কুল এগিয়ে, কোন স্কুল পিছিয়ে। ইতিমধ্যেই পাঁচ সদস্যের কমিটি স্কুলগুলোর মূল্যায়নের সূচক নির্ধারণ করেছে বলে সূত্রের খবর। দ্রুত বিকাশ ভবনে জমা পড়বে সেই সূচক সংক্রান্ত চূড়ান্ত রিপোর্ট।
রাজ্য সরকারের শিক্ষা দফতর যখন দুর্নীতির প্রশ্নে কার্যত কোণঠাসা, তখন এই উদ্যোগে বিরোধিতা করেছে শিক্ষাবিদদের একাংশ। শিক্ষাবিদ দেবাশিস সরকার এই প্রসঙ্গে বলেন, দুর্নীতিতে অভিযুক্ত শিক্ষা দফতর আগে শিক্ষক নিয়োগ করে স্কুলগুলোকে ঠিক করুক, তারপর মূল্যায়ন করবে। তাঁর প্রশ্ন, যে দফতরের মান নিয়েই প্রশ্ন আছে, তারা স্কুলের মান ঠিক করবে কোন মাপকাঠিতে?
অন্য়দিকে, শিক্ষাবিদদের আর এক অংশের আশঙ্কা ‘গ্রেডেশন’ করা হলে নীচের সারির স্কুলের প্রতি আগ্রহ কমবে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপিকা নন্দিনী মুখোপাধ্যায়ের মতে, স্কুলের গ্রেডেশন কখনও হওয়া উচিত নয়। তিনি মনে করেন, স্কুলের পারিপার্শ্বিক পরিবেশের ওপরেও অনেক সময় মান নির্ভর করে, তাই তা মূল্যায়ন করা কঠিন। এভাবে আদতে স্কুলগুলি বেসরকারিকরণে পথে হাঁটবে বলেও আশঙ্কা শিক্ষাবিদের। তবে বিকাশ ভবন মনে করছে, ‘এভাবে স্কুলগুলির মধ্যে হেলদি কম্পিটিশন হলে স্কুলগুলোর উন্নতিই হবে।’