কলকাতা: সকাল থেকে চর্চায় কুণাল ঘোষ। সৌজন্যে গতরাতে এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট। তারপর বিকেলে আবার এক্স হ্যান্ডেলে লিখলেন, তিনি দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র পদে থাকতে চাইছেন না। শোনা যাচ্ছে, গতকাল উত্তর কলকাতায় দলের এক সাংগঠনিক বৈঠক ছিল। কিন্তু সেই বৈঠকে ডাক পাননি কুণাল। কেন তাঁকে ডাকা হল না? কী অসুবিধা ছিল? সেই নিয়ে প্রশ্ন করতেই কুণালের অভিমান-মিশ্রিত জবাব, ‘আমি দেখতে খারাপ। সেই জন্য। সুদীপদাকে (সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়) দেখতে সুন্দর। শাহজাহান টাইপ চেহারা। বড়-সড় শাহজাহান। ওকে দেখতে সুন্দর, আমাকে দেখতে খারাপ। ওঁর কাছে যাঁদের অসুবিধা হয়, যে কর্মীরা বঞ্চিত বলে মনে করেন… তাঁরা যাঁদের কাছে যান, তাঁদের মধ্যে একজন আমিও পড়ে যাই। সেই জন্য রাগের চোটে ডাকেননি।’
অতীতে উত্তর কলকাতার আরও এক তৃণমূল নেতার সঙ্গেও এলাকার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংঘাতের ছবি ধরা পড়েছিল। তাপস রায়। তৃণমূলের আরেক বাঘা নেতা। বর্তমানে বরাহনগরের বিধায়ক হলেও, উত্তর কলকাতার রাজনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত তাপস। সেই তাপস রায়ের সঙ্গেও অতীতে চরম সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল উত্তর কলকাতার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আর এবার কুণাল ঘোষও না-খুশ সুদীপের ভূমিকায়। উত্তর কলকাতার রাজনীতি সম্পর্কে প্রশ্ন করতেই সুদীপবাবুর বিরুদ্ধে আরও একরাশ ক্ষোভ উগরে দিলেন কুণাল। তৃণমূলের পদ ছাড়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করে ‘শুধুই দলের সৈনিক হিসেবে’ থাকতে চাওয়া কুণাল বলছেন, সুদীপ উত্তর কলকাতার রাজনীতিকে ‘ব্যক্তিগত সম্পত্তির মতো করে চালাচ্ছেন’। এমনকী একটি স্কুলের একতলায় একটি ‘সম্পূর্ণ বিতর্কিত নির্মাণ করে’ পার্টি অফিস তৈরি করা হয়েছে। জমে থাকা ক্ষোভ উগরে দিয়ে কুণাল বললেন, ‘পুরনিগমের উচিত ওটাকে আগে ভেঙে, স্কুলকে এর থেকে মুক্ত করা।’
বৃহস্পতিবার রাতে যে টুইট কুণাল করেছিলেন, সেখান থেকেই যাবতীয় চর্চা শুরু হয়েছিল। কারও নাম না করে কোনও এক নেতাকে ‘অযোগ্য গ্রুপবাজ স্বার্থপর’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন কুণাল। পরে এদিন বিকেলে আরও একটি টুইট করেন তিনি। সেখানেও দলের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ইচ্ছাপ্রকাশ করে বলেন, ‘সিস্টেমে আমি মিসফিট। আমার পক্ষে কাজ চালানো সম্ভব হচ্ছে না। আমি দলের সৈনিক হিসেবেই থাকব।’ আর এই আবহের মধ্য়েই এবার উত্তর কলকাতার দলীয় সাংসদ সুদীপবাবুর বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিলেন কুণাল।
প্রতিবেদনটি যখন প্রকাশিত হচ্ছে, তখনও পর্যন্ত কুণালের এই অভিযোগ, ক্ষোভের বিষয়ে তৃণমূল সাংসদ তথা উত্তর কলকাতার দুঁদে নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।