কলকাতা: “কলকাতা পুরসভার অর্থনৈতিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। তাই আমরা কোনও নতুন প্রকল্প আমরা হাতে নিতে পারছি না। কাউন্সিলরদের সাম্মানিক বৃদ্ধির জন্য যে দাবি-দাওয়া আসছে, তাও পূরণ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।” কলকাতা পুরসভার বোর্ডের প্রথম অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে পরিস্কার করে বলে দিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে কংগ্রেস কাউন্সিলর সন্তোষ পাঠকের প্রশ্নের উত্তরে ফিরহাদ হাকিম বলেন, “কলকাতা পুরসভার অনেক দেনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তা সামাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। অর্থনৈতিক চরম সংকটের মধ্যে রয়েছি আমরা। এই পরিস্থিতিতে কোনভাবেই মৃত কাউন্সিলরদের সম্মান জানানোর জন্য পেনশন দেওয়ার যে দাবি আসছে তা পূরণ করা সম্ভব হবে না। কলকাতা পুরসভার আর্থিক ভাড়ার অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে। পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ। তাই ইচ্ছা থাকলেও আমরা অনেক কাজ করতে পারছিনা।”
তবে মেয়র এও জানিয়েছেন, অর্থনৈতিক সঙ্কট কাটানোর জন্য একাধিক পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সময় লাগবে। অর্থনৈতিক সংকট কাটানোর জন্য কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবারই বেহালায় একটি বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে গিয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিম টাকার অভাবের কথা স্বীকার করে নেন। পেনশন বন্ধের নোটিস নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমাদের ফিন্যান্সের একটু অসুবিধা রয়েছে। অনেক জায়গায় টাকা আটকে রয়েছে। কয়েদিনের মধ্যে আমরা ঠিক করে দেব।”
অর্থনৈতিক সঙ্কটের জেরে কলকাতা পুরনিগমের অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের পেনশন আটকে রয়েছে। পুরনিগমের তরফে বৃহস্পতিবারই এই নোটিস দেওয়া হয়। নোটিসে বড় বড় অক্ষরে লেখা ছিল, ক্রাইসিস অব ফান্ড অর্থাৎ টাকা নেই পুরনিগমের ভাঁড়ারে। তাই কোপ পড়েছে অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের পেনশনে। স্বাভাবিকভাবেই এই নোটিসে অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের মাথায় হাত পড়ে।
পরে লক্ষ্মীবারের সন্ধ্যাতেই আরও বিপত্তি বাড়ে। নোটিসের কথা জানেনই না মেয়র ফিরহাদ হাকিম। প্রাথমিকভাবে টাকার অভাবের কথা তিনি স্বীকার করে নিলেও পরে তড়িঘড়ি তদন্তের নির্দেশও দেন তিনি। কিন্তু শেষমেশ অধিবেশনের প্রশ্নোত্তর পর্বে মেয়র নিজেই স্বীকার করে দেন, ভাঁড়ার শূন্য। আর্থিক সঙ্কটে ভুগছে পুরসভা।
তবে শনিবার প্রত্যেক ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের নিয়েও একটি বৈঠক রয়েছে। কলকাতা পুরসভা আর্থিক সঙ্কটে ভুগছে। সেই সঙ্কটের মধ্যেও ভারসাম্য বজায় রেখে কাউন্সিলররা কীভাবে নাগরিক পরিষেবা দিতে পারবেন, তা নিয়ে পাঠ পড়াবেন মেয়র। পাশাপাশি প্রত্যেক কাউন্সিলর কীভাবে মেয়র, ডেপুটি মেয়র, মেয়র পারিষদের সঙ্গে সমন্বয় স্থাপন করে কাজ করবেন, কীভাবে উন্নত নাগরিক পরিষেবা প্রদান করা সম্ভব, সেই সব খুঁটিনাটি টিপস দেবেন ফিরহাদ হাকিম।
আরও পড়ুন: Dhakhar vs Mamata: রাজ্যপালের বিরুদ্ধে বিধানসভাতেও নিন্দাপ্রস্তাব আনতে পারে তৃণমূল