কলকাতা: শেক্সপিয়র সরনির আবাসন থেকে বৃদ্ধার দেহ উদ্ধারের ঘটনায় নতুন মোড়। তদন্তে নেমে এবার বৃদ্ধার বাড়ির প্রাক্তন গাড়ির চালককে গ্রেফতার করল পুলিশ। ডানকুনি থেকে আজ ওই গাড়ি চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ধৃত দুধকুমার ঢাল ওরফে সুমনের বিরুদ্ধে এর আগেও আড়াই লাখ টাকার গয়না চুরির অভিযোগ রয়েছে। সেই কারণেই তাকে আর কাজে রাখেননি ওই বাড়ির লোকেরা। জানা গিয়েছে, মাস খানেক আগে ফের ওই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে সুমন। তাকে কাজে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য আবেদন করতে থাকে।
মৃত বৃদ্ধার পরিবারের তরফে সেই সময় দুধকুমারকে বলা হয় নিজের চরিত্র সংশোধনের জন্য এবং আগের চুরি করা গয়না ফেরত দেওয়ার জন্য। একমাত্র তাহলেও সুমনকে পুনরায় চাকরিতে বহাল করার কথা ভাবা হবে বলে জানানো হয়। জানা গিয়েছে, গত পরশু দিন অর্থাৎ, ৩১ অক্টোবর শেক্সপিয়র সরনির ওই আবাসনে এসেছিল সুমন। গতকালও নাকি এসেছিল। এরপর বৃদ্ধার দেহ উদ্ধার হয় বাড়ি থেকে। এদিকে ওই ঘটনার পর থেকেই সুমনের মোবাইল সুইচড অফ ছিল। ফলে সন্দেহ আরও তীব্র হয় তার বিরুদ্ধে। আর তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ডানকুনি থেকে ওই গাড়ি চালককে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ।
এদিকে, বৃদ্ধার দেহের ময়না তদন্তের রিপোর্ট ইতিমধ্যেই হাতে এসেছে পুলিশের। ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট থেকে স্পষ্ট যে এটি কোনও স্বাভাবিক মৃত্যু নয়, বৃদ্ধাকে খুন করা হয়েছে। রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, গলায় চাপ দেওয়ার কারণে শ্বাসরোধের থেকেই মৃত্যু হয়েছে ৯১ বছর বয়সি রেণুকা চৌধুরীর। এর আগে বৃদ্ধার ছেলে অভয় চৌধুরীও সন্দেহ করছেন তাঁর মাকে কেউ খুন করেছে।
ছেলে অভয় চৌধুরীর বয়ান অনুযায়ী, ঘরের দরজা খুলে তিনি ঢুকে দেখেন তাঁর মা পড়ে রয়েছেন। সংজ্ঞা নেই। তাঁর নাক দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছিল। বিছানা লন্ডভন্ড ছিল।
২৮ বি, থিয়েটার রোডের অভিজাত আবাসনে একমাত্র ছেলের সঙ্গে থাকতেন বৃদ্ধা রেনুকা। সোমবার রাতে ছেলে আবাসনেরই ছাদে ব্যাডমিন্টন খেলতে যান। ফিরে এসে দেখেন তাঁর মায়ের রক্তাক্ত দেহ বিছানায় পড়ে রয়েছে।
ছেলের অভিযোগ, তাঁর মাকে খুন করা হয়েছে। কিন্তু কেন খুন, কী কারণে খুন? তার কোনও ‘ক্লু’ দিতে পারেননি তিনি। কেন রেনুকার নাক দিয়ে রক্ত বেরোল, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। চাদরে রক্তের দাগ পাওয়া গিয়েছে। পরিবারের সদস্য ও অ্যাপার্টমেন্টের বাকি বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলছেন তদন্তকারীরা।
ওই সময়ের আশেপাশে আবাসনে কে ঢুকেছিলেন, কে বেরিয়েছিলেন, সেই রেজিস্ট্রার খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আবাসনের নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গেও কথা বলছেন তদন্তকারীরা। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে বৃদ্ধা খুন হয়ে থাকতে পারেন।