Marichjhapi Chalo: মরিচঝাঁপির ইতিহাস খুঁড়তে এবার ঝাঁপাচ্ছে বিজেপি! তাচ্ছিল্যের সুর বামেদের গলায়
Marichjhapi: ১৯৭৯ সালের জানুয়ারি মাসে মরিচঝাঁপি হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ উঠেছিল। ২৪ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত এই হত্যাকাণ্ড চলে বলে অভিযোগ ওঠে।
কলকাতা: এবার বিজেপির নজরে সুন্দরবনের মরিচঝাঁপি। ৩১ জানুয়ারি সেখানেই ঝাঁপাতে চলেছে বিজেপির তফশিলি মোর্চা (BJP ST Cell)। আগামী সোমবার ‘মরিচঝাঁপি চলো’র ডাক দিয়েছে তারা। বাম আমলে মরিচঝাঁপি হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ ঘিরে উত্তাল হয়েছিল বাংলা। প্রায় চার দশক আগের সেই ইতিহাস বঙ্গবাসীকে ফের স্মরণ করাতেই এবার বিজেপির এই নতুন কর্মসূচি বলে সূত্রের খবর। বিজেপির (BJP) তরফে এ সংক্রান্ত একটি পোস্টার তৈরি করা হয়েছে। সোশাল মিডিয়ায় জোর কদমে চলছে প্রচার। বিজেপির রাজ্য নেতাদের মধ্যে সেখানে ছবি রয়েছে সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারী, অগ্নিমিত্রা পালের। অগ্নিমিত্রা পাল জানান, “যে মানুষগুলো মারা গিয়েছিলেন তাঁদের নিয়ে কোনও তদন্ত হয়েছে কি? যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা কি নেওয়া হয়েছে? মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী সেই সময় বলেছিলেন যারা যারা অত্যাচার করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যা যা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখার কথা বলেছিলেন। কোথায় কোনও ব্যবস্থা তো নেওয়া হয়নি। আজকে সেই মানুষগুলোর পাশে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী দাঁড়িয়েছেন? এই যে তফশিলি জাতির মানুষগুলোকে মারা হয়েছিল, তাঁদের পরিবার না বিচার পেয়েছে, না তাদের পুনর্বাসন হয়েছে। এই সবগুলো তো ভাবতে হবে।”
মরিচঝাঁপি নিয়ে কী অভিযোগ
১৯৭৯ সালের জানুয়ারি মাসে মরিচঝাঁপি হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ উঠেছিল। ২৪ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত এই হত্যাকাণ্ড চলে বলে অভিযোগ ওঠে। সে সময় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন জ্যোতি বসু। অভিযোগ উঠেছিল, মরিচঝাঁপি দ্বীপে বাংলাদেশ থেকে আসা উদ্বাস্তুদের একাংশ আশ্রয় নিয়েছিলেন। পুলিশ তাঁদের হঠাতে গেলে দু’পক্ষের মধ্যে শুরু হয় সংঘর্ষ, বহু উদ্বাস্তু প্রাণ হারান বলেও অভিযোগ ওঠে।
তদন্ত চাই, বলছে বিজেপি
বিজেপি এই কর্মসূচি হঠাৎ বলে মানতে নারাজ। অগ্নিমিত্রা পালের কথায়, “প্রতি বছরই এই ৩১ জানুয়ারি দিনটা আমরা স্মরণ করি। এই ইস্যুগুলো খুবই সমসাময়িক। আজকে কেন মুখ্যমন্ত্রী এদের পাশে দাঁড়াননি? রাজনীতি করার জন্য? আমরা জানতে চাই। আমরা ৩১ তারিখ তফশিলি মোর্চার তরফে এই কর্মসূচি করছি। আমি নিজে থাকব। আমাদের কয়েকজন শীর্ষ নেতৃত্বের থাকার কথা। আমরা মরিচঝাঁপি যাব, সেখানকার মানুষের পাশে দাঁড়াব। আমরা এই ঘটনার তদন্ত কীভাবে এগোনো যায় তার ব্যবস্থা করব। ওখানে মানুষ খুবই খারাপ অবস্থায় আছেন। মরিচঝাঁপির ঘটনা যেখানে হয়েছিল, সেই দ্বীপে যেতে দেওয়া হয় না। আমরা দেখব, ওখানে যাওয়ার চেষ্টা করব।”
অভিযোগটাই বায়বীয়, দাবি সিপিএম নেতা সুজনের
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “মরিচঝাঁপি নিয়ে যারা অভিযোগ করছে তাদের অভিযোগ তো বায়বীয়। ইতিহাস, ভূগোল কোনওকিছু এনারা জানেন কি না জানি না। সবথেকে বড় কথা মরিচঝাঁপি চলো বলে যেন মরিচঝাঁপিতেই যায়। মরিচঝাঁপির নাম করে আরেকটা কোনও আলুঝাঁপিতে না চলে যায়। অন্য কোনও ঝাঁপিতে যেন না চলে যায়। ইতিহাস ভূগোল জানে না। এই গল্প করে বাজার গরম করে ভোটের সুবিধা নিয়েছে। ১০-১১ বছর নতুন সরকার কিছু করতে পারল না কেন? কিছু তো বাস্তব নয়, তাই খুঁজেই পায়নি। বিজেপি। ‘৮০ সালে বিজেপির বাজপেয়ীজী তো প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। সেই থেকে ৪০ ৪১ বছর হয়ে গেল কখনও তো বিজেপি কিছু বলল না। দিল্লিতে সরকার থাকা সত্ত্বেও। ইস্যু খুঁজে না পেয়ে এসব করছে।”
বিজেপিকে কটাক্ষ তৃণমূলের
রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বিজেপির কর্মসূচিকে কটাক্ষ করে বলেন, “মরিচঝাঁপিতে এখন কী করতে যাবে বিজেপি? সেখানে নতুন ইতিহাস তৈরি করতে যাবে নাকি? কিসের শ্রদ্ধা জানাতে যাবে?”। অন্যদিকে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের কথায়, “মরিচঝাঁপি কুখ্যাত তা নিয়ে সন্দেহ নেই। কিন্তু বিজেপির বলার কী আছে? জনতা পার্টি তখন কিছু করেনি। লড়াকু দল হিসাবে বিজেপির নামও নেই। এখন যা করছে তা লোক দেখানো। তবে মরিচঝাঁপি নিকৃষ্ট অধ্যায় এটা ঠিক।”