Kaikhali Fire: আগুন লাগার পর ‘বাঁচাও বাঁচাও’ আর্তনাদ! খোঁজ নেই বৃদ্ধ নিরাপত্তা রক্ষীর, কৈখালির ‘জতুগৃহে’ দগ্ধ দেহ কার…
Body Found: স্থানীয় সূত্রে খবর, পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসার পর কারখানার ধ্বংসস্তূপের ভিতর যখন দমকলের কর্মীরা প্রবেশ করেন, ভিতরের একটি ঘরে একজনের দগ্ধ দেহ পড়ে থাকতে দেখেন।
কলকাতা: বছরের প্রথমদিনেই শহরে অগ্নিকাণ্ড। কৈখালির রঙের কারখানায় ভয়াবহ আগুন। সেই আগুনে দগ্ধ হয়ে একজনের মৃত্যুর খবরও নিশ্চিত করেছে দমকল আধিকারিকরা। রং কারখানার ভিতরে একটি ঘর থেকে দগ্ধ ওই দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এদিকে শনিবার সকালে আগুন লাগার পর থেকেই খোঁজ নেই রং কারখানার নিরাপত্তা রক্ষীর। তাঁর খোঁজও শুরু করেছে বিমানবন্দর থানার পুলিশ।
স্থানীয়রা জানান, রঙের এই কারখানায় সাত আটজন কাজ করেন। তাঁদের মধ্যেই একজনের এখনও খোঁজ নেই। এলাকার এক যুবক জানান, “বয়স্ক লোক উনি। নিরাপত্তা রক্ষীর কাজ করেন এখানে। মনে হচ্ছে উনি বেরোতে পারেননি।” প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, সকালে যখন আগুন লাগে ভয়ঙ্কর শব্দে কেঁপে ওঠে এলাকা। কারখানার ভিতর রাসায়নিক ভর্তি যে টিনগুলি ছিল, পর পর ফাটতে থাকে সেগুলি। সেই কারণেই বীভৎস শব্দ হয় এলাকাজুড়ে।
শনিবার সকাল ১১টা নাগাদ এই আগুন লাগে। দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন দ্রুত হারে ছড়িয়ে পড়ে কারখানায়। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় এলাকা। আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশের একটি গেঞ্জি কারখানাতেও। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিমানবন্দর থানার পুলিশ, দমকল বাহিনী ও এনডিআরএফ। পৌঁছে যান দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু। রাজারহাট-গোপালপুরের বিধায়ক অদিতি মুন্সিও যান সেখানে। চার ঘণ্টা পর দমকলের ১৮টি ইঞ্জিনের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু বলেন, “পুরনো কারখানা। এখানে নিয়ম নীতি কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। কেমিকেল কারখানায় আগুন ছিল, আমরা ফোম দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছি। পাশে একটা গেঞ্জি কারখানা রয়েছে। জায়গা কম। জলের সোর্স কম। প্রায় ১৮টা মতো দমকলের গাড়ি দিয়েছি। আমরা সব রকম চেষ্টা করেছি। জায়গাটা এতই সরু, গাড়ি যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে। তবে আগুন নতুন করে ছড়ানোর সম্ভাবনা নেই।”
স্থানীয় সূত্রে খবর, পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসার পর কারখানার ধ্বংসস্তূপের ভিতর যখন দমকলের কর্মীরা প্রবেশ করেন, ভিতরের একটি ঘরে একজনের দগ্ধ দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। কে ওই ব্যক্তি, কী পরিচয় তা এখনও জানা যায়নি। যে অবস্থায় দেহটি উদ্ধার হয়েছে তাতে শনাক্ত করা খুব সহজ হবে বলেও মনে করছেন না দমকল আধিকারিকরা। ডিএনএ পরীক্ষাও করতে হতে পারে।
এদিকে যে নিরাপত্তা রক্ষী নিখোঁজ জানা গিয়েছে তাঁর নাম কানাই সাঁতরা। তিনি স্থানীয় সিকিউরিটি এজেন্সির মাধ্যমে রং কারখানার নিরাপত্তা রক্ষী হিসাবে নিযুক্ত হন। ইতিমধ্যেই সেই এজেন্সির মাধ্যমে কানাই সাঁতরার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছে পুলিশ। সকালে আগুন লাগার পর কারখানার ভিতর থেকে সকলে বেরিয়ে এলেও তাঁর দেখা মেলেনি। বিকেল গড়িয়ে গেলেও খোঁজ মেলেনি বছর ষাটের এই কানাইবাবুর। কোথায় গেলেন তিনি, আশঙ্কায় এলাকার লোকজন।
স্থানীয়দের কথায়, আগুন লাগার পর কারখানার ভিতর থেকে কেউ একজন বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করেছিলেন। সেই আর্তনাদের গলার সঙ্গে কানাইবাবুর গলার মিল রয়েছে বলেও অনেকের দাবি। কানাই সাঁতরার খোঁজ করছে পুলিশ। অন্যদিকে দগ্ধ দেহটিও উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।