কলকাতা: জামা কাপড় শুকোতে দেওয়া নিয়ে গণ্ডগোল। ছোটো ভাইকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ দাদার বিরুদ্ধে। ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য এয়ারপোর্টের বিদ্যাসাগর পল্লি এলাকায়। মৃতের নাম গোপাল মণ্ডল। তিনি পৌরসভার অস্থায়ী কর্মী।
ঘটনার সূত্রপাত গত ২৪ জানুয়ারি। জামা কাপড় শুকোতে দেওয়া নিয়ে ঝামেলা শুরু হয়। গোপাল মণ্ডলের স্ত্রীয়ের সঙ্গে ঝামেলা হয় তাঁর দাদা কৃষ্ণ মণ্ডলের ছেলে হৃত্বিক, স্ত্রী পূর্ণিমা ও মেয়ে প্রিয়ার সঙ্গে। অভিযোগ, গোপাল মণ্ডলের স্ত্রীকে রাস্তায় ফেলে সে সময় বেধড়ক মারধর করা হয়েছিল। বাড়িতে ফিরে বিষয়টি জানতে পারেন গোপাল। তিনি প্রতিবাদ করলে বিষয়টি আবারও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।
অভিযোগ, গোপালকেও তাঁর দাদা রাস্তায় ফেলে কিল-ঘুষি-লাথি মারেন কৃষ্ণ ও তাঁর ছেলে। প্রতিবেশীরাই গোপালকে উদ্ধার করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় গোপালকে উদ্ধার করে ভিআইপি রোডের ধারে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এরপরই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযুক্ত কৃষ্ণের পরিবারের ওপর চড়াও হন। খবর পেয়ে এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। অভিযুক্ত চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতরা হলেন কৃষ্ণ মণ্ডল অণিমা মণ্ডল, প্রিয়া মন্ডল ও হৃত্বিক মণ্ডল।
এলাকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, বাড়িতে টাওয়ার বসানোকে কেন্দ্র করেই দুই ভাইয়ের মধ্যে বচসার সূত্রপাত। মাঝেমধ্যেই ওই পরিবারে অশান্তি হত। ছোটোখাটো যে কোনও ইস্যুতেই ঝামেলায় জড়িয়ে পড়তেন দুই ভাইয়ের পরিবারের সদস্যরা। মাঝেমধ্যে মধ্যস্থতা করতেন প্রতিবেশীরাও। আবার কখনও কখনও একান্ত পারিবারিক বিবাদ বলে আমল দিতেন না তাঁরা। কিন্তু গত সোমবার আবার অশান্তি নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। জামাকাপড় মেলা নিয়ে ঝামেলা শুরু হয়। পরে জল গড়ায় অনেক দূর।
এলাকার বাসিন্দারা কৃষ্ণ মণ্ডলের পরিবারের সদস্যদের ওপর ভীষণ ভাবে ক্ষুব্ধ। তাঁদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। এলাকায় যাতে তাঁরা ঢুকতে না পারেন, সে ব্যবস্থাই করা হবে বলে বলছেন ক্ষুব্ধ প্রতিবেশীরা।
এক প্রতিবেশী বলেন, “মাঝেমধ্যেই অশান্তি হত। সবসময় আমরা নাক গলাতাম না। কিন্তু সেদিন ছোটো ভাইকে মাটিতে ফেলে পিটাচ্ছিল ওরা। আমরা গিয়ে আটকাই। কিন্তু ততক্ষণে যত দেরি হওয়ায় হয়ে গিয়েছে। গোপালকে বাঁচানো গেল না। ওদের ফাঁসি চাই। বাড়িটা যেন বউটা আর বাচ্চার নামে লিখে দেওয়া হয়। ননদটা ভালো। বাকিগুলো একটাও নয়। ”
মৃতের স্বামী বলেন, “আমাকে মেরেছিল ওরা। আমার স্বামী ফিরলে আমি জানাই। ও প্রতিবাদ করতে গিয়েছিল। তখন আমার ভাসুরের পরিবারের চার জন ওকে রাস্তায় ফেলে মেরেছে। বুকে ঘুষি মেরেছে। আমার শ্বশুরও মেরেছে ওকে।”
আরও পড়ুন: kolkata Municipal Corporation: বিতর্ক এড়িয়ে নাগরিক পরিষেবা কীভাবে? কাউন্সিলরদের পাঠ পড়াবেন মেয়র