Sheikh Sahajahan: কাশ্মীর থেকে সুদীপ্ত সেনকে তুলতে ২ দিন লেগেছিল রাজীব কুমারের, শাহজাহানের বেলায় ৫৬ দিন! কেন?
Sheikh Sahajahan-Sudipto Sen: যেখানে রাজীব কুমারের নেতৃত্বে রাজ্য পুলিশ মাত্র দুইদিনের মধ্যে সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনকে ১৭৪৩ কিলোমিটার পার করে সুদূর কাশ্মীর থেকে গ্রেফতার করে এনেছিল, সেখানেই মাত্র ১৮২ কিলোমিটার আয়তনের সন্দেশখালিতে শাহজাহানকে খুঁজতে কেন এত সময় লাগল?
কলকাতা: অন্য দেশে পালায়নি, সন্দেশখালিতেই ঘাপটি মেরে বসেছিলেন শেখ শাহাজাহান (Sheikh Sahajahan)। ৫৬ দিন পর অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়েছেন “সন্দেশখালির বাঘ”। তবে এতদিন সময় লাগল কেন? সন্দেশখালি কি এত বড় জায়গা? অশান্তির আগুন জ্বলে ওঠার পর থেকে তো ১৪৪ ধারাও জারি ছিল। তবু কেন শাহজাহানকে নাগালে আসছিলেন না? যেখানে রাজীব কুমারের নেতৃত্বে রাজ্য পুলিশ মাত্র দুইদিনের মধ্যে সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনকে ১৭৪৩ কিলোমিটার পার করে সুদূর কাশ্মীর থেকে গ্রেফতার করে এনেছিল, সেখানেই মাত্র ১৮২ কিলোমিটার আয়তনের সন্দেশখালিতে শাহজাহানকে খুঁজতে কেন এত সময় লাগল?
২০১৩ সালের ১৮ এপ্রিল সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। তার মাত্র দুই দিনের মধ্যে, ২০ এপ্রিল কাশ্মীরের গুলমার্গের একটি হোটেল থেকে গ্রেফতার করা হয় সুদীপ্ত সেন ও তাঁর সহযোগী দেবযানী মুখোপাধ্যায়। পুলিশের এই সাফল্য নিয়ে আজও গর্ব করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা পুলিশ কতটা দক্ষ, তা প্রমাণ করতে বারংবার সুদীপ্ত সেনের গ্রেফতারির উদাহরণ দেওয়া হয়। শাহজাহানের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
কবে শাহজাহান গ্রেফতার হবেন, সেই প্রশ্নের মুখে পড়তেই তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র ফের একবার সারদাকর্তার গ্রেফতারির উদাহরণই দিয়েছিলেন। ২৬ ফেব্রুয়ারিই তিনি বলেন, যখন সুদীপ্ত সেনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, তখন শাহজাহানকে গ্রেফতার কোনও বিষয়ই নয়। শাহজাহানের গ্রেফতারির জন্য সাতদিনের সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছিলেন তিনি। আর তাঁর এই কথা সত্যিও হয়েছে। সাতদিন নয়, তিনদিনের মধ্য়েই গ্রেফতার হয়েছে শেখ শাহজাহান।
আরও একটি অদ্ভুত যোগ রয়েছে সুদীপ্ত সেন ও শেখ শাহজাহানের মধ্যে। যখন সারদার দুর্নীতি কাণ্ড সামনে আসে, তখন তদন্ত করার জন্য রাজ্য সরকার বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠন করে। সেই তদন্তকারী দলের নেতৃত্বে ছিলেন প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। গুলমার্গ থেকে সুদীপ্ত সেনকে গ্রেফতার করে আনার কৃতিত্বও ছিল রাজীব কুমারের। তবে বর্তমানে রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারকে কেন সন্দেশখালিতে গিয়েও খালি হাতে ফিরতে হয়েছিল?
শাহজাহানের গ্রেফতারিতে আগের ৫৬ দিনের কথা ভুললে চলে না। এই দীর্ঘ প্রায় দুই মাস ধরে সন্দেশখালির বাসিন্দারা বারবার দাবি করেছেন যে সন্দেশখালিতেই গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন শাহজাহান। বিজেপি থেকে সিপিআইএম- বিরোধী দলগুলিও ক্রমাগত অভিযোগ তুলেছেন যে শাসক দলের আশ্রয়ে রয়েছে শাহজাহান। সেই কারণেই গ্রেফতারিতে এত দেরী।
এ দিন শেখ শাহাজাহানের গ্রেফতারির পরই বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, “একটা ছিঁচকে মস্তানকে ধরতেই ৫৭ দিন সময় লাগল পুলিশের। তাহলে রাঘব বোয়ালদের তো পুলিশ কোনওদিন ধরবে না। তৃণমূলের নেতারা বলেছেন এক সপ্তাহ। পার্টির নেতারা ঠিক করে দিচ্ছেন কাকে কখন ধরতে হবে। সন্দেশখালির মানুষ নিরন্তর লড়াই করেছেন। সাধারণ মানুষের দাবি অবশেষে পুলিশ মেনেছে।”