কলকাতা: কলকাতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (Kolkata Municipal Corporation) ভাঁড়ারে টান পড়েছে, সে কথা শুক্রবারই স্বীকার করে নেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Mayor Firhad Hakim)। শনিবার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষও এ নিয়ে মুখ খুললেন। শিল্পপতিদের কাছে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহ্বানও জানান তিনি। এদিন টাউনহলে নতুন কাউন্সিলরদের নিয়ে প্রশিক্ষণ শিবির ছিল। সেখান থেকেই শিল্পপতিদের কাছে সাহায্য চান ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ।
কলকাতা পুরনিগমের আর্থিক সঙ্কট যে চরম অবস্থায় রয়েছে শুক্রবারই তা মেনে নেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। শনিবার তাঁর পাশে দাঁড়িয়েই অতীন ঘোষ বলেন, কলকাতা পুরনিগমের চরম অর্থনৈতিক সঙ্কট চলছে। তবে এ ছবি শুধু কলকাতা পুরনিগমেই দেখা গিয়েছে এমন নয়। এইরকম আর্থিক শোচনীয় অবস্থা দেশের বিভিন্ন পুরনিগমেই রয়েছে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে শিল্পপতিরা এগিয়ে আসেন। তাঁরা আর্থিকভাবে সাহায্য করেন পুরনিগমকে। কিন্তু কলকাতা পুরনিগমের ক্ষেত্রে এমন কোনও সংস্থান নেই। তিনি বলেন, এক্ষেত্রে তাঁরাও শিল্পপতিদের এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান করতে পারেন।
এদিন অতীন ঘোষ বলেন, “মুম্বই হচ্ছে ভারতবর্ষের সবথেকে ধনী মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন। ওরা শুধুমাত্র সিআরএসে মানে কর্পোরেট সোশাল রেসপনসিবিলিটিতে ৫৬ কোটি টাকা প্রতি বছর অনুদান পায়। এটা আমি পাঁচ বছর আগের অঙ্ক বলছি। আমরা তো কিছুই পাই না। আমাদের এখানে বড় বড় শিল্পপতিরা সিআরএসে কলকাতা পুরনিগমকে কোনও টাকা দেন না। অথচ কলকাতার সমস্ত পরিষেবা তাঁরা নেন। স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে উন্নত করতে বা কলকাতা পুরনিগমের অন্যান্য পরিষেবাকে উন্নত করতে কলকাতার শিল্পপতিদের এগিয়ে আসা উচিৎ। তাঁরা নিজেদের টাকা দেবেন না। ইনকাম ট্যাক্সের আইন অনুযায়ী কর্পোরেট সোশাল রেসপনসিবিলিটিতে তাঁরা দিতে পারেন, সেই টাকাটা কোনও এনজিওকে দেন তাঁরা। কলকাতায় যারা সবথেকে বড় পরিষেবা দেয় কলকাতা পুরনিগম, তাদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসুন।”
শুক্রবার কলকাতা পুরনিগমের মাসিক অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্ব ছিল। সেখানে কংগ্রেস কাউন্সিলর সন্তোষ পাঠকের এক প্রশ্নের জবাবে ফিরহাদ হাকিম বলেন, “কলকাতা পুরনিগমের অনেক দেনা হয়ে গিয়েছে। তা সামাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। অর্থনৈতিক চরম সংকটের মধ্যে রয়েছি আমরা। এই পরিস্থিতিতে কোনভাবেই মৃত কাউন্সিলরদের সম্মান জানানোর জন্য পেনশন দেওয়ার যে দাবি আসছে তা পূরণ করা সম্ভব হবে না। কলকাতা পুরনিগমের আর্থিক ভাড়ার অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে।”
অর্থনৈতিক সঙ্কটের জেরে কলকাতা পুরনিগমের অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের পেনশনও আটকে গিয়েছে। বৃহস্পতিবারই এ সংক্রান্ত নোটিস দেওয়া হয়েছে। সেখানে লেখা, ‘ক্রাইসিস অব ফান্ড’। তাই কোপ পড়েছে অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের পেনশনে। ফিরহাদ হাকিম এ প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা চাইছি সকলের পেনশন হয়ে যাক। কর্পোরেশনের আমরা পেনশন এবং স্যালারি এটাকে আপটুডেট করতে চাইছি। সেই মতো নির্দেশও দিয়েছি।”
যদিও ডেপুটি মেয়রের এই আহ্বান প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “গুজরাতে ব্যবসায়ীরা প্রশাসনের পাশে কারণ রাজনৈতিক দল চাঁদা তোলে না। এ রাজ্যে শিল্পবান্ধব পরিবেশ কোথায়? সবাই চলে যাচ্ছে বাইরে।”
আরও পড়ুন: Marichjhapi Chalo: মরিচঝাঁপির ইতিহাস খুঁড়তে এবার ঝাঁপাচ্ছে বিজেপি! তাচ্ছিল্যের সুর বামেদের গলায়