কলকাতা: বাইপাস লেকটাউনগামী ব্রিজে বাইক দুর্ঘটনা। মৃত্যু হয়েছে এক জনের। আহত আরও এক যুবক। তাঁর অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানা গিয়েছে। ঘটনাস্থলে লেকটাউন থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে বাইপাসের দিক থেকে লেকটাউনের দিকে বেপরোয়া গতিতে যাওয়ার সময় ব্রিজের গার্ডওয়ালে ধাক্কা মেরে উল্টে যায় বাইকটি। বাইক থেকে ছিটকে পড়েন দুই যুবক। রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকেন তাঁরা। পরে স্থানীয়রাই তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিত্সকরা শচীন ওঝাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। অপর আরোহীর নাম দেবাঞ্জন পাল। তিনিও দমদমের বাসিন্দা। আশঙ্কারজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন তিনি। শচীন ওঝার বাড়ি ভদ্রেশ্বর থানা এলাকায়। তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে খবর।
এদিকে, দশমীর রাতে ইএম বাইপাসে গাড়ি উল্টে দুর্ঘটনা ঘটে। জখম হন এক জন। তবে মৃত্যুর কোনও খবর নেই। রাত দেড়টা নাগাদ চিংড়িহাটা থেকে রুবিগামী অ্যাপ ক্যাব বেপরোয়া গতিতে ডিভাইডারে ধাক্কা মেরে উল্টে যায়। ঘটনার জেরে বাইপাসের একটি লেনে বেশ কিছুক্ষণ যান চলাচল বিঘ্নিত হয়। দুর্ঘটনার সময় গাড়িতে ছিলেন এক মহিলা সহ তিন জন।
চিংড়িহাটার ওই রাস্তাই যেন মরণফাঁদ। পঞ্চমীর রাতেই মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে চিংড়িহাটা এলাকায়। এক যুবক ও এক তরুণী সাইন্সসিটির দিক থেকে বাইকে চেপে চিংড়িঘাটার দিকে যাচ্ছিলেন। রাত আড়াইটে নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। মেট্রোপলিটন লেনের কাছে রাস্তার ডিভাইডারে সজোরে ধাক্কা মারে বাইকটি। সঙ্গে সঙ্গেই গাড়ি থেকে ছিটকে পড়ে লোহার গার্ডরেলে সজোরে ধাক্কা মারেন যুবক। দুর্ঘটনায় শরীর থেকে মাথা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। উল্টোদিকের লেনে গিয়ে পড়েন বাইক চালক। বাইকের পেছনের সিটে থাকা তরুণী গুরুতর জখম অবস্থায় এখনও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। যুবকের দেহ ও বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া মুণ্ড উদ্ধার করে নিয়ে যায় পুলিশ।
গত কয়েকমাসে লাগাতার দুর্ঘটনা ঘটছে ওই এলাকায়। কারণ সেই বেপরোয়া গতি। গত মাসের শেষে গাড়ি উল্টে মারাত্মক জখম হন জখম ২। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডিভাইডার ধাক্কা মেরে উল্টে যায় এক গাড়ি।গাড়িতে দুই তরুণী ও দুই যুবক ছিলেন। দুর্ঘটনায় আহত হন প্রত্যেকেই।
পুলিশ সূত্রে খবর, প্রাইভেট গাড়িটি নিকোপার্কের দিক থেকে চিংড়িহাটার দিকে যাচ্ছিল। গাড়ির গতিবেগ স্বাভাবিকের থেকে বেশি ছিল। ওই রাস্তায় নবদিগন্ত পার্কের সামনে একটি গাড়িকে পাশ কাটাতে গিয়েই দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডিভাইডারে ধাক্কা মেরে উল্টে যায় গাড়িটি।
তার কয়েকদিন আগেই নিকো পার্কের সামনে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে আরও একটি গাড়ি। কারণ সেই ওভারটেক। একটি প্রাইভেট গাড়ি উল্টে আহত হন পাঁচজন। অভিযোগ, দু’টি গাড়ির রেষারেষি এবং ওভারটেকের লড়াইয়েই দুর্ঘটনা ঘটে। একটি অ্যাপ ক্যাবের সঙ্গে একটি প্রাইভেট গাড়ির রেষারেষির ফলেই দুর্ঘটনা বলে পুলিশ সূত্রে জানা যায়। গুরুতর আহত অবস্থান পাঁচজনকে স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুমড়ে মুচড়ে যায় দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটি।
কলকাতা পুলিশের আওতায় থাকা চিংড়িঘাটা মোড় পর্যন্ত ইএমবাইপাসে একাধিক স্পিড লিমিটার রয়েছে। তাই চাইলেও কেউ গতির খেলায় মাততে পারে না। কিন্তু চিংড়িঘাটা উড়ালপুল থেকে নেমে সেক্টর ফাইভ বা নিউটাউন যাওয়ার রাস্তায় এই স্পিড লিমিটার অমিল। এই রাস্তাটি আবার বিধাননগর কমিশনারেটের অধীনে। এখানে প্রায় চার কিলোমিটার রাস্তায় স্পিড লিমিটার নেই বলেই অভিযোগ।
এর ফলেই নিয়মিত এই রাস্তা ধরার পরই অধিকাংশ গাড়ি বেপরোয়া হয়ে ওঠে। সেই গতিরই মাশুল গুনতে হচ্ছে চালকদের।
আরও পড়ুন: Sonarpur Crime: দু’বছর আগের বর্ষশেষের ঝামেলা, এই পঞ্চমীতে শোধ তুলল ‘পুরনো বন্ধুরা’