কলকাতা: “ওঁর ওজন আছে, তাই ওঁ হেভিওয়েট।” ভবানীপুর উপনির্বাচনে (Bhawanipur Bypoll) তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) ঠিক এই ভাষাতেই বিঁধলেন বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল (Priyanka Tibrewal) ।
পরনে ট্র্যাকশুট, চুল টেনে বাঁধা, চোখে চশমা- রবিবার সকালে ভিক্টোরিয়ায় প্রাতঃভ্রমণে বের হয় প্রিয়াঙ্কা। সেখান থেকই শুরু হয় তাঁর প্রচার। হেভিওয়েট প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “ওঁর ওয়েট আছে, তাই তিনি হেভিওয়েট। তাই চিকিত্সক ওঁকে হাঁটার পরামর্শ দিচ্ছেন।” বিশ্লেষকরা বলছেন, এই কথাতে বিজেপি প্রার্থীর আত্মবিশ্বাসের সুরই প্রকাশিত হয়েছে।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে বিরুদ্ধে প্রার্থী তিনি. তবে এই বিষয়টা তিনি খুব বেশি আমল দিতে চাইছেন না বলে স্পষ্ট বলে দিলেন প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল। তিনি বলেন, “জয় নিয়ে আমি পুরোপুরি আশাবাদী কারণ আমি মানুষের জন্য লড়াই করছি। বিধানসভা নির্বাচনে খুনের খেলা খেলেছে ওরা। এবারও যদি তাই করে তাহলে তো গণতন্ত্রের কোনও মানে হয় না। এই সরকার খুনীদের সাপোর্ট করেছে। এর প্রতিবাদে আওয়াজ তুলতে হবে।”
তিনি অভিযোগের সুরে বলেন, “ভবানীপুরের প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে ভোট করতে দিতে হবে। শুধুমাত্র ফিরাদ হাকিমের ওয়ার্ডে বেশী ভোট হয়। বাকি ওয়ার্ডগুলিতে ভোট দিতে দেওয়া হয়না বলে তার অভিযোগ।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধে তিনি বলেন, “কোভিড থাকা সত্বেও মুখ্যমন্ত্রী কে মুখ্যমন্ত্রী থাকতে হবে তাই ভবানীপুরের এই নির্বাচন। ক্ষমতা ছাড়তে চাইছেন না তাই এই নির্বাচন।” উল্লেখ্য, শনিবারই প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়ালকে বাচ্চা মেয়ে বলে সম্বোধন করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আগে তো চিনতেন না, এখন বাচ্চা মেয়ে বলেছেন। আমি কে তা ওঁ ধীরে ধীরে চিনে যাবেন!”
ভিক্টোরিয়া প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল বলেন, “বাংলাকে বাঁচানো এবং বাংলাকে সন্ত্রাসমুক্ত করায় তার লক্ষ্য। এই দায়িত্ব মুখ্যমন্ত্রীর ছিল। তিনি এই কাজ করেন নি। তাই একজন সাধারণ বাসিন্দা হিসেবে এই লড়াই শুরু করেছেন। নির্বাচনের পর মহিলাদের উপর ধর্ষনের ঘটনা ঘটেছে, খুনের ঘটনা ঘটেছে। বহু মানুষ এখনো ঘরছাড়া। এর প্রতিবাদে আওয়াজ তুলতে হবে।”
২০১৪ সালে বিজেপিতে যোগ দেন আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল। একসময়ে বাবুল সুপ্রিয় আইনি পরামর্শদাতা ছিলেন তিনি। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকে এন্টালি থেকে প্রার্থী করা হলেও সেখানে প্রায় ৫৮ হাজার ভোটে তৃণমূল প্রার্থী স্বর্ণকমল সাহার কাছে হেরে যান বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল। উল্লেখ্য, ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় সিবিআই তদন্তের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন তিনি। হাইকোর্টও তাতে মান্যতা দেয়। ভবানীপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তাঁকে দাঁড় করানো একপ্রকার পুরস্কারস্বরূপই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
নাম প্রকাশের পরই প্রিয়াঙ্কা TV9 বাংলাকে বলেন, “আমি তিন চার মাস আদালতে লড়েছি। আমার আত্মবিশ্বাস সবাই দেখেছে। আমার যে আত্মবিশ্বাস আছে, তা আমি প্রমাণও করে দিয়েছি। তবে এটাকে স্রেফ আমি লড়াই হিসাবে দেখছি না। আমার লড়াই হচ্ছে ন্যায় অন্যায়ের! আমি ন্যায়ের জন্য লড়ছি।”
আরও পড়ুন: Gujrat CM Resign: গুজরাটের নতুন মুখ্য়মন্ত্রী বাছাইয়ে নিয়োগ ২ পর্যবেক্ষক, আজই নাম ঘোষণার সম্ভাবনা
আরও পড়ুন: এমডি পরীক্ষায় ‘ফেল’ করায় পরপর ঘুমের ওষুধ খেল ডাক্তারি ছাত্রী! কাঠগড়ায় KPC হাসপাতাল