কলকাতা: এক সপ্তাহ কাটতে চলল, কিন্তু জলপাইগুড়িতে শিশুদের অজানা জ্বর নিয়ে এখনও বিশেষ হেলদোল নেই স্বাস্থ্য ভবনের। অসুস্থ শতাধিক। এমনকি, মৃত্যুও হয়েছে একজনের। তা সত্ত্বেও কারণ অনুসন্ধানের জন্য কোনও বিশেষ টিম পাঠানো হয়নি সেই জেলায়। যা নিয়ে সরকারি চিকিৎসকদের একাংশই প্রশ্ন তুলতে শুরু করে দিয়েছেন। শিশুদের অসুস্থতা কেন যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না? প্রশ্ন উঠছে এই নিয়েও। বিতর্কের আরও কারণ রয়েছে। শিশুদের রোগ ম্যানেজমেন্টের জন্য যাঁকে নিয়োগ করা করা হয়েছে সেই সুশান্ত রায় একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ। যা নিয়ে কার্যত বিস্মিত একাংশের চিকিৎসকেরা। কেন স্বাস্থ্য ভবন এহেন সিদ্ধান্ত নিল তা নিয়েও ধন্দ চিকিৎসক মহলে।
জ্বর ছড়ানো শুরু হয়েছে, তারপর ৭ দিন সময় কেটেছে। কী কারণে এই জ্বর, কী ভাবে সেটা ছড়াচ্ছে, কিছুই চিহ্নিত করা যায়নি। সেই কারণেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে স্বাস্থ্য ভবনের ভূমিকা নিয়ে।
নানা মহলে এই নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর অবশ্য মঙ্গলবারই জানা যায়, স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে নমুনা আনানো হচ্ছে। এখানেও প্রশ্ন, সাত দিন পরে কেন নমুনা আনার কথা ভাবা হচ্ছে? আগে আনা হল না কেন? যদি নতুন ধরনের ওই ভাইরাস বা প্রজাতির উদ্রেক ঘটে, সে ক্ষেত্রে তা অনুসন্ধানের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারেরও সাহায্য দরকার। কিন্তু গোটা বিষয়টি নিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ পদক্ষেপ করা হয়নি বলেই জানাচ্ছেন একাংশের সরকারি চিকিৎসকেরা। প্রশ্ন উঠছে, উত্তরবঙ্গে রোগের প্রকোপের মোকাবিলায় পদক্ষেপ করার প্রশ্নে স্বাস্থ্য ভবন কি কুণ্ঠা বোধ করছে?
অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে, কমবয়সীদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে যে ধরনের ক্ষিপ্রতা প্রয়োজন, এ ক্ষেত্রে তেমনটা দেখানো হয়নি। ভুলে গেলে চলবে না, শিশুরোগ চিকিৎসায় উৎকর্ষ কেন্দ্র গড়ার জন্য রাজ্যের পরামর্শদাতা হিসাবে একটা দীর্ঘ সময় কাজ করছেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অরুণ সিংহ। জলপাইগুড়ি নিয়ে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত স্বাস্থ্য ভবনের তরফে কোনও রকম যোগাযোগ করা হয়নি। যিনি রাজ্যের শিশু চিকিৎসার পথপ্রদর্শক, এই সময় তাঁর পরামর্শ নেওয়া হবে না কেন?
আরও পড়ুন: দোতলা বাড়ির সমান হবে জলস্তর, সন্ধ্যা ৭টার পর কলকাতা-সহ ২ জেলার অবস্থা আরও ভয়াবহ
জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন ব্লকে গত এক সপ্তাহ ধরে শিশুদের মধ্যে এই জ্বরের প্রাদুর্ভাব দেখা গিয়েছে। শতাধিক শিশু জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি। ধুম জ্বর উঠে পড়ছে তাদের। প্রায় সংজ্ঞাহীনের মতো পড়ে রয়েছে তারা। জেলা হাসপাতালের পাশাপাশি গ্রামীণ হাসপাতালগুলিতেও এই উপসর্গের রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। শিশু হাসপাতালের উপরও রোগীর চাপ বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে শিশিমৃত্যুর জেরে মারাত্মক উদ্বেগ ছড়িয়েছে গোটা জেলায়।
আরও পড়ুন: WB Advocate General Resigned: রাজ্যপালের কাছে ইস্তফা দিলেন কিশোর দত্ত