কলকাতা: চাকরি পাওয়া ৬০৯ জন পাশই করেননি। এসএসসি কাণ্ডে বিস্ফোরক রিপোর্ট পেশ করল তদন্ত কমিটি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্যানেলে ওই ৬০৯ জনের র্যাঙ্ক বদলানো হয়েছে। এসএসসি কেলেঙ্কারিতে নাম জড়িয়েছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। তাঁর তৈরি করা সুপারিশ কমিটিই নাকি বেআইনি। রিপোর্ট পেশ করল তদন্ত কমিটি। আরও চাপ বাড়ল স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহা-সহ চার কর্তার। দুর্নীতির বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ্যে আসাতে সরব শিক্ষামহল। কে কী বলছেন দেখুন…
শিক্ষক সংগঠনের নেতা
শিক্ষক সংগঠনের নেতা চন্দন মাইতি বলেন, “আমরা বিস্মিত হচ্ছি, অবাক। একজন মন্ত্রী, যিনি দফতরের মন্ত্রিত্বের শপথ নিয়েছেন সংবিধানকে সামনে রেখে, সেখানে দাঁড়িয়ে কীভাবে এমনটা করতে পারেন। এসএসসি, শিক্ষা দফতর, গোটাটাই দুর্নীতির মধ্যে যুক্ত হচ্ছে। প্রাক্তন বিচারপতি বাগের কমিটি যে রিপোর্ট পেশ করেছেন, সেই রিপোর্ট অনুযায়ী হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ কড়া পদক্ষেপ করার জন্য অবিলম্বে নির্দেশ দেবে। তবে এক্ষেত্রেও বলা যায়, এটা যদি সিবিআই-র মধ্যে যদি না যায়, এর সঠিক বিচার হবে না। রাজ্য পুলিশের ক্ষমতা নেই, মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার। স্বচ্ছতার সঙ্গে, যাতে মেধারা চাকরি পায়, সে ব্যাপারটা নিশ্চিত করতে হবে। অর্থের লেনদেনের বিষয়টিও জনসমক্ষে আসা উচিত। যাতে কোনও আধিকারিক এই ধরনের সাহস না পান, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।”
চাকরিপ্রার্থীর বক্তব্য
আজও গলায় প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে বিকাশ ভবনের সামনে বসে তাঁরা। সেরকমই এক চাকরিপ্রার্থী বললেন, “এই ব্যাপারটা আমাদের কাছে অপ্রত্যাশিত নয়। ২০১৯ সাল থেকে এই অভিযোগ করে আসছি। আদালত এ ব্যাপারে সিলমোহর দিল। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোটা বিষয়টি জানেন। এসএসসি কমিশন ঘুঘুর বাসা। এই ঘটনায় আরও বড় নাম হয়তো চলে আসবে।”
মামলাকারীর আইনজীবী
মামলাকারীর আইনজীবী বললেন, “যে নাম গুলো উঠে আসছিল, তদন্ত কমিটির রিপোর্টেও সেই নাম উল্লেখ রয়েছে। আমরা যে অভিযোগ করছিলাম, তদন্ত কমিটির রিপোর্টেও সেটা উল্লেখ রয়েছে। এই ব্যাপারে একটা ক্রিমিন্যাল ইনভেস্টিগেশনের প্রয়োজন। এই দুর্নীতিতে প্রভাবশালী জড়িত। তাই রাজ্যপুলিশ দিয়ে তদন্ত করলে হবে না।”
তৃণমূলের বক্তব্য
তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, “এই ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। আদালত নানা নির্দেশ দিচ্ছে। তদন্তের পর জানা যাবে, কোথায় গণ্ডগোল। এই চাকরি টাকা দিয়ে কেনা হয়েছিল কিনা, কোথায় অব্যবস্থা হয়েছিল, সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তে সাহায্য করছে রাজ্য সরকার। তাই এত তাড়াতাড়ি রিপোর্ট জমা দিতে পারল কমিটি। দোষ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তরা শাস্তি পাবে।”
শিক্ষাবিদের বক্তব্য
শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার বলেন, “এটা তো জানা কথা। সাধারণ মানুষ জেনেও গিয়েছেন। এই ভয়ঙ্কর সত্যগুলো আস্তে আস্তে বেরিয়ে আসছে। দলের আনুগত্যের জন্য অথবা টাকা দিয়ে কেনা চাকরি মানুষে করছে। কত রকমের অনাচার চলেছে, তা সামনে আসছে। মানুষ দেখছে। দোষীরা যেন শাস্তি পায় দ্রুত।”