কলকাতা : সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে করোনা বিধি লাগু হয়েছে রাজ্যে। রবিবার ঘোষণা হয়েছে একগুচ্ছ নতুন বিধি-নিষেধ। আবার বন্ধ হয়েছে স্কুল-কলেজ, আংশিক বন্ধ লোকাল ট্রেনও। কিন্তু, মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়া প্রার্থীর পিছনে যে বিপুল জনসমাগম দেখা গেল, তা থেকেই প্রশ্ন উঠছে করোনা কি শুধুই স্কুল-কলেজ আর লোকাল ট্রেনে? সাধারণ মানুষকে নিয়ে যখন প্রশাসন উদ্বেগ প্রকাশ করছে, তখন খোদ প্রার্থীর মুখে নেই মাস্ক। এমনই ছবি দেখা গেল বিধাননগরে। তৃণমূল প্রার্থী জয়দেব নস্করের সঙ্গে হাজির প্রচুর কর্মী-সমর্থক।
সোমবার ছিল মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। সব্যসাচী দত্ত সহ একাধিক প্রার্থী এ দিন মনোনয়ন জমা দেন। ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী জয়দেব নস্করের মুখে নেই মাস্ক। অধিকাংশই কর্মী-সমর্থকেরই দূরত্ব বিধি এবং মাস্কের বালাই নেই। সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে দিলেন অজুহাত।
প্রার্থীর দাবি, তিনি কাউকে আসতে বলেননি। তাঁর পিছনে এসে হাজির হয়েছেন সমর্থকরা। তাঁর দাবি, তাঁর সঙ্গে এসেছেন মাত্র ৭ জন। আর পিছনে স্লোগান দিতে শুরু করেছেন কর্মী সমর্থকেরা। ১১ বছর ধরে তিনি বিধাননগরের যুব তৃণমূল কংগ্রেস করছেন। তাই তাঁর ব্যাপক জন সমর্থন রয়েছে। প্রার্থী বলেন, ‘আজ আমি যখন গাড়ি থেকে নেমেছি, তখন প্রচুর কর্মী আমার পিছনে স্লোগান দিতে শুরু করে। আমি বিধাননগরের যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি। মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত হয়ে আমার সঙ্গে এসেছেন।’
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মীরাতুন নাহারের কথায়, এসব শুধু রাজনৈতিক ছল। তিনি বলেন, ‘ভাইরাস নিয়ন্ত্রণের জন্য কেবলমাত্র সমাবেশ করা যাবে না। রোজগারে বেরনো যাবে না। মানুষ দৈনন্দিন রুটি রুজি জোগাড় করতে পারবে না। স্কুল কলেজ বন্ধ থাকবে।’ তাঁর কথায়, ‘এখন সরকার বলে কিছু নেই, এখন রয়েছে শাসক দল। আর তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেওয়া। মানুষ যাতে এক জায়গায় জড় হতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করা।’ মীরাতুন নাহার মনে করেন, এটা আসলে সরকারের একটা ছল। এ ভাবে নিজেদের বল বৃদ্ধি করতে চায় তারা।
করোনাকালে পুরভোট নিয়ে আগেই আপত্তি জানিয়েছে বিজেপি। এদিনের মনোনয়ন জমা দেওয়ার ভিড় দেখে বিজেপি নেতা সমীক ভট্টাচার্য বলেন, এটাই স্বাভাবিক। রাজ্য সরকার করোনার নতুন সংক্রমণে ঢেউ আমন্ত্রণ জানিয়ে এনেছে। তাই মাস্ক পরাটাই অস্বাভাবিক।
সোমবার তৃণমূলের ৩৩ জন প্রার্থী নমিনেশন জমা দিতে যান মহকুমাশাসকের দফতরে। মিছিল না করলেও এদিন মহকুমা শাসকের দফতর চত্বর ছিল তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের দখলে। যদিও, এই প্রসঙ্গে প্রাক্তন মেয়র তথা ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী রাম চক্রবর্তীর বক্তব্য তাঁরা করোনার কারণেই কোনও লোক সঙ্গে করে নিয়ে আসেননি। তবে অতি উৎসাহী সর্মথকরা যদি নিজেরা চলে আসে তাহলে তাঁদের কিছুব করার নেই।
আরও পড়ুন : Municipality Election: নমিনেশন জমা দিতে মহকুমা শাসকের অফিসের বাইরে ভিড় ঘাসফুল সমর্থকদের! কোথায় করোনাবিধি ?