‘জানিস তো ওরা আমায়..’ বলতেই কেটে গেল ফোন! কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে ফের রহস্যজনকভাবে উধাও রোগী

Dec 04, 2020 | 2:18 PM

করোনা আক্রান্ত হয়ে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার স্পেশ্যালিটি ব্লকে চিকিৎসাধীন কলেজ স্ট্রিটের বছর বাষট্টির রীনা আঢ্য 'নিখোঁজ' হয়ে যাওয়ার পর এমনটাই জানাচ্ছেন রীণাদেবীর মেয়ে (Patient Missing From Kolkata Medical College Hospital) ।

জানিস তো ওরা আমায়.. বলতেই কেটে গেল ফোন! কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে ফের রহস্যজনকভাবে উধাও রোগী
বাঁ দিকে- রীনা আঢ্য, ডান দিকে- রীনার মেয়ে

Follow Us

কলকাতা: শেষবার যখন মায়ের সঙ্গে ফোনে কথাটা বলতে পেরেছিলেন, অপরপ্রান্ত থেকে ভেসে এসেছিল কয়েকটি শব্দ… “ফোনটা রাখুন… এত কথা বলার কী হয়েছে….” আর ‘মা’ বলেছিলেন, “জানিস তো ওরা না আমায়….” ব্যস, সেদিন ফোনটা কেটে গিয়েছিল। আর তারপর থেকে খোঁজ পাওয়া যায়নি মায়ের। একটা কথাও বলতে পারেননি মেয়ে। ফোনে যোগাযোগ তো দূরস্ত, হাসপাতালে গিয়েও মেলেনি দেখা। করোনা আক্রান্ত হয়ে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার স্পেশ্যালিটি ব্লকে চিকিৎসাধীন কলেজ স্ট্রিটের বছর বাষট্টির রীনা আঢ্য ‘নিখোঁজ’ হয়ে যাওয়ার পর এমনটাই জানাচ্ছেন রীণাদেবীর মেয়ে (Patient Missing From Kolkata Medical College Hospital) । তবে আদৌ নিখোঁজ কিনা, তাও অবশ্য সঠিকভাবে বলতে পারছে না রীনাদেবীর পরিবার। কারণ, হাসপাতালের তরফে সুস্পষ্টভাবে কিছুই বলা হচ্ছে না, এমনই অভিযোগ।

রীনাদেবীর মেয়ের বয়ান অনুযায়ী, ২৭ নভেম্বর তিনি তাঁর মাকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। কোভিড টেস্টের রিপোর্ট পজেটিভ আসায় তাঁকে সুপার স্পেশ্যালিটি ব্লকে স্থানান্তরিত করা হয়। রীনাদেবীর কাছে একটি মোবাইল রেখে যান তাঁর মেয়ে। বাড়ি গিয়ে কথাও বলেন মায়ের সঙ্গে। শেষ কথা হয়েছিলেন ২ তারিখ। সেদিনই তাঁর মেয়ে ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে সেই হুমকির সুর শুনেছিলেন। তাতেই সন্দেহ দানা বাঁধে। তাঁর মা তাঁকে কি কিছু বলতে চেয়েছিলেন? মেয়ে শুনেছিলেন, ‘জানিস তো ওরা আমাকে…’ এরপরই ফোনটা কেটে গিয়েছিল। মায়ের গলায় উৎকন্ঠা ছিল স্পষ্ট, দাবি মেয়ের। কিন্তু কীসের সেই উৎকন্ঠার কারণ কী?

পরদিনই মেয়ে ছুটে যান হাসপাতালে। দেখা হয়নি। ৫৭৩ নম্বর বেডে ভর্তি ছিলেন রীনাদেবী। এখন সেই বেড ফাঁকা। হাসপাতালের কর্মীরা কিছুই সদুত্তর দিতে পারছেন না। এমনকি পাওয়া যাচ্ছে না তাঁর মোবাইল হ্যান্ডসেটও।

পরিবারের আরও অভিযোগ, হাসপাতালের তরফে তাঁদের যে নম্বরে যোগাযোগ করা হয়েছিল, সেই নম্বরটিও কাগজে-কলমে তাঁরা দেননি। দেওয়া হয়েছিল রীনাদেবীর মেয়ের নম্বর। কিন্তু পরিবারের দাবি, হাসপাতাল থেকে ফোন যায় অন্য নম্বরে। কোথা থেকে ওই নম্বর পেল হাসপাতাল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে (Patient Missing From Kolkata Medical College Hospital)।

বউবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গিয়েছিলেন মেয়ে। কিন্তু থানা অভিযোগ নিতে চায়নি বলে দাবি মেয়ের। থানা থেকে জানানো হয়, এটা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়। হাসপাতাল সুপার কথা বলেননি। কথা বলছেন না হাসপাতালের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও। ফলে মাকে খুজতে অসহায় এবং দিশাহীন রীনাদেবীর মেয়ে।

আরও পড়ুন: ‘শরীরে কিসের রক্ত বইছে? রামের দেশে থেকে রামনাম সহ্য করতে পারছেন না’, মুখ্যমন্ত্রীকে ‘অশ্লীল ভাষায়’ বিঁধলেন দিলীপ

এর আগে গত বুধবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের জরুরি বিভাগের ২০৫ নম্বর বেড থেকে নিখোঁজ হয়েছেন পাইকপাড়ার ৭২ বছরের এক প্রবীণ। এরপরই রীণাদেবী নিরুদ্দেশ। ফলে, হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠছে।

Next Article