AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

শরীরে অক্সিজেনের মাত্রার ওঠানামা, হাসপাতালে ভর্তি করা হল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে!

হাসপাতালে ভর্তি করা হল করোনা (COVID) আক্রান্ত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (Buddhadeb Bhattacharya)।

শরীরে অক্সিজেনের মাত্রার ওঠানামা, হাসপাতালে ভর্তি করা হল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে!
ফাইল ছবি
| Updated on: May 25, 2021 | 12:50 PM
Share

কলকাতা: হাসপাতালে ভর্তি করা হল করোনা (COVID) আক্রান্ত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (Buddhadeb Bhattacharya)। মঙ্গলবার সকালে তাঁর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে হঠাৎ ৮৮ তে নেমে যায়। তারপরই ঝুঁকি নিতে চাননি চিকিৎসকরা। ঘূর্ণিঝড়ে কলকাতার পরিস্থিতি কেমন হবে, তাঁকে সেই পরিস্থিতিতে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে কিনা, তা নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন চিকিৎসকরা। পরে বুদ্ধবাবুকে রাজি করানো সম্ভব হয়। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

তবে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, বুদ্ধবাবুর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। শরীরের বাকি যে মেডিক্যাল প্যারামিটার রয়েছে, তা একেবারেই ঠিক রয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, বুদ্ধবাবু যেহেতু সিওপিডি-তে আক্রান্ত, তাতে অক্সিজেনের স্যাচুরেশনের মাপকাঠি সাধারণত ৮৮-৯০এর মধ্যেই থাকার কথা। বুদ্ধবাবুর শরীরে বর্তমানে এই পরিমাণ অক্সিজেন ওঠানামা করছে। মঙ্গলবার সকালে তা একবার ৮৮-র নীচে নেমে যায়। তাই তড়িঘড়ি হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা।

আক্রান্ত হওয়ার দ্বিতীয় সপ্তাহ বলেই চিকিৎসকরা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বিষয়ে অত্যন্ত সতর্ক। এখনও পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের দ্বিতীয় সপ্তাহ অর্থাৎ অষ্টম দিন থেকে একেবারে ত্রয়োদশ বা চতুর্দশ দিন পর্যন্ত খুবই গুরুত্বপূর্ণ পরিস্থিতি থাকে। কারণ এই সময়ে আক্রান্তের ফুসফুস সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এর সময়েই আক্রান্তের শরীরে তৈরি হয় সাইটোকাইনিন স্টর্ম।

এবার প্রশ্ন সাইটোকাইনিন স্টর্ম কী?

চিকিৎসকরা বলছেন, ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করলে শরীর তার নিজের নিয়মে ইমিউনোলজিক্যাল রিয়াকশন করে । অর্থাৎ ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করে। শরীরে ইমিউনোলজিক্যাল রিঅ্যাকশন বেশি হলেই ইমিউন স্টর্ম বা সাইটোকাইনিন স্টর্ম তৈরি হয়। ভাইরাস যখন ফুসফুসে ঢোকে তখন তা ফরেন বডির মত আচরণ করে। শরীর আবার পাল্টা এই ভাইরাসকে আটকাতে চায়। এই ঘাত প্রতিঘাতেই ইমিউন স্টর্ম তৈরি হয়।  কার শরীরের ইমিউন স্টর্ম কতটা বেশি হবে, তার ওপরই নির্ভর করছে রোগীর শারীরিক অবস্থা কোনদিকে যাবে।

সাইটোকাইনিন স্টর্ম – ঠিক এই বিষয়টি নিয়েই চিন্তিত রয়েছেন বুদ্ধদেব বাবুর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এবং অন্যান্য চিকিৎসকেরা। ফুসফুসের এইচ আর সিটি বা সিটি স্ক্যান অত্যন্ত জরুরি। এই মুহূর্তে বুদ্ধবাবুর ফুসফুসের কী অবস্থা, তা জানতে অত্যন্ত আগ্রহী চিকিৎসকরা। সেই কারণেই হাসপাতালে ভর্তির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।

Buddhadeb Bhattacharya Health Update, Former CM Buddhadeb Bhattacharya Health Update, COVID Postive Buddhadeb Bhattacharya, Buddhadeb Bhattacharya Hospitalized

হাসপাতালে ভর্তি করা হল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে

আরও পড়ুন: ল্যান্ডফল স্থল থেকে দূরত্ব ২০০ কিমি! আমফানের চেয়ে শক্তিশালী ইয়াসে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে কলকাতা? আর কখন থেকে?

দীর্ঘদিন ধরেই সিওপিডি-তে আক্রান্ত তিনি। গত কয়েক বছরে সে সমস্যা আরও বেড়েছে। তাঁকে রাখতে হয় পোর্টেবল অক্সিজেন সাপোর্টে। তাঁকে একাধিকবার ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালেও। অসুস্থতার জন্য দীর্ঘদিন ঘরবন্দি তিনি। শেষবার তাঁকে দেখা গিয়েছিল ২০১৫ সালের ব্রিগেডের সমাবেশে। ২০১৯এ ব্রিগেডে গেলেও তিনি গাড়ি থেকে নামেননি। ২০২১ সালের ব্রিগেডের আগে দেন ভার্চুয়াল বার্তা। উল্লেখ্য, সোমবারই করোনাকে জয় করে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন বুদ্ধবাবু স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য।

সূর্যকান্ত মিশ্র সোমবার রাতে বুদ্ধবাবুর বাড়ি যান। তিনি বুঝিয়ে আসেন, আগামী দু-দিন ঝড় বৃষ্টি হলে বাড়িতে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হতে পারে। তখন অক্সিজেন চালু রাখা মুশকিল হবে। বাইপ্যাপ চালানোও মুশকিল। কিন্তু হাসপাতালে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ থাকে। তারপরও হাসপাতালে যেতে অনীহা ছিল বুদ্ধবাবুর। সূর্য মিশ্র এরপর স্পষ্ট বলেন, “দলের সিদ্ধান্ত আপনাকে হাসপাতালে যেতে হবে।”  তখন বেশ কিছু সময় চুপ করেছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। কিছুটা সময় পরে বলেন, “তোমরা যা ভাল বোঝো কর…”