ল্যান্ডফল স্থল থেকে দূরত্ব ২০০ কিমি! আমফানের চেয়ে শক্তিশালী ইয়াসে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে কলকাতা? আর কখন থেকে?

আমফানের (Amphan) মতোই কি ইয়াসের (Yaas) বিধ্বংসী চেহারা দেখবে কলকাতা (Kolkata)?

ল্যান্ডফল স্থল থেকে দূরত্ব ২০০ কিমি! আমফানের চেয়ে শক্তিশালী ইয়াসে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে কলকাতা? আর কখন থেকে?
ইয়াসের অভিমুখ, তথ্যসূত্র - cyclocane.com
Follow Us:
| Updated on: May 25, 2021 | 8:18 AM

কলকাতা: আমফানের (Amphan) মতোই কি ইয়াসের (Yaas) বিধ্বংসী চেহারা দেখবে কলকাতা (Kolkata)? ল্যান্ডফল বাংলাতে না হওয়ায় আশঙ্কা অনেকটাই কম। তবে ইয়াসের প্রভাব কলকাতায় কি আমফানের মতোই হবে? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

আলিপুর আবহওয়া দফতরের বিশেষজ্ঞরা আশ্বস্ত করেছেন, কখনই আমফান আর ইয়াসের প্রভাব একই রকম হবে না। ইয়াস অনেক বেশি শক্তিশালী। তবে ল্যান্ডফল করবে বালেশ্বরে। আর আমফান সাগরে ধাক্কা খেয়ে গিয়েছিল কলকাতার বুক চিড়ে। দুটোর প্রভাব কখনই একই রকম নয়।

২৬ মে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসাবে ইয়াস আছড়ে পড়বে বালেশ্বর ও দিঘার মধ্যবর্তী এলাকায়। ২৪ মে বাংলার উপকূলবর্তী জেলা ও কলকাতায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে। ২৫ মে কলকাতায় অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। ২৬ মে ঝাড়গ্রাম, দুই মেদিনীপুরে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ২৭ মে কমে আসবে বৃষ্টির পরিমাণ। ২৫ মে সকালে ঘুর্ণিঝড়ের গতিবেগ হবে ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার। ২৬ মে ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হবে।

বালেশ্বর থেকে কলকাতার দূরত্ব ২০০ কিলোমিটার। ফলে প্রভাব পড়লেও, তা আমফানের মতো হবে না। উল্লেখ্য, আমফানের সময়ে গ্রাম, শহরতলি, শহরের বড় অংশ দীর্ঘদিন বিদ্যুৎহীন অবস্থায় ছিল। এ কারণে এবারে আগেভাগেই বিদ্যুৎ দফতরের তরফে নেওয়া হয়েছে উদ্যোগ।

♦  উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলিতে বিদ্যুৎকর্মীদের বিশেষ দল     গঠন করা হয়েছে।

♦ কলকাতা পুরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে দুটি করে দল গঠন করা হয়েছে। ♦ গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলির জন্য থাকছে কুইক রেসপন্স টিম। ♦  জেলায় ২০ হাজার বিদ্যুতের খুঁটি পাঠানো হয়েছে। ♦  ৪৫০টি ট্রান্সফর্মার ও ২৫৫ কিমি তার পাঠানো হয়েছে। ♦  জল সরবরাহ থেকে মোবাইল পরিষেবা চালু রাখার বিষয়ে কড়া নজর রাখা হচ্ছে। ♦  মঙ্গলবার থেকেই বিদ্যুৎদফতরের ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুম চালু হচ্ছে।

ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই কলকাতা পুরসভা, সিইএসসি ও পূর্ব দফতর বৈঠক করেছে। ভার্চুয়াল ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিল কলকাতা পুলিশও। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ২০ টি দলকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঝড়ের পর বিদ্যুৎ পরিষেবা নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে ২৫০ কর্মীকে প্রস্তুত রাখছে সিইএসসি।

আমফানের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের মোকাবিলায় প্রস্তুত হচ্ছে পুরসভা। শহরের বিভিন্ন এলাকায় বিপজ্জনক গাছ কাটার কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়াও সরানো হয়েছে হোর্ডিং, পোস্টার ও বিলবোর্ড।

ইয়াসের মোকাবিলায় চূড়ান্ত প্রস্তুতি কলকাতা বিমানবন্দরেও। পরিস্থিতি বুঝে বিমানবন্দরের কাজকর্ম চালু রাখার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে অনেকটাই প্রস্তুতি সেরে ফেলা হয়েছে। ইয়াস মোকাবিলায় কলকাতা পুলিশের তরফে বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। ‘ইউনিফায়েড কম্যান্ড এজেন্সি’ নামে একটি বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। কলকাতা পুলিশের আধিকারিকরা ছাড়াও কলকাতা পুরসভা, এনডিআরএফ, বিএসএনএল, সিইএসসি-র আধিকারিকরা রয়েছেন এই দলে।

আরও পড়ুন: দিঘা থেকে ৪৫০ কিমি দূরে ইয়াসের অবস্থান! কোন জেলাগুলিতে জারি হল লাল সতর্কতা, কোথায়ই বা কমলা সতর্কতা?

কলকাতায় মোতায়েন থাকবে, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ১০টি, সিভিল ডিফেন্সের ১০টি, বন দফতরের ১৬টি, এবং কলকাতা পুলিশের ২২টি দল। অন্যদিকে কলকাতা পুরসভার তরফে প্রত্যেক বরোতে আলাদা আলাদা দল থাকবে।

♦♦♦ ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ মোকাবিলায় নবান্নের তরফে প্রকাশ করা হল হেল্পলাইন নম্বর। ঘূর্ণিঝড়ের সময়ে যে কোনও বিপদে পড়লে ফোন করুন এই নম্বরগুলিতে ১০৭০ এবং ০৩৩-২২১৪৩৫২৬।