কলকাতা: ৫৫ দিন ধরে যেভাবে বেপাত্তা ছিলেন শেখ শাহজাহান, তাতেই পুলিশের বিরুদ্ধে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্ট বলেছে, শেখ শাহজাহানকে আড়াল করার জন্য তদন্ত নিয়ে রাজ্য পুলিশ লুকোচুরি খেলেছে। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের পর এবার বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের বেঞ্চও একই পর্যবেক্ষণ দিল সন্দেশখালি মামলায়। মঙ্গলবার হাইকোর্ট নির্দেশ দেওয়ার পর সিবিআই-এর হাতে তুলে দেওয়া হয়নি শেখ শাহজাহানকে। সন্দেশখালি সংক্রান্ত কোনও মামলাও হস্তান্তর করা হয়নি। এরপরই আদালত অবমাননার মামলা করেছে ইডি। ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, শাহজাহানকে হস্তান্তরে আর সময় দেওয়া যাবে না।
বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি ছিল বুধবার। সেখানে প্রধান বিচারপতির নির্দেশই বহাল রাখা হয়েছে। অর্থাৎ অবিলম্বে শাহজাহানকে সিবিআই-এর হাতে তুলে দিতে হবে। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি বিকেল সাড়ে ৪টে পর্যন্ত সময় দিয়েছিলেন। এরপর সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। হস্তান্তর না করার ক্ষেত্রেও সেটাই ছিল যুক্তি। তবে রাজ্যকে আর সময় দিতে নারাজ হাইকোর্ট। বুধবার বিকেল ৪টে ১৫ পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।
কাল শীর্ষ আদালতে মামলার শুনানি হওয়া পর্যন্ত সময় চায় রাজ্য। তবে হাইকোর্টের নির্দেশ, দ্রুত প্রধান বিচারপতির নির্দেশ কার্যকর করতে হবে। হাইকোর্ট উল্লেখ করেছে, যেখানে অভিযুক্তকে গ্রেফতারের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে, সেখানে ওই নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়ার কোনও কারণ নেই।
ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, সিবিআই-এর হাতে শেখ শাহজাহানকে হস্তান্তর না করে রাজ্যের এই লুকোচুরির আচরণ ওই অভিযুক্তকে আড়াল করার চেষ্টা। যেখানে গোটা তদন্ত সিবিআই করবে, সেখানে শাহযাহানকে হস্তান্তর না করা রাজ্যের সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন মন্তব্য করেন, শীর্ষ আদালতে আর্জি মানেই হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশ নয়।
সিবিআই এদিন জানিয়েছে, অভিযুক্ত এবং ডকুমেন্টস কিছুই দেওয়া হয়নি তাদের। সিআইডি মেইল করে জানিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টে মামলা বিচারাধীন থাকা পর্যন্ত শেখ শাহজাহানকে হস্তান্তর করা হবে না। কেন্দ্রীয় সংস্থার দাবি, এভাবেই তদন্ত বিলম্বিত করা হচ্ছে।
রাজ্যের তরফে এজি কিশোর দত্ত জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বিকেলে রায় আপলোড হওয়ার পর রাজ্য আবেদন করে সুপ্রিম কোর্টে। যা যা হয়েছে সবটাই আইনি প্রক্রিয়া মেনে হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। তাঁর দাবি, মামলা আগামিকাল শোনা হোক। তবে সেই সময় দিতে রাজি হয়নি আদালত। এদিন শাহজাহানকে হস্তান্তর না করা হলে আদালতে জানাবে ইডি।