কলকাতা: আবার উঁকি মারতে শুরু করেছে করোনা। বাংলায় করোনার সামগ্রিক পরিস্থিতির কথা উঠে এসেছে মুখ্যমন্ত্রীর সাংবাদিক বৈঠকেও। এদিকে পরিস্থিতি যাতে নাগালের বাইরে না চলে যায়, তা নিশ্চিত করতে তৎপর কলকাতা পুরনিগমও। মাস্ক পরা আবার বাধ্যতামূলক করেছে পুরনিগম। বুধবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের একগুচ্ছ নির্দেশিকা আসার পরই, পুরভবনে তড়িঘড়ি আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকে বসেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সেই বৈঠকেই মাস্ক পরা, হাত স্যানিটাজার করার মতো নিয়মবিধি বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কলকাতা পুরনিগমের সদর দফতর, অন্যান্য অফিস, শহরের সবকটি বাজার এবং সরকারি অফিসগুলিতে মাস্ক বাধ্যতামূলক করল কলকাতা পুরনিগম। বৃহস্পতিবার থেকেই এই নিয়মবিধি জারি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র তথা স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ।
কলকাতায় ইতিমধ্যেই করোনা আক্রান্ত দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। কলকাতা পুরনিগমের হিসেব বলছে, ১৫ দিনে শহরে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮২ জন। তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগের শরীরেই উপসর্গ নেই। মাত্র ৮১ জনের শরীরে উপসর্গ ছিল বলে জানাচ্ছেন অতীন ঘোষ। যদিও যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ৮০-৮৫ শতাংশই টিকা নিয়েছিলেন। ফলে কারও শারীরিক অবস্থাই সঙ্কটজনক নয় বলেও জানাচ্ছেন ডেপুটি মেয়র। মূলত যাঁদের কোমর্বিডিটি রয়েছে, তাঁরাই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এমন অবস্থায় তাই আর কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না পুরনিগম। ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ জানাচ্ছেন, মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। নিয়মিত হাত স্যানিটাইজ করার কথাও বলছেন তিনি। এখন থেকে করোনা নিয়ে সচেতনতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে প্রচার অভিযান চালানো হবে বিভিন্ন বাজার এলাকায়। পাশাপাশি বাজার এলাকাগুলিতেও পুরনিগমের ডেস্কে মাস্ক রাখা থাকবে বলে জানা যাচ্ছে।
দেশ জুড়ে করোনার দৈনিক সংক্রমণের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরাও। সম্প্রতি কিছু রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা যে ভাবে বেড়েছে, তাতে আবার আতঙ্কের সৃষ্টি হচ্ছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামী আট থেকে দশ দিন সংক্রমণ ধাপে ধাপে বাড়বে। এরইমধ্যে রাজ্যগুলির সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠক সেরেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। সেখানে গত দু’বছরে আক্রান্তের নিরিখে শীর্ষে থাকা জেলাগুলিকে বিশেষ নজরে রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্যগুলিকে।
এদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও রাজ্যবাসীকে পরামর্শ দিয়েছেন মাস্ক পরার জন্য। যাঁদের কোনও শারীরিক অসুবিধা রয়েছে, তাঁদের ভিড় এড়িয়ে চলার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি। যদিও রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে বলেই জানাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী।