কলকাতা: কালীপুজোয় এবার বাজি ফাটানো নিয়ে কড়া প্রশাসন। আদালতের থেকে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কেবল মাত্র পরিবেশ বান্ধব বাজিই ফাটানো যাবে কালীপুজো বা দীপাবলিতে। অন্য কোনও ধরনের বাজি ফাটাতে দেখলেই কড়া ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। হাইকোর্টের নির্দেশের পর সজাগ কলকাতা পুলিশ। নিয়মের যাতে একটু এদিক-ওদিক না হয়, তা নিশ্চিত করতে তৎপর পুলিশ।
কলকাতা পুলিশের তরফে ইতিমধ্যেই দু’টি হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। কোথাও নিয়মের বাইরে গিয়ে বাজি ফাটানো হলেই এবার সরাসরি এই হেল্পলাইন নম্বরে অভিযোগ জানানো যাবে। প্রথম নম্বরটি হল ৯৮৭৪৯ – ০১৫২২। আর দ্বিতীয়টি একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর। অর্থাৎ, কোথাও কোনও নিয়ম ভাঙতে দেখলে হোয়াটসঅ্যাপ করেও পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো যাবে। হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরটি হল ৯৪৩২৬ – ২৪৩৬৫। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে পরিচয় গোপন করেও অভিযোগ জানাতে পারবেন নাগরিকরা।
উল্লেখ্য, এবারের কালী পুজোয় এবং দীপাবলিতে বাজি ফাটানো নিয়ে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ফাটানো যাবে কেবল পরিবেশ বান্ধব বাজি। তাও আবার নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। মাত্র ২ ঘণ্টার জন্য মিলবে বাজি ফাটানোর অনুমতি। বাজি ফাটানো যাবে রাত ৮ টা থেকে ১০ টা পর্যন্ত। যদি কোথাও পরিবেশবান্ধব বাজি ছাড়া অন্য কোনও বাজি ফাটাতে দেখা যায়, কিংবা যদি নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে বাজি ফাটাতে দেখা যায়, তাহলে কড়া ব্যবস্থা নেবে কলকাতা পুলিশ। সেই জন্যই আজ এই দুই হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পর বেআইনি বাজি বন্ধের আর্জি নিয়ে বুধবার ফের কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মামলাকারীরা। পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড এক্সপ্লোসিভ সেফটি অর্গানাইজেশন বা ‘পেসো’ দ্বারা স্বীকৃত বাজি ছাড়া বাজি বিক্রি করা যাবে না, সেই সঙ্গে হাসপাতালের কাছে বা লোকালয়ের কাছে বাজি ফাটানো যাবে না। এই আর্জি নিয়েই এ দিন ফের কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মামলাকারী। বিচারপতি রাজা শেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি হয়।
এদিকে সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চের তরফে বলা হয়, পরিবেশ বান্ধব বাজি ব্যবহার হোক। বাতাসের একিউআই লেভেল বা বাতাসের মান যেখানে খারাপ, সেখানে পরিবেশ বান্ধব বাজি ফাটানো যাবে না। তার জন্য পুলিশকে সদর্থক ভূমিকা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। কিন্তু বাজি একেবারে নিষিদ্ধ করা যাবে না বলেই নির্দেশ আদালতের। ফলে আপাতত পরিবেশ বান্ধব বাজি কেনা বা বিক্রির ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই।এর আগে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য ও বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের অবকাশকালীন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ ছিল, সবুজ বাজি বা গ্রিন ক্র্যাকার্স কোনও রকম ক্ষতি করে না, এমন প্রমাণ মেলেনি। সবুজ বাজি পরীক্ষা করাও সম্ভব নয়। তাই অতিমারিকে মাথায় রেখে এবং এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের কথা ভেবে এবার পুজোয় সবরকমের বাজিই নিষিদ্ধ করার পথে হেঁটেছিল হাইকোর্ট। তবে শেষ পর্যন্ত ২ ঘণ্টার জন্য পরিবেশ বান্ধব বাজি ফাটানোর অনুমতি মিলেছে।
আরও পড়ুন: No Entry for Kalipuja: কালীপুজোয় এবার ‘নো এন্ট্রি’, নির্দেশ হাইকোর্টের, ছাড় নয় ডবল ডোজ়েও!