কলকাতা: আচার্য তথা রাজ্যপাল একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করায় প্রথম থেকেই প্রশ্ন তুলেছিল রাজ্য সরকার। উপাচার্যদের নিয়োগ বৈধ বলে না মানার পাশাপাশি তাঁদের বেতন বন্ধ করার নির্দেশও দিয়েছিল শিক্ষা দফতর। কিন্তু রাজ্যের দাবি খারিজ করে সেই নিয়োগ বৈধ বলে রায় দিয়েছে হাইকোর্ট। ফলে আর কোনও জটিলতা রইল না। এই রায়ে স্বস্তি ফিরেছে সংশ্লিষ্ট উপাচার্যদের। তবে শিক্ষাবিদরা মনে করছেন, সরকারের প্রথম থেকেই জানা উচিত ছিল যে আচার্যই সর্বোচ্চ নিয়োগ কর্তা।
শিক্ষাবিদ নৃসিংহ প্রসাদ ভাদুড়ির মতে, একটা সাধারণ বিষয় নিয়ে অযথা জটিলতা তৈরি করা হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, সার্চ কমিটি তৈরি করে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। ফলে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য পদ খালি ছিল। সে ক্ষেত্রে আচার্য অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করতেই পারেন। তিনি বলেন, “স্থায়ী উপাচার্য তো নিয়োগ করা হয়নি। তাহলে আলোচনার প্রশ্ন উঠত। তাই যিনি মামলা করলেন, তাঁর ভাবা উচিত ছিল। শিক্ষামন্ত্রী বুদ্ধিমান মানুষ। তিনি একটু কথা বললেই সমস্যা সমাধান করতে পারবেন।”
শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকারও উল্লেখ করেন আচার্যই সর্বোচ্চ নিয়োগ কর্তা। তিনি বলেন, “যাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন জানেন, তাঁরা জানেন যে রাজ্যপাল তথা আচার্যই সর্বোচ্চ নিয়োগ কর্তা। এটা সরকারেরও জানা উচিত ছিল। শিক্ষামন্ত্রীর জানা উচিত ছিল। কিন্তু এটা দুর্ভাগ্যজনক যে এই নিয়ে একটা সংঘাত তৈরি হল।” বেতন বন্ধ করে দেওয়াটাও সঙ্গত হয়নি বলে মনে করেন তিনি।
বুধবারই উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। আর বুধবারই আদালত রায় দেয় যে রাজ্যপালের উপাচার্য নিয়োগ বৈধ। এদিন বৈঠক শেষে উপাচার্যরা বলেন, পড়ুয়াদের স্বার্থেই কাজ করছি, সেটাই করব। সিধু কানহু বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ধনঞ্জয় রক্ষিত বলেন, “সত্যের জয় হয়েছে। তবে আমরা আগেও উদ্বেগে ছিলাম না, এখনও নেই। আমি মনে করি ছাত্র স্বার্থে কাজ করতে কোনও অসুবিধা হবে না।” বাবা সাহেব আম্বেদকর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোমা বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেন, “আদালতের রায় সবার কাছেই গ্রহণযোগ্য।” বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নই যে আচার্যর মূল লক্ষ্য, তেমনটাই উল্লেখ করেছেন তিনি।