কলকাতা: ‘আন্দোলনকারীদের দিকের ছুরির ধার বেশি।’ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এমন মন্তব্য করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক। যে সব চাকরি প্রার্থীরা রাস্তায় বসে দিনের পর দিন আন্দোলন করে চলেছেন, তাঁদের আর্থিক অবস্থা কী, সেটাও ভাবার কথা বলেছেন বিচারপতি। বিতর্কিত চাকরিপ্রাপকদের আইনজীবীর উদ্দেশে বুধবারের শুনানিতে এ কথা বলেন তিনি। নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার তদন্ত শেষ করে হাইকোর্টে রিপোর্ট দিয়েছে সিবিআই। সেই মামলার শুনানি চলছে বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চে। বুধবারের শুনানিতে এসএসসি-র এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন চাকরিপ্রাপকরা।
বিতর্কিত চাকরি প্রাপকদের আইনজীবীর উৎকর্ষ কৌশিক এদিন সওয়াল করেন, এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার সব থেকে নীচের স্তরে রয়েছেন গ্রুপ ডি পদের চাকরি প্রাপকরা। তাঁরা অর্থনৈতিকভাবে সবথেকে দুর্বল বলে সওয়াল করা হয় এদিন। আইনজীবী বলেন, ‘কতদিন এই আইনি লড়াই চালাতে পারব?’ বিচারপতি বসাক তাঁদের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা তো তবু চাকরিতে বহাল আছেন, বেতন পাচ্ছেন। তাঁদের কথা ভাবুন আছে, যাঁদের চাকরি নেই।”
এই প্রসঙ্গে বিচারপতি বলেন, “যদি একটা ছুরির দু’দিক দিয়েই কাটা যায় এবং সেই ছুরির একদিকে আন্দোলনকারীরা এবং অন্যদিকে বিতর্কিত চাকরিপ্রাপকরা থাকেন, তাহলে যেদিকে আন্দোলনকারীরা আছেন সেদিকের ধার বেশি। তাঁরা আপনাদের থেকেও বেশি গরীব। তাঁরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।”
এদিন স্কুল সার্ভিস কমিশনের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিতর্কিত চাকরি প্রাপকরা। আইনজীবী অনিন্দ্য মিত্র এদিন সওয়াল করেন, নিয়োগপত্র পাওয়ার পর কমিশনের কোনও এক্তিয়ারই নেই তা প্রত্যাহার করার। চাকরিপ্রাপকদের দাবি, নিয়োগপত্র পাওয়ার পরই অস্তিত্ব হারায় সুপারিশপত্র। সেই অস্তিত্বহীন সুপারিশ পত্র কী করে প্রত্যাহার করে স্কুল সার্ভিস কমিশন? সেই প্রশ্নই তুলেছেন তাঁরা।
এ কথা শুনে বিচারপতি দেবাংশু বসাক প্রশ্ন করেন, স্কুল সার্ভিস কমিশন সুপারিশ করলেই কি রাজ্য তাকে নিয়োগ দিতে বাধ্য? উত্তরে আইনজীবী বলেন, না, সেটা বাধ্যতামূলক নয়। কিন্তু সাধারণভাবে সুপারিশ করা হলে রাজ্য নিয়োগপত্র দেয়। যদি না নিয়োগপত্র দেয়, তাহলে তার কারণ জানিয়ে দেওয়া হয়। বিচারপতির মন্তব্য, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিলেই নিয়োগপত্র পাওয়ার অধিকার জন্মায় না।