কলকাতা : একদিকে নাম না করে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিশানা করেছেন কুণাল ঘোষ। সেই সঙ্গে অনুব্রত মণ্ডলকেও আক্রমণ করলেন তিনি। নাম না করেই সোমবার বিধায়ক-সাংসদদের বিশেষ আদালতে বীরভূমের জেলা সভাপতিকে কটাক্ষ করেন দলেরই মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। যদিও কুণালের মুখে অনুব্রতকে নিয়ে মন্তব্য এই প্রথম নয়। রামপুরহাট-কাণ্ডের পরও কুণাল বলেছিলেন, ‘অনুব্রত বড় নেতা, বেশি বোঝেন।’ আর এবার কুণাল ঘোষ বললেন, ‘উডবার্ন কয়েদিদের আশ্রয়খানা।’ দিন কয়েক আগেই কলকাতায় এসে এসএসকেএমের উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন অনুব্রত। সিবিআই হাজিরা এড়াতে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে কটাক্ষ করছেন বিরোধীরা। এরই মধ্যে অনুব্রত-কে কটাক্ষ করলেন ঘাসফুল শিবিরের মুখপাত্র তথা দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল।
জেলে থাকাকালীন আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন কুণাল ঘোষ। আজ সেই মামলায় আদালতে হাজিরা দিয়ে হয়েছিল কুণাল ঘোষকে। আর সেখানে গিয়ে কুণাল বলেন, ‘আমার দাঁতের যন্ত্রণার চিকিৎসা করা হয়নি। অথচ অন্য প্রভাবশালীদের উডবার্নে চিকিৎসা হয়। উডবার্ন কি হাসপাতাল নাকি কয়েদিদের আশ্রয়খানা?’
অনুব্রতই শুধু নন, বিভিন্ন সময়ে শাসক দলের অনেক নেতাই ভর্তি হয়েছেন এসএসকেএমের এই ওয়ার্ডে। নারদ-কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়ার পর মদন মিত্র, সুব্রত মুখোপাধ্যায়রাও ওই ওয়ার্ডেই ভর্তি হয়েছিলেন। বিরোধীদের দাবি, শাস্তি এড়াতে বারবার এসএসকেএমে আশ্রয় নেন তৃণমূল নেতারা। এই ইস্যুতে শাসকদলকে বরাবরই নিশানা করেছেন বিরোধী দলের নেতারা। কিন্তু দলের মুখপাত্রের মুখে এই বার্তা সেই অস্বস্তি আরও বাড়াল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘কুণাল উডবার্ন ওয়ার্ড নিয়ে যা বলেছেন, তা আমি সেই চোখে দেখি না। হাসপাতালে চিকিৎসকরা বুঝেছেন বলেই ভর্তি করা হয়েছে। কুণাল দলের সাধারণ সম্পাদক, সাধারণ কর্মী এবং মুখপাত্র। এর থেকে বেশি কিছু আমি বলব না। দলের সবাই মুখপাত্র হবে না, সবাই সাধারণ সম্পাদক হবে না। আবার সবাই মন্ত্রীও হবে না। তবে দল যাতে বিব্রত না হয়, যাতে অস্বস্তিতে না পড়ে, সেই ভাবেই যদি আমরা চলি তাহলে ভাল হয়।’
কুণালের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, কর্মচারীদের মধ্যেই লেগে গিয়েছে। কেউ আপার ডিভিশন ক্লার্ক, কেউ লোয়ার ডিভিশন ক্লার্ক, কেউ গ্রুপ ডি, কেউ টি বয়, কেউ সিভিক। এরা সব কোম্পানির কর্মচারী। মালিক একজনই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আদালত থেকে বেরিয়ে এ বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি কুণাল ঘোষ। তিনি শুধু বলেন, ‘আসানসোল, বালিগঞ্জে তৃণমূল বিপুল ভোটে জিতুক, এটাই আমি চাই।’