‘পিকলুর সঙ্গে ওকে কী অবস্থায় দেখা গিয়েছিল চার তলার ঘরে!’ ছবি-সহযোগে রত্নার ‘ব্যাভিচারী জীবনের’ রহস্যভেদ শোভনের

শোভন বললেন, "২২ টা বছর তো আমি প্রতারিত হয়েছি। তাই আমি ডিভোর্সের মামলা করেছি।"

'পিকলুর সঙ্গে ওকে কী অবস্থায় দেখা গিয়েছিল চার তলার ঘরে!' ছবি-সহযোগে রত্নার 'ব্যাভিচারী জীবনের' রহস্যভেদ শোভনের
ছবি- বৈশাখী শোভন ব্যানার্জির ফেসবুক পেজ থেকে
Follow Us:
| Updated on: Jun 16, 2021 | 2:14 PM

কলকাতা: “নিজের কুকর্ম থেকে নজর ঘোরাতেই বার বার আমাকে ঢাল করেন রত্না।” বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাশে বসিয়ে একটি ভিডিয়ো করলেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফেসবুক পেজে আপলোড করলেন ‘আন প্লাগড শোভন’ নামক ভিডিয়োটি। এবার সামাজিক মাধ্যমকে হাতিয়ার করেই ‘প্রাক্তন’ স্ত্রী রত্নার সম্পর্কে আনলেন একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ। শোভন-পত্নীকে খোঁচা দিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ও। রত্না নাকি বৈশাখী-ফোবিয়ায় ভুগছে- বৈশাখীর কটাক্ষে সঙ্গত দিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। বঙ্গ রাজনৈতিক মহলে এখন ভাইরাল নয়া ভিডিয়ো। শোভন বললেন, “২২ টা বছর তো আমি প্রতারিত হয়েছি। তাই আমি ডিভোর্সের মামলা করেছি।”

ভিডিয়োতে রত্না সম্পর্কে ঠিক কী বলেছেন শোভন-বৈশাখী?

ভিডিয়োর শুরুতে শোভন বলেন, “রত্না চট্টোপাধ্যায় যেভাবে নোংরা ভাষায় বিভিন্ন প্রশ্ন তুলে মিডিয়ায় সার্কুলেট করেছেন, তার সবকটি উত্তর দেবো। বাস্তব সত্য সামনে আনব।” প্রসঙ্গের শুরুতেই ‘হানিট্র্যাপ’ ইস্যুটিকে তুলে ধরেন বৈশাখী, যে শব্দ ব্যবহার করে রত্না চট্টোপাধ্যায় তাঁকে কটূক্তি করেছিলেন বলে অভিযোগ। এ প্রসঙ্গে শোভন বলেন, “কোথা থেকে ওঁ এই শব্দ শিখল আমি জানি না।” সেখানে এক অভিনেত্রীর নাম না করে তাঁর বৈবাহিক সম্পর্ক নিয়ে খোঁচা দেন তিনি। শোভন রত্নার উদ্দেশে বলেন, “আসলে এই শব্দের সঠিক অর্থ ওঁ অনুধাবন করেছেন কিনা জানি না।” বৈশাখীর দিকে তাকিয়ে শোভন বলেন, “তুমি আছো আমার সঙ্গে কতদিন ধরে? এই দীর্ঘ সময় কোনও হানি ট্র্যাপ হয় না। আমরা পরস্পরকে অনুধাবন করেছি। আমি মনে করি আজকের দিনে আমরা পরস্পরের পরিপূরক হয়েছি।”

রত্নার সঙ্গে দলের এক কর্মীর সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন শোভন। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ওরফে নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিল রত্নার! বিস্ফোরক অভিযোগ তোলেন শোভন। ভিডিয়ো বার্তায় তিনি বলেন, “আমি আমার পায়জামা-পাঞ্জাবি, জামাকাপড়, একান্ত প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে এসেছিলাম। কারণ ওইখানে থাকাকালীন আমি জানতে পেরেছিলাম রত্নার এক্সট্রা ম্যারেটাল অ্যাফেয়ার্সের ব্যাপারে। রত্নার ব্যাভিচারী জীবন সম্পর্কে জানতে পেরে গিয়েছিলাম। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নামে এক ছেলের সঙ্গে যেভাবে জড়িয়ে পড়েছিল, তা জানতে পেরে যাই। আমার সেজো ভাই গোটা বিষয়টি আমাকে জানায়। তখনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এই সংসারে আমি থাকব না।”

শোভন বলেন, “আমি ‘তো ২৪ ঘণ্টা তখন রাজনীতিতে ব্যস্ত ছিলাম। আর আমার বাড়িতে তখন ব্ল্যাক হোল তৈরি করেছিল রত্না। ” প্রসঙ্গের মাঝেই বৈশাখীকে বলতে শোনা যায়, “এরপর আমি আরেকটা বিষয় বলছি। ওঁ আমাদের বলেছেন, আমরা দু’জনে দুই কলঙ্কিত নায়ক নায়িকা, আমরা হিংসার কারণে ওঁকে কলুষিত করার চেষ্টা করছি।” এর উত্তরে শোভন বলেন, “ওই বাড়িতে চার তলায় একটি ঘর রয়েছে। সেই ঘরে পার্টির কোনও ছেলেরই আড্ডা দেওয়ার কথা নয়। বাড়ির নীচে অফিস রয়েছে, গ্যারেজ রুম রয়েছে। অফিসেই পার্টি ওয়ার্কারদের সঙ্গে কথা বলতাম। কিন্তু ওই ঘরে যাঁদেরকে দেখা গেছে, যাঁদেরকে যে অবস্থায় দেখা গেছে, তা আর এখানে বললাম না।”

এরপরই বৈশাখী শোভনকে প্রশ্ন করেন, “আচ্ছা এই ছেলেটি যে রত্নার সঙ্গে দোলনায় বসে রয়েছেন, আসলে কে?”

শোভন উত্তরে বলেন, “ছেলেটির নাম অভিজিৎ মৈত্র ওরফে পিকলু। আমার থেকে বয়সে ছোটো। আমি খুব বেশি আলোচনায় যেতে চাই না। কিন্তু দেখো আমি যতক্ষণ বাড়িতে থাকতাম, তখনও একতলার অফিসে ওরা একসঙ্গে থাকত।” পিকলুর পরিচয় দিতে গিয়ে শোভন বলেন, “পিকলু আগে বেহালার ১৩০ নম্বর ওয়ার্ডে থাকত, এখন নাগতলায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে গিয়েছে। এই নিয়ে আলোচনা করতে চাই না। কিন্তু যে অবস্থায় ছবিগুলো রয়েছে, সেগুলিই তো বলে দিচ্ছে আসল কথা! ও কী কেবলই পার্টি ওয়ার্কার!”

পিকুলর বিরুদ্ধে তাঁর সম্পর্কে  অশালীন মন্তব্য করার অভিযোগ তুলেছেন শোভন। ফেসবুকের কয়েকটি স্ক্রিন শটও তিনি তুলে ধরেন ভিডিয়ো বার্তায়। যেগুলি পিকলু মৈত্র নামে ওই ব্যক্তি নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন। এমনকি রত্নার সঙ্গে পিকুলর ছবিও প্রকাশ্যে আনেন শোভন-বৈশাখী। ওই  ছবি গুলি আগমনী নামে একটি কমিউনিটি হলে তোলা বলে দাবি করেছেন শোভন।

শোভনের আরও অভিযোগ, পার্টির বৈঠকের নাম করে আসলে পার্টি করেছিলেন রত্না-পিকলু! অশালীন ভঙ্গিতে সেই পার্টিতে তাঁরা নাচ করেছেন বলেও অভিযোগ করেন শোভন। এটা কি আদৌ বাঞ্ছনীয়? প্রশ্ন তোলেন শোভন। শোভনের কথায়, “আমি যখন রত্নার ব্যাভিচারী জীবনের পরিচয় পেলাম, অর্থনৈতিক তছরূপের অভিযোগ পেলাম, তখনই ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নিলাম।” শোভন বলেন, “ওরা কাচের ঘরে বসে থেকে ঢিল ছোড়ে!”

আরও পড়ুন: মধ্যরাতে বৈশাখী দিলেন চমক! ‘খুশি’ শোভন নিজের সমস্ত সম্পত্তি উইল করলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে

ভিডিয়োর ছত্রে ছত্রে যেভাবে ‘প্রাক্তন’ স্ত্রী রত্নাকে আক্রমণ করেছেন, ঠিক সেভাবেই বৈশাখীর প্রতি পাশের থাকার জন্য কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন প্রাক্তন মেয়র। ‘বৈশাখী শোভন ব্যানার্জি’ নামক ফেসবুক প্রোফাইলের পেজে এই ভিডিয়ো এখনও ‘পাবলিক’!

এ প্রসঙ্গে পিকলু মৈত্রের মতামত জানতে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলেন TV9 বাংলার প্রতিনিধি । কিন্তু বারবার ফোন করা হলেও, কেটে দিয়েছেন তিনি। রত্না চট্টোপাধ্যায় অবশ্য এ বিষয়ে কোনও নতুন করে মন্তব্য করেন নি।