Jagdeep Dhankhar On Mamata Banerjee: ‘এখনও আমার প্রশ্নের কোনও উত্তর দেননি মমতা’, মুখ্যমন্ত্রীকে ফের খোঁচা রাজ্যপালের
Jagdeep Dhankhar On Mamata Banerjee: এরপর মুখ্যমন্ত্রী আরও স্পষ্ট করে বলেন, “একটা কথা স্পষ্ট, কেন্দ্র আমাদের যা গাইডলাইন দেয়, আমরা সেটা অনুসরণ করেই কাজ করি। আমাদের চলার পথটা যতই আলাদা হোক না কেন!”
কলকাতা: কনসালটেন্ট নিয়োগ নিয়ে ফের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে টুইটারে বিঁধলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। শুক্রবারই একটি টুইট করে রাজ্যপাল লিখেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর সামনে ভুল তথ্য তুলে ধরেছিলেন। সেই নিয়ে পাল্টা মুখ্যমন্ত্রীকেই প্রশ্ন করেন তিনি। শনিবার সকালে আরও একটি টুইট করেন রাজ্যপাল। তাতে তাঁর পাল্টা খোঁচা, কনসালটেন্ট নিয়োগ নিয়ে গত ২৮ ডিসেম্বরের প্রশ্নের এখনও মুখ্যমন্ত্রীর তরফে কোনও জবাব পাননি তিনি।
রাজ্যপালের আরও অভিযোগ, সংবিধানের ১৬ নম্বর ধারা ভেঙে অস্বচ্ছ নিয়োগ করা হয়েছে। নিয়োগ পদ্ধতির তথ্য দিতে ব্যর্থ মুখ্যসচিব।
No response @MamataOfficial on communication dated Dec 28 regarding recruitment #consultants gives credence to wide spread perception of extension of favoritism.
The mechanism is opaque, far from one being transparent and accountable under Article 16 of the Constitution pic.twitter.com/jVavXZkXeK
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) January 8, 2022
শনিবারের সকালের টুইটে তিনি লেখেন, রাজ্য সরকারি দফতরে কনসালট্যান্ট নিয়োগ নিয়ে ২৮ ডিসেম্বর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নোটিস পাঠালেও, তিনি কোনও উত্তর দেননি। সংবিধানের ১৬ নম্বর ধারা ভেঙে অস্বচ্ছ নিয়োগ হয়েছে। নিয়োগ পদ্ধতির তথ্য দিতে ব্যর্থ মুখ্যসচিবও।
চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থেকে প্রধানমন্ত্রীর সামনেই রাজ্যপালকে বিঁধেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যে কোভিড কালে অতিরিক্ত ডাক্তার নিয়োগ নিয়ে রিপোর্ট চেয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেই ইস্যুটিকে তুলে ধরেই প্রধানমন্ত্রীর সামনে রাজ্যপালকে জবাব দিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী যখন ‘নালিশ’ জানান, তখন ঘাড় নাড়িয়ে তাতে সম্মতি দিতেও দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে।
রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতিতে চিকিৎসক সঙ্কটের প্রসঙ্গ এদিন প্রধানমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “রাজ্যে চিকিৎসকের সঙ্কট রয়েছে। মেডিক্যালে কোটা আরও বাড়ানো প্রয়োজন। এখন কোভিডের সময় পরিস্থিতি আরও খারাপ। এক হাসপাতালের ৭৫ জন চিকিৎসক কোভি়ড আক্রান্ত। আমরা কী করব? কীভাবে পরিষেবা দেব? তাই আমাদের মেডিক্যাল সিট বাড়ানো সবচেয়ে প্রয়োজন।”
এরপরই আসেন আইএএস নিয়োগ ইস্যুতে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “চিকিৎসক সঙ্কট রাজ্যে একটি ইস্যু। আরেকটি ইস্যু হল আইএএস অফিসার সঙ্কট। রাজ্যপাল আমাকে প্রশ্ন করেন আমি কীভাবে নিয়োগ করেছি? তিনি আদৌ জানেন না, আমি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে নিয়োগ করেছি। অফিসার যদি না পাই তো আমি কী করব?”
এরপর মুখ্যমন্ত্রী আরও স্পষ্ট করে বলেন, “একটা কথা স্পষ্ট, কেন্দ্র আমাদের যা গাইডলাইন দেয়, আমরা সেটা অনুসরণ করেই কাজ করি। আমাদের চলার পথটা যতই আলাদা হোক না কেন!”
উল্লেখ্য, প্রত্যেকদিনই স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসকরা আক্রান্ত হচ্ছেন। চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীরা যেভাবে আক্রান্ত হচ্ছেন, তাতে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবাই রীতিমতো প্রশ্নের মুখে। যাঁরা কোভিডে আক্রান্ত হচ্ছেন বা হবেন, তাঁদের চিকিৎসা করবেন কে? সরকারি হাসপাতালগুলির চিকিৎসকরা প্রায় বেশিরভাগই আক্রান্ত। এই পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত চিকিৎসক নিয়ে রাজ্যপাল প্রশ্ন তোলায় ক্ষুব্ধ ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিশ্লেষকরা বলছেন, আজ মঞ্চও ছিল, ছিল সুযোগও। আর তারই সঠিক ব্যবহার করে প্রধানমন্ত্রীর সামনেই রাজ্যপাল প্রসঙ্গে উষ্মা প্রকাশ করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, বিভিন্ন দফতরে কনসালটেন্ট নিয়োগের জন্য গত মাসেই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল নবান্ন। রাজ্যের প্রায় ৪০টি দফতরে কনসালটেন্ট ও সিনিয়র কনসালটেন্ট নিয়োগের কথা। এই নিয়োগ কতটা যুক্তিযুক্ত, সেই প্রশ্ন তুলে মুখ্যসচিবকে তলব করেন রাজ্যপাল।
টুইটে রাজ্যপাল জানান, এক সপ্তাহের মধ্যে এই নিয়োগ সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য নিয়ে মুখ্যসচিবকে রাজভবনে যেতে হবে। স্বভাবতই রাজ্যপালের এই টুইট ঘিরে নতুন করে সংঘাতের আবহ তৈরি হল রাজ্য ও রাজভবনের মধ্যে।
তবে প্রধানমন্ত্রীর সামনে মুখ্যমন্ত্রীর এই ইস্যুকে বক্তব্যকে ‘ভুল তথ্য’ বলে অ্যাখ্যায়িত করেছেন রাজ্যপাল। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, কনসালটেন্ট নিয়োগ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সামনে ভুল তথ্য দিয়েছেন রাজ্যপাল। কনসালটেন্ট নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপাল-মুখ্যমন্ত্রী এই বাগযুদ্ধ যে এখানেই শেষ নয়, তা ভালই আঁচ করতে পারছেন বিশ্লেষকরা।
আরও পড়ুন: Kolkata Police COVID: কলকাতা পুলিশে জেট গতিতে বাড়ছে সংক্রমণ