কলকাতা : করোনা আবহে পড়ুয়াদের পরীক্ষা ও মূল্যায়ণ ব্য়বস্থায় আমূল পরিবর্তন এসেছে। করোনা পরবর্তী পরিস্থিতি বাড়ি বসেই পরীক্ষা দিতে দেখা গিয়েছে। এবার করোনা-কালে আরও একগুচ্ছ নতুন নিয়ম আনছে আইসিএসসি এবং আইএসসি বোর্ড। দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা হবে এবার একেবারে নতুন আঙ্গিকে।
প্রথম সেমেস্টারের পরীক্ষা নিতে হবে নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে। পড়ুয়ারা তাঁদের অভিভাবক ইচ্ছেমতো স্কুলে এসে বা বাড়ি থেকে পরীক্ষা দিতে পারবে। পড়ুয়ারা কোথায় বসে পরীক্ষা দেবে, সেই সংক্রান্ত তথ্য ১৮ অক্টোবরের মধ্যে স্কুলগুলিকে পাঠাতে হবে। এছাড়া প্রক্টর, বাফার প্রক্টর ও আইটি সাপোর্ট এক্সিকিউটিভের নাম স্কুলগুলিকে ১২ অক্টোবরের মধ্যে বোর্ডকে পাঠাতে হবে।
নতুন নির্দেশিকায় বলা হয়েছে পরীক্ষার জন্য ১:২৫ অনুপাতে প্রক্টর রাখতে হবে স্কুলগুলিকে। অর্থাৎ, অনলাইন পরীক্ষায় প্রতি ২৫ জন পরীক্ষার্থী পিছু একজন করে শিক্ষক গার্ড দেবেন। পাশাপাশি সর্বোচ্চ তিন জন বাফার প্রক্টর থাকবেন।
অনলাইন পরীক্ষার ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীদের ডিভাইসের ক্যামেরা চালু রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পড়ুয়াদের যাতে আপদমস্তক ক্যামেরায় দেখা যায়, তা নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার প্রক্টরকে। পরীক্ষার্থী যেখানে বসে পরীক্ষা দিচ্ছে, সেখান থেকে অন্যত্র যাচ্ছে কি না অথবা ওই ঘরে অন্য কেউ আসা যাওয়া করছে কিনা, পরীক্ষার্থী কতবার তার সিট ছেড়ে উঠছে… সেই সবের উপর কড়া নজর রাখবেন প্রক্টররা।
শুধু তাই নয়, প্রক্টররা কীভাবে পরীক্ষায় গার্ড দিচ্ছেন, তার জন্যও থাকবে বিশেষ নজরদারি। অর্থাৎ, নজরদারির আওতায় শুধু পরীক্ষার্থীরাই নয়, যে শিক্ষক পরীক্ষায় গার্ড দিচ্ছেন, তিনি কতটা কড়াভাবে গার্ড দিচ্ছেন, সেই সবই নজরে রাখা হবে।
আইএসসিই বোর্ডের সচিব জেরি অ্যারাথুন অবশ্য জানিয়েছেন, ‘‘বোর্ডের এই দুই পরীক্ষা (দশম ও দ্বাদশ শ্রেণি) সর্বভারতীয় স্তরে হয়। উদ্ভুত করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই বাড়ি বসে অনলাইন পরীক্ষার কথা বলা হয়েছিল। নভেম্বরে কোন রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি কেমন থাকবে, তা এখনই বলা কঠিন। পুজোর পরে যদি স্কুল খোলে, সে ক্ষেত্রে অভিভাবকেরা চাইলে স্কুলে এসেও পরীক্ষার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।’’
এদিকে দিনকয়েক আগেই অনলাইন ক্লাস প্রাণ কেড়েছে এক পড়ুয়ার। অনলাইন ক্লাসে নেটওয়ার্ক ইস্যু কোনও নতুন ঘটনা নয়। অতিমারির পরিস্থিতিতে শিক্ষা ব্যবস্থা রাতারাতি বদলে যাওয়ার ফলে এ সব সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে প্রায় প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীকেই। সেই নেটওয়ার্কের সমস্যার জন্য শিক্ষকের বকুনি খেয়ে মানসিক অবসাদে আত্মঘাতী হয়েছে বেলঘরিয়ার ১১ বছরের স্কুলছাত্রী।
বাড়িতে বাবা মা’কে ক্লাস শেষের পর নিজের অসহায়তার কথাও জানিয়েছিল সে। তারপর মানসিক অবসাদে দুপুরেই আত্মঘাতী হয়েছিল ওই পড়ুয়া।
আরও পড়ুন : Suicide: পরীক্ষা দেওয়ার সময় নেটওয়ার্ক সমস্যা, এটাই অপরাধ! মায়ের শাড়ী গলায় জড়িয়ে আত্মঘাতী ছাত্রী