কলকাতা: কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও অসহযোগিতা করেছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশন, বাহিনী মোতায়েনও করা হয়নি সঠিকভাবে। প্রাথমিক অভিযোগ শুনে এমনটাই বললেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম। কমিশন সম্পর্কে সিআরপিএফ কী রিপোর্ট দিয়েছে, তার প্রতিটি ছত্রও পড়তে বললেন কমিশনকে। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আপনাদের বিরুদ্ধে সিরিয়াস অভিযোগ রয়েছে।’ আদালত নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও কেন সঠিকভাবে বাহিনী মোতায়েন করা হল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেই আদালত অবমাননার মামলা করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই মামলায় বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘লার্জ স্কেল ভায়োলেন্স হয়েছে, এটা মানতেই হবে।’
বাহিনীকে ব্যবহার না করে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে, এমন অভিযোগও উঠেছে কমিশনের বিরুদ্ধে। প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, কেন্দ্র ও রাজ্যকে এক ছাতার তলায় কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই ছাতা ভাগ করতে চায়নি কমিশন। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে আইনজীবী যীষ্ণু সাহা জানিয়েছেন, নোডাল অফিসারের উপর দায়িত্ব ছিল।
তবে নির্দেশিকা যে কমিশন গ্রাহ্য করেনি, সে কথা উল্লেখ করেন প্রধান বিচারপতি। তাঁর বক্তব্য, নির্দেশ না মেনে শীর্ষ আদালতে চলে গিয়েছিল কমিশন। আগে নির্দেশ মানা উচিত ছিল বলে মনে করেন তিনি। কমিশনকে প্রধান বিচারপতি বলেন, সিআরপিএফ রিপোর্টে সিরিয়াস অভিযোগ এসেছে। প্রতিটা লাইন পড়ুন। বেশ কিছু লাইন আপনাদের জন্য খুব খারাপ। ইচ্ছাকৃত অসহযোগিতার অভিযোগ যে স্পষ্ট, তেমনটাই মনে করেন প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানম।
প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, কী কাজ করেছেন? সাধারণ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন, বোমাবাজি চলেছে, মারধরের ঘটনা ঘটেছে একথা উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে স্পর্শকাতর বুথের তালিকাই দেয়নি কমিশন। হাইকোর্ট মনে করছে, কমিশন কেন্দ্রের কাছে আরও অফিসার চাইতে পারত।
আরও ১০ দিন রাজ্যে বাহিনী মোতায়েন থাকার কথা। সে ক্ষেত্রে কী পরিকল্পনা হবে, তা আইজি বিএসএফ-কে ঠিক করতে বলেছেন বিচারপতি। তিনি বলেন, ডিজি, কমিশনার সবাই সহযোগিতা না করে রাস্তা চিনবেন কীভাবে? তাই সহযোগিতার কথা বলা হচ্ছে। বড়মাপের হিংসার ঘটনা যে ঘটেছে, তা মানতে হবে। বিচারপতির মন্তব্য়, আমরা আশা করব কমিশনের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এসেছে তা নিয়ে সঠিক জবাব দেওয়া হবে।