Conjoined Twins in West Bengal: দুই সদ্যজাতর শরীরে লিভার একটাই, বিরল অস্ত্রোপচারের নজির কলকাতায়
Conjoined Twins in West Bengal: মাত্র ১৮ দিনের দুই শিশুর শরীরে লিভার আলাদা করতে অস্ত্রোপচার চালানো হল। সফল অস্ত্রোপচারের পর সুস্থ আছে দুই শিশু।
কলকাতা : দুটো আলাদা শরীর, আলাদা মানুষ, কিন্তু কোনও একটা অঙ্গ জোড়া। অনেক ক্ষেত্রেই যমজ সন্তানদের এমন শরীরে অবস্থা চোখে পড়লেও, এটা বিরল ঘটনা। এই সব ক্ষেত্রে সুস্থ হলেও সারাজীবন এক অস্বস্তি বয়ে বেড়াতে হয় তাঁদের। এবার শহরের সরকারি হাসপাতালে জটিল অস্ত্রোপচারে হাসি ফুটল দক্ষিণ দিনাজপুরের এক দম্পতির মুখে। যমজ সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু দুই পুত্রসন্তানের লিভার জোড়া লাগানো ছিল। কলকাতার নীলরতন সরকার হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগে করা হল সেই বিরল অস্ত্রোপচার।
বৃহস্পতিবার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জোড়া লিভার আলাদা করা হয়েছে। ১৮ দিনের দুই সদ্যোজাতর হাত, পা, মাথা আলাদা হলেও পেট জোড়া লাগানো ছিল। এ দিন অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। অস্ত্রোপচারের সময় রক্তপাত হয়ে যাতে বিপত্তি না ঘটে সে জন্য সতর্ক ছিলেন চিকিৎসকেরা। তাঁরা মূলত দু’টি দলে ভাগ হয়ে যমজ শিশুর দেহ আলাদা করেন। অস্ত্রোপচারের পরে স্থিতিশীল রয়েছে দুই সদ্যোজাত।
শিশুশল্য চিকিৎসক নিরূপ বিশ্বাস জানিয়েছেন, প্রথমে সদ্যজাতদের নিয়ে পাসপাতালের ওপিডিতে এসেছিলেন ওই দম্পতি। এরপরই দুই শিশুর প্রয়োজনীয় সমস্ত পরীক্ষা করানো হয়। তাতে দেখা যায়, অন্য়ান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আলাদা হলেও জোড়া রয়েছে লিভার। হৃদযন্ত্রে কোনও প্রভাব পড়েনি। আদতে লিভার দুটি পৃথক হলেও একটা অংশ জোড়া লাগানো ছিল। সেটাই আলাদা করা হয়েছে। শিশুশল্য চিকিৎসক নিরূপ বিশ্বাস ছাড়াও চিকিৎসকদের দুটো টিমে ছিলেন দীপক ঘোষ, ঋষিন দত্ত, পার্থ জানা, মৌসুমী খাঁড়া প্রমুখ।
চিকিৎসকরা জানিয়েছে, দুই শিশুর জন্য অস্ত্রোপচারের মেশিন, ভেন্টিলেটর সবই আলাদা থাকে। তাই, প্রথমে একটি টিম হলেও পরে দুটি টিমে ভাগ হয়ে যান তাঁরা।
শিশুশল্য বিভাগের বিভাগীয় প্রধান কৌশিক সাহা জানিয়েছেন, সাধারণত একটা ভ্রুণ থেকে এক সন্তানের জন্ম হয়। আর একটা ভ্রুণ দুটি ভাগে ভাগ হয়ে গেলে যমজ সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ভ্রুণ দুটি ভাগ হওয়ার সময় যদি পৃথকীকরণ ঠিক মতো না হয়, তাহলে এমন কনজয়েন্ট টুইন বা জোড়া যমজ সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। বাকি জীবনটা ওই দুই সন্তান সুস্থভাবেই কাটাতে পারবে বলে আশা চিকিৎসকদের।