কলকাতা: ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ বয়কট করার দাবিতে উত্তাল আইনজীবী মহল। তারই মধ্যে আজ ছিল ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার শুনানি। আর সেই শুনানিতে মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট পড়ার জন্য আরও বেশি সময় চাইল রাজ্য। কিন্তু ৩১ জুলাইয়ের পর আর সময় দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দিল হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ। এ দিকে মানবাধিকার কমিশনের তরফে অভিযোগ, অনেক জায়গায় মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে পুলিশ। ২ অগস্ট ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে।
এই মামলায় আগেই হলফনামা জমা দিয়েছিল রাজ্য। বুধবার এই মামলার শুনানিতে রাজ্য অতিরিক্ত হলফনামা জমা দেওয়ার আর্জি জানায়। রাজ্য সরকারের দাবি, মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট আরও বেশি সময় ধরতে পড়তে হবে। সেই রিপোর্ট পড়ে ফের হলফনামা জমা দেবে রাজ্য। এই প্রসঙ্গে মৃত অভিজিৎ সরকারের আইনজীবী মহেশ জেঠমালানি বলেন, ‘কেন অতিরিক্ত সময় চাইছে রাজ্য? সময় দিলে প্রমাণ নষ্ট হয়ে যাবে। পুলিশ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। রাজ্য তাদের উত্তর জানিয়ে দিয়েছে। তাহলে কেন সময় দেওয়া হবে? অন্যদিকে, মামলাকারী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল জানান, এই মামলায় ‘সিট’ গঠনের প্রয়োজন আছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বৃহত্তর বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, ‘অতিরিক্ত হলফনামা জমা দেওয়ার জন্য রাজ্যকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত সময় দেওয়া হবে। এর বেশি সময় দেওয়া হবে না।’
মানবাধিকার কমিশনের আইনজীবী সুবীর স্যান্যাল এ দিন আদালতে বলেন, ‘রিপোর্ট জমা পড়ার পরেও অনেক অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৬ টি এমন অভিযোগ রয়েছে যেখানে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে পুলিশ বা এলাকার নেতারা।’ এই নিয়ে অতিরিক্ত রিপোর্ট দিতে চায় মানবাধিকার কমিশন। কিন্তু তা বৃহত্তর বেঞ্চ সেই অনুমতি দেয়নি। এ দিন মৃত অভিজিৎ সরকারের ডিএনএ রিপোর্ট আদালতে পেশ করেন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ওয়াই জে দস্তুর। ভোট পরবর্তী হিংসায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।
অন্যদিকে, ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির এজলাস বয়কট করার দাবি তুলেছেন আইনজীবীরা। আজ প্রচুর আইনজীবী ভিড় করেন আদালতে। তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির এজলাশে হওয়া সব মামলাই বয়কট করা হবে। এই আইনজীবীদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন, যাঁরা ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় সওয়াল করছেন। তাই মামলার শুনানি হবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। আইনজীবী সপ্তাংশু বসু জানান তিনি তৃণমূল নেতা পার্থ ভৌমিক ও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের হয়ে সওয়াল করছেন। তবে তাঁরা চেয়েছিলেন সোমবার পর্যন্ত মামলা স্থগিত রাখা হোক। যদিও জনস্বার্থ মামলাকারী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল বলেন, ‘তিন মাস ধরে রাজ্যের মানুষ ভোট পরবর্তী হিংসায় ভুগছে, তাদেন জন্য এই শুনানি অত্যন্ত জরুরি।’ আরও পড়ুন: দুটি বাইকে চার জন, এটাই গ্যাং! শহরের বুকে সাতসকালে ছিনতাইবাজরা এখন পুলিশের জালে