Kalbaishakhi Storm: চৈত্র-বৈশাখের কালবৈশাখী উধাও! কেন এমন হাওয়া-বদল?
Weather: চৈত্র, বৈশাখ মাসে ঝড়-বৃষ্টি হতে গেলে বজ্রগর্ভ মেঘের দরকার। মূলত ছোটনাগপুর মালভূমি এলাকায় এর জন্ম। মালভূমির মাটি তেতে উঠলে সৃষ্টি হয় ‘হিট লো’ বা নিম্নচাপ। এ ছাড়া সে তল্লাটে বঙ্গোপসাগর থেকে দখিনা-পুবালি বাতাস পৌঁছনোর প্রয়োজন। তবেই জলীয় বাষ্প বোঝাই গরম হাওয়া উঠে যায় নির্দিষ্ট উচ্চতায়। বজ্রগর্ভ মেঘ সঞ্চারিত হয়। আর বায়ুমণ্ডলের উপরের স্তরের বাতাসের ধাক্কায় সেই মেঘ ধীরে ধীরে সরে আসে উপকূলের দিকে। তখন ঝড়-বৃষ্টি হয়।
কলকাতা: ভূগোলের পাঠ্যপুস্তকে এখনও কালবৈশাখীর সময়কাল চৈত্র-বৈশাখই রয়েছে। কিন্তু বইয়ের লেখার সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিলই আজকাল আর পাওয়া যায় না। ভরা বৈশাখে বঙ্গে এখন শুধুই তাপপ্রবাহ, ‘চুবতি-জ্বলতি গরমি’। তবে কি চেনা কালবৈশাখী ধীরে ধীরে অচেনা হয়ে যাবে এবার? কেন আজকাল আর কালবৈশাখীর সে অর্থে দেখাই মেলে না? কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবহবিদ লক্ষ্মীনারায়ণ শতপথীর কথায়, জলীয় বাষ্পের অভাবেই এমন পরিস্থিতি।
কালবৈশাখীর অনুঘটক কী?
অধ্যাপক লক্ষ্মীনারায়ণ শতপথী বলেন, “কালবৈশাখী হতে গেলে প্রথমে দরকার জলীয় বাষ্প। এই মুহূর্তে বায়ুমণ্ডলে দক্ষিণবঙ্গ-সহ ঝাড়খণ্ড, সমগ্র মালভূমি অঞ্চলে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ২০ থেকে ৪০ শতাংশের কাছাকাছি। এই জলীয় বাষ্প ধীরে ধীরে বাড়বে। পরের সপ্তাহ থেকে বাড়তে বাড়তে দিনের বেলায় মেঘের সঞ্চার হবে। তার জেরে তাপমাত্রা কমবে। তার মানে এমন নয় যে বৃষ্টি হবে। তবে রাতের দিকে ভ্যাপসা গরম বাড়বে। তাতে বাড়বে অস্বস্তি।”
কেন এবার কালবৈশাখীর দেখা নেই?
অধ্যাপক শতপথীর কথায়, “জলীয় বাষ্পের পরিমাণ অর্থাৎ বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতা ৭০-৮০ শতাংশের কাছাকাছি হলে তখন বৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হয়। তবে তা বিক্ষিপ্তভাবে হবে। তারপর আমরা আশা করছি যে কালবৈশাখী হবে। অর্থাৎ জলীয় বাষ্পের অভাবের কারণে এবার কালবৈশাখীর দেখা নেই।
জল-জঙ্গল কমছে, বাড়ছে দাবদাহ
আবহবিদরা বলছেন, শহরাঞ্চলে গাছ, জলাশয় তো শেষ! গ্রামেও এক ছবি। ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট হচ্ছে। গাছ কাটা পড়ছে, বোজানো হচ্ছে পুকুর। জলাশয় ধ্বংসের পাশাপাশি বনাঞ্চলও কমছে। জল জঙ্গলের পরিমাণ না বাড়ানো হলে এই সমস্যা থেকে নিস্তার নেই।