কলকাতা: বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) পর আরও তিন সাংসদকে তলব দিল্লিতে। দিল্লিতে তলব করা হয়েছে সৌমিত্র খাঁ (Soumitra Khan), অর্জুন সিং (Arjun Singh), নিশীথ প্রামাণিককে (Nisith Pramanik)। এদিকে, আজই দুপুর ১২টায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন শুভেন্দু অধিকারী। বাংলায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েই প্রধানমন্ত্রীর (PM Narendra Modi) সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে বাকি তিন সাংসদকে কেন তলব করা হয়েছে, তা নিয়ে রয়েছে সেই অন্ধকারই। তিন সাংসদও এ ব্যাপারে স্বচ্ছ ধারণার অধিকারী নন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আচমকাই কেবল শুভেন্দু অধিকারীকে দিল্লিতে তলব নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের মধ্যে যে চাপা অসন্তোষ তৈরি হয়েছে, তা আলোচনার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মিটিয়ে নিতে চাইছে। সেক্ষেত্রে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে এসে উনিশের নির্বাচনে জয়লাভ করা তিন সাংসদকে দিল্লিতে তলব।
দিল্লি গিয়ে বাংলায় ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের দাবি জানিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। বাংলার নেতাদেরও সুর একেবারে সপ্তমে। তবে এসবের মধ্যে মঙ্গলবার ভীষণওভাবে প্রকট হয়েছে বিজেপি অন্দরের ফাঁকফোকড়। শুভেন্দু অধিকারীকে কেন দিল্লিতে তলব করা হয়েছে, তা সম্পর্কে বিন্দুবিসর্গ ধারণা নেই বলে প্রকাশ্যেই জানিয়ে দিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। একদিকে, যখন দলীয় কর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদের রূপরেখা নির্ধারণে হেস্টিংসে বৈঠক করছেন দিলীপ ঘোষেরা, তখন অন্যদিকে, অমিত শাহর বাড়িতে শুভেন্দু। এদিকে, হেস্টিংসের বৈঠকে রাজীব-শুভেন্দু অনুপস্থিতি নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়।
শুভেন্দুকে একাকী তলবে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল, বাংলার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার ক্ষেত্রে কেন বাকি নেতা-সাংসদদের ডাকা হল না? উত্তরে অবশ্য অনেকে বলেছিলেন, শুভেন্দু কে এগিয়ে দিয়ে বা হাইলাইট করে মমতার ‘ব্যক্তিগত পরাজয়’ কে বার বার উস্কে দেওয়ার কৌশল নিচ্ছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু শুভেন্দুকে মাইলেজ দেওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছিল দলের অন্দরেই। বিজেপি অন্দরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছিল সে গুঞ্জন। বিশ্লেষকরা বলছেন, ভিন দল থেকে আসা একের পর এক নেতা যখন ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য মমতার সামনে নাকেখত দিতেও রাজি তখন দলের অন্দরের ক্ষোভ মেটাতে তৎপর গেরুয়া শিবির।
আরও পড়ুন: বুধে ‘লেভেল টেস্টের’ আরও এক ধাপ! প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতে শুভেন্দু
তাই রাতারাতি বাংলার তিন সাংসদকেও তলব। এক্ষেত্রে তাঁদেরই তলব করা হল, যাঁরা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে এসে জয়লাভ করেছেন। তবে এ বৈঠকে অবশ্য গেরুয়া শিবির সামনে রেখেছে বাংলায় ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের বিষয়টি। তবে বিপুল ভোটে একটা নির্বাচিত সরকারকে এভাবে ফেলা যায় কিনা, তা নিয়ে বিতর্ক থাকতেই পারে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এই দাবিতে বিজেপি প্রকাশ্যে দাঁড়িয়ে করছে তার একটাই কারণ, দলীয় কর্মীদের মনোবল চাঙা করা।